সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নায়ক বা নায়িকা নয়। গল্পের প্রধান চরিত্র বলতে এখানে একটি নোটবুক। এর উপর ভিত্তি করেই এগিয়েছে গল্প। নায়ক বা নায়িকা এখানে গৌণ। এই নোটবুকই একটা অচেনা ছেলে আর একটা অচেনা মেয়ের মধ্যে গড়ে দিয়েছে সম্পর্কের সেতু।
পরিচালক নীতীন কক্করের ভাবনাটা সত্যিই অন্যরকম। কাশ্মীরের মতো একটি জায়গায়, যেখানে অলিতে গলিতে সন্ত্রাসের ছায়া, সেখানে এমন একটি প্রেমের গল্প ফাঁদার চিন্তাভাবনা কম কথা নয়। তবে কাশ্মীরের পটভূমিকায় যে প্রেমের ছবি হয়নি, তা নয়। কিন্তু তার সংখ্যা নগন্য। ‘রোজা’, ‘জব তক হ্যায় জান’, ‘রাজি’, ‘বজরঙ্গি ভাইজান’, ‘হায়দার’, ‘ফিতুর’-এর মতো অনেক ছবি কাশ্মীরের পটভূমিকায় গল্প সাজিয়েছে। কিন্তু সন্ত্রাসকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেনি কেউ। প্রেমের পাশাপাশি সন্ত্রাসও ছবিতে জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু এই ছবিটি এমন একটি গল্পের উপর ভিত্তি করে এগিয়েছে যেটি আদ্যপান্ত প্রেমের। হিংসার এখানে কোনও স্থান নেই।
এই গল্পের নায়ক-নায়িকার মধ্যে দেখা হয় না। ‘তারে আমি চোখে দেখিনি, তার অনেক গল্প শুনেছি’ গোছের লাভস্টোরি। ছবিতে এই গল্প শোনানোর কাজটা দায়িত্ব নিয়ে করেছে একটি ছোট্ট নোটবুক। সেখানে ফিরদৌস তাঁর জীবনের সব কথা লিখে রাখত। কিন্তু একদিন তার বিয়ে হয়ে যায়। সেই জায়গায় আসে নতুন শিক্ষক। সেই কবীর। একটি নোটবুক থেকে সে জানতে পারে ফিরদৌসের কথা। যত জানতে থাকে, মেয়েটির প্রেমে পড়তে থাকে কবীর। এভাবেই এগিয়েছে ছবির গল্প।
[ আরও পড়ুন: বাস্তবের রাজনৈতিক চিত্র কতটা তুলে ধরতে পারল ‘শঙ্কর মুদি’? ]
প্রেম এখানে ছবির আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। ছবিটি থাই-ড্রামা ‘দ্য টিচারস ডায়েরি’ থেকে অনুপ্রাণিত। কিন্তু ছবির গল্প কাশ্মীরে এনে ফেলার পর কোথাও অসামঞ্জস্য অনুভূত হয়নি। ছবির অভিনেতা জাহির ইকবাল ও অভিনেত্রী প্রনূতন বহেল, দু’জনেরই এটি প্রথম সিনেমা। সেই হিসেবে দু’জনের পারফর্ম্যান্সই বেশ ভাল। প্রনূতনের সঙ্গে তবু অভিনয়ের যোগাযোগ রয়েছে। তাঁর বাবা মণীশ বহেল অভিনেতা। আর ঠাকুমা নূতন তো একসময় দাপুটে অভিনেত্রী ছিলেন। কিন্তু জাহিরের সঙ্গে অভিনয়ের দূর দূরান্ত পর্যন্ত কোনও সম্পর্ক নেই। তিনিও কিন্তু বেশ সাবলীলভাবেই ক্যামেরার সম্মুখীন হয়েছেন। তবে জাহির ও প্রনূতন মুখোমুখি হয়েছেন খুব কম সময়ের জন্য। ফলে তাঁদের মধ্যে কেমিস্ট্রি কেমন, তা নিয়ে পোস্টমর্টেম করার সময় পাওয়া যায়নি। কিন্তু এককভাবে তাঁরা সত্যিই ভাল। একবারও মনে হয় এটি তাঁদের প্রথম ছবি।
দুই অভিনেতার অভিনয় ছাড়াও ছবিতে চোখ টেনেছে প্রাকৃতিক শোভা। এক টুকরো কাশ্মীর উঠে এসেছে ছবিতে। আর এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব সিনেমাটোগ্রাফার মনোজ কুমার খাতোইয়ের। কাশ্মীরের হ্রদ, পাহাড়-সহ গোটা প্রকৃতিই যেন তিনি তুলি দিয়ে এঁকেছেন এছাড়া কাশ্মীরি গানের প্রয়োগও ছবিতে যথাযথ। এক কথায় বলাই যায় ‘নোটবুক’ প্রযোজক সলমনের ঘরে বেশ মোটা অংকের টাকা তুলে দিতে পারে।
[ আরও পড়ুন: সুজয়ের হাতের ছোঁয়ায় কেমন হল ‘বদলা’? ]
The post প্রেমের গল্প কতটা ফুটিয়ে তুলতে পারল ‘নোটবুক’? appeared first on Sangbad Pratidin.