shono
Advertisement

নামহীন ভালোবাসা দোষের? ক্ষমতার সামনে নতই থাকবে মাথা? দর্শকদের ভাবায় ‘কড়ক সিং’

দুর্দান্ত অভিনয় পঙ্কজ ত্রিপাঠী, জয়া আহসানের।
Posted: 06:12 PM Dec 10, 2023Updated: 06:12 PM Dec 10, 2023

সুলয়া সিংহ: স্মৃতি সততই কি সুখের? নাকি স্মৃতি সুখের করে তুলতে কখনও কখনও বিস্মৃতির চাদর গায়ে চাপানোর প্রয়োজন হয়! অনেক সময় সব ভুলে গেলেই হয়তো জীবনের হারিয়ে ফেলা নানা কিছু খুঁজে পাওয়া যায়। তা সে ফাটল ধরা সম্পর্কের ক্ষতে প্রলেপ লাগানো হোক কিংবা ক্ষমতাবানকে গদিচ্যুত করতে পারার অস্ত্র। হয়তো খুঁজে পাওয়া যায় কোনও কঠিন প্রশ্নের উত্তরও। অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর ‘কড়ক সিং’ও সেই বিস্মৃতির চাদর গায়ে চাপিয়েই বাস্তব দুনিয়ার গূঢ় সত্যের সন্ধানে পাড়ি দিয়েছে। দর্শক হিসেবে যার সঙ্গে হাঁটতে মন্দ লাগবে না।

Advertisement

কে কড়ক সিং? যে মানুষটির স্বভাব বেশ ‘কড়া’, তাকেই আমরা অনেক সময় কড়ক সিং বলে সম্বোধন করে থাকি। বাড়িতে যেমন কখনও বাবা হয়ে ওঠে কড়ক সিং, তেমনই কর্মক্ষেত্রে দুর্নীতির বিরুদ্ধে গর্জে উঠে, ক্ষমতাবানদের গদিচ্যুত করে, সিস্টেমকে বদলে দিতে চাওয়া সৎ ব্যক্তিকেও সময়ের প্রেক্ষিতে হয়ে উঠতে হয় কড়ক সিং। এই ছবিতে সেই পারিবারিক এবং পেশাদার দিকটি সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক। তাঁর কাজটি অবশ্য আরও সহজ করে দিয়েছে পঙ্কজ ত্রিপাঠীর তুখোড় অভিনয়। আচমকাই স্মৃতি হারিয়ে ফেলা কড়ক সিং ওরফে এ কে শ্রীবাস্তব ওরফে পঙ্কজ আসলে বাস্তবে ঠিক কেমন মানুষ, তা তাকে জানতে হয় অন্যদের থেকে। মেয়ে সাক্ষী, প্রেমিকা নয়না, জুনিয়র সহকর্মী অর্জুন এবং অফিসের বস ত্যাগী- প্রত্যেকেই নিজেদের মতো করে ব্যাখ্যা করে কড়ক সিংকে। সকলের কাহিনিই একে অন্যের থেকে ভিন্ন। সকলের কাহিনিতেই একেবারে ভিন্ন ভূমিকায় ধরা দেয় কড়ক সিং। আর এই কাহিনি থেকে দর্শকও নিজেদের কাহিনি সাজিয়ে নিতে থাকে। তবে সে কাহিনির উপসংহারের দায়িত্বে কড়ক সিং নিজেই।

[আরও পড়ুন: ‘নবীন প্রজন্মকে এগিয়ে দেওয়াকে স্বাগত’, মায়াবতীর ঘোষণায় প্রতিক্রিয়া তৃণমূলের]

এ ছবি যেমন হয়ে উঠেছে বাবা-মেয়ের সম্পর্কের, তেমনই ভালোবাসারও। যে ভালোবাসাকে আবার সমাজে বাঁকা চোখে দেখা হয়। নয়না অর্থাৎ জয়া আহসান সেই চরিত্র যাঁকে শুধু ভালোবাসায় আঁকড়ে ধরতে চায় কড়ক সিং। যে সম্পর্ককে কোনও নামে দাগাতে চায় না তারা। কিন্তু এহেন ‘পলিটিক্যালি ইনকারেক্ট সেক্স’ কি মেনে নেওয়া সহজ? ভাবনার দায়িত্ব দর্শকদের উপরই ছেড়েছেন পরিচালক। আবার যৌনতার ছিটেফোঁটা ছাড়াও যে আবেগে ভাসা যায়, ভালোবাসা যায়, তা ফুটে উঠেছে নার্স (পার্বতী) ও কড়ক সিংয়ের সম্পর্কে।

তবে এ ছবিতে পুরোদমে রয়েছে রাজনীতিও। শাসকের আস্ফালনে আমজনতার বেহাল দশা। ক্ষমতাশালীদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্ব হারিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া গরিব পরিবার- এসবই তো রাজনীতির অংশ। এই বাস্তব চিত্রকে এতটুকু রং না লাগিয়েই দেখিয়েছেন পরিচালক। মুখোশের আড়ালে আসল চেহারাগুলোকে বের করে আনতে আমাদের মধ্যেই কেউ হয়ে ওঠে কড়ক সিং।

জয়া আহসান, সঞ্জনা সাংঘী, পার্বতী থিরুবথুরা, প্রত্যেকেই নিজেদের চরিত্রে সাবলীল। দুর্দান্ত VFX, মারকাটারি অ্যাকশন, বিগ বাজেটের ছবির জৌলুসের বর্ম না পরেও ‘কড়ক সিং’ মন ভালো করে। ভালোবাসতে শেখায়, ভালো হওয়ার বার্তা দেয় আর অনেক প্রশ্নের উত্তর খোঁজার দায়িত্ব দেয় দর্শককে। জি ফাইভে ক্লিক করে তাই ‘কড়ক সিং’কে নিজের জীবনের ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট দিতেই পারেন।

[আরও পড়ুন: ‘বন্ধুদের গিয়ে বোলো’, ৮ বছরের বালিকাকে ‘মোদি গ্যারান্টি’ প্রচারের আবদার প্রধানমন্ত্রীর!]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement