সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুর্গাপুজো শেষ হতেই কালীপুজোর তোড়জোড়। চারিদিকে আলোকসজ্জা, বাড়িতে বাড়িতে প্রদীপ জ্বালানোর প্রস্তুতি। এদিন অনেক বাড়িতেই লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা করা হয়। কেন কালীপুজোয় (Kali Puja) আলোতে সেজে ওঠে চারিদিক, কেন এসময় হয় লক্ষ্মীপুজো?
মহালয়ায় দিন শেষ হয় পিতৃপক্ষের। সূচনা ঘটে দেবীপক্ষের। মহালয়ার দিন পিতৃপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করার প্রথা প্রচলিত রয়েছে। শাস্ত্রে রয়েছে, মহালয়ার পর থেকে দীপাবলি পর্যন্ত তাঁরা মর্ত্যেই বিচরণ করেন। দীপাবলির সময় ফের পিতৃলোকে ফিরে যান। এদিনটি আমাবস্যা। আমাবস্যার অন্ধকারে পিতৃপুরুষদের যাতে ফিরে যেতে কোনও অসুবিধা না-হয়, সেই কারণেই অন্ধকার পথ আলোকিত করে রাখা হয়। এই কারণেই ঘরে ঘরে প্রদীপ জ্বালানোর প্রথা রয়েছে।
[আরও পড়ুন: মা তারার রাজবেশ দেখতে তারাপীঠে উপচে পড়া ভিড়, মহা ধুমধামে পালিত দেবীর আবির্ভাব দিবস]
ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে জানা যায়, ষোড়শ শতাব্দীতে নবদ্বীপের পণ্ডিত রঘুনন্দন দীপান্বিতা অমাবস্যায় লক্ষ্মীপুজোর বিধান দেন। এই পুজোর নিয়ম কোজাগরি লক্ষ্মী থেকে একটু আলাদা। দীপান্বিতা লক্ষ্মীপুজোয় বাইরের দুয়ারে অলক্ষ্মীকে বিদায় দিয়ে লক্ষ্মীপুজো করা হয়। একে ভাগ্যলক্ষ্মীর পুজোয় বলা হয়। তবে সেই সময় কালীপুজোর কোনও উল্লেখ করেননি তিনি।
অন্যদিকে, অষ্টাদশ শতকে প্রকাশিত কালী সপর্যাস বিধিতে প্রথম বার দীপান্বিতা অমাবস্যায় কালীপুজোর উল্লেখ পাওয়া যায়। কিন্তু সপ্তদশ শতকে বাংলায় কালীপুজোর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। নবদ্বীপের প্রসিদ্ধ তান্ত্রিক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশকেই বাংলায় কালীমূর্তি ও কালীপূজার প্রবর্তক বলে মনে করা হয়।
শাস্ত্রমতে, মা কালীর আবির্ভাব সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, দেবাসুরের যুদ্ধে পরাজিত দেবতাদের প্রার্থনায় আদ্যাশক্তি ভগবতী পার্বতীর দেহ কোষ থেকে দেবী কৌশিকী আবির্ভূত হন। তখন ভগবতি দেবী কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেন বলে তাঁর নাম কালী বা কালিকা। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এই তিনটি কাল নিয়ে মহাকাল। আর সেই মহাকালের শক্তি কালী। অনন্তকালে সৃষ্টি রূপিণী পরমা প্রকৃতির রূপ এই মহাকালী।
[আরও পড়ুন:জীবনে সুখসমৃদ্ধি চান? লক্ষ্মীপুজোয় এই কাজগুলি ভুলেও করবেন না]