সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাজার পর ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর রক্তচক্ষুর নজরে এবার লেবাননে। গত কয়েকদিনে ইজরায়েলি ফৌজের বোমাবর্ষণে 'নরককুণ্ডে' পরিণত হয়েছে সেদেশ। ইরানের মদতপুষ্ট হেজবোল্লার ডেরা লক্ষ্য করে একের একের হামলা চালাচ্ছে তেল আভিভ। এবার ইহুদি দেশটির 'অগ্নিবর্ষণে' মৃত্যু হয়েছে হেজবোল্লার ড্রোন কমান্ডারের। কিন্তু ইজরায়েলে পালটা আক্রমণ শানাচ্ছে শিয়া জঙ্গিগোষ্ঠীটি। তাই সম্পূর্ণ ফৌজ নিয়ে হামলা চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতানিয়াহু।
১১ মাস পেরিয়ে গেলেও গাজায় থামেনি রক্তক্ষয়ী সংঘাত। সেখানে ইজরায়েলের মারে কোণঠাসা হামাস। গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইজরায়েলে রকেট হামলা চালাচ্ছিল লেবাননের হেজবোল্লা। গত কয়েকদিন ধরে সন্ত্রাসের জাল ছিঁড়তে এই শিয়া জঙ্গিগোষ্ঠীকে টার্গেট করে লেবাননে আগুন ঝরাচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষও। বৃহস্পতিবার লেবাননের বেইরুটে আঘাত হানে তেল আভিভ। বোমাবর্ষণে নিহত হয় হেজবোল্লার শীর্ষ ড্রোন কমান্ডার মহম্মদ হোসেন সুরুর। এছাড়াও এই হামলায় বেইরুটে প্রাণ হারিয়েছেন দুজন। আহত ১৫।
তবে রক্ত ঝরলেও ইজরায়েলে পালটা হামলা জারি রেখেছে হেজবোল্লা। ইহুদি দেশটিতে আছড়ে পড়ছে একের পর এক রকেট। তাই নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় নেতানিয়াহু কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, "আমরা হেজবোল্লার বিরুদ্ধে অভিযান জারি রাখব। যতদিন না ওরা রকেট ছোড়া বন্ধ করছে ততদিন আক্রমণ চলবে। লক্ষ্যপূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না। এবার সম্পূর্ণ ফৌজ নিয়ে আমরা ময়দানে নামব।" ইজরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি গতকাল তাঁর বাহিনীকে লেবাননে ঢুকে অভিযান শুরু করার জন্য প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে, লেবাননের এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক মহল। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, “এবার লেবাননে যুদ্ধ শুরু হতে পারে না। এই কারণেই আমরা ইজরায়েলকে লেবাননে হামলা বন্ধ করতে এবং হেজবোল্লাকে ইজরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ বন্ধ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।” মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লেবাননে পুরোদমে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেসও। তাঁর আশঙ্কা, “আর একটি গাজা হওয়ার পথে এগোচ্ছে লেবানন।” গাজার পাশাপাশি এবার লেবাননেও সংঘর্ষ থামানো নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ বাড়ছে ইজরায়েলের উপর।