চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: পঞ্চম থেকে একলাফে প্রথম। মাঝে সময় মাত্র ২ বছর। ২০১৯ সালে মাধ্যমিকে রাজ্যের মধ্যে পঞ্চম হয়েছিল মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) কান্দির রুমানা সুলতানা। আর ২০২১-এ অতিমারী আবহে পরীক্ষা ছাড়াই এককভাবে সর্বোচ্চ নম্বর পেল সে। উচ্চ মাধ্যমিকে (Higher Secondary) পাঁচশোর মধ্যে রুমানার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৯। এবং গোটা রাজ্যে এই নম্বর সে একাই পেয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রীর এই সাফল্যে শুধু তার পরিবার বা প্রতিবেশীরাই নন, উচ্ছ্বসিত রাজ্যের শিক্ষামহল।
মুর্শিদাবাদের কান্দি পুরএলাকার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের হোটেল পাড়া। এখানকারই বাসিন্দা রুমানা সুলতানা। কান্দি মণীন্দ্রচন্দ্র গার্লস স্কুলের ছাত্রী সে। শিক্ষক পরিবারের সন্তান রুমানা। বাবা রবিউল আলম ভরতপুর থানার অচলা বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক। মা সুলতানা পারভীন ভরতপুরের গয়সাবাদ অচলা বিদ্যামন্দিরে শিক্ষিকা। ফলে ছোটবেলা থেকে জ্ঞানার্জনে আগ্রহের একটা পরিবেশ ছিলই। রুমানা নিজেও পড়াশোনা করেছে ভালবেসে, স্রেফ পরীক্ষায় ভাল ফল করার প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে নয়। আর তারই ফল পেল সে হাতেনাতে। ২০১৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬৮৬ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মধ্যে পঞ্চম স্থান দখল করেছিল রুমানা। বিজ্ঞান বিভাগে ভরতি হওয়া ছাত্রীর লক্ষ্য ছিল, উচ্চ মাধ্যমিকে আরও ভাল ফল করার। লক্ষ্য পূরণ হয়েছে তার।
[আরও পড়ুন: HS Result 2021: পরীক্ষা ছাড়া উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ ৯৭.৬৯ শতাংশ, প্রথম দশে ৮৬ জন]
২০২১ সালে অতিমারী করোনা (Corona Virus) আবহে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। মাধ্যমিক এবং একাদশ শ্রেণির নম্বরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। বৃহস্পতিবার ফলাফল ঘোষণা করতে গিয়ে সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস বলেন, ”এবারে সর্বোচ্চ নম্বর পাঁচশোর মধ্যে ৪৯৯। সম্ভবত এই নম্বর একজনই পেয়েছে। মুর্শিদাবাদের এক মুসলিম কন্যা।” তবে এর বেশি আর তিনি একটি তথ্যও দেননি। কারণ, পরীক্ষা না হওয়ায় এ বছর মেধাতালিকা প্রকাশিত হয়নি। রুমানা জানাচ্ছে, তার মাধ্যমিক এবং একাদশ শ্রেণির ফলাফল ভাল ছিল। তাই বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিকে একেবারে শীর্ষে নাম রয়েছে। তবে হলে বসে পরীক্ষা দিতে না পারার আক্ষেপও রয়েছে তার। মা, বাবার পাশাপাশি এমন অভাবনীয় সাফল্যের জন্য নিজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে অষ্টাদশী ছাত্রী। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে যেতে চায় রুমানা।