সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সর্বধর্মে সমন্বয়ই ভারতের ঐতিহ্য। অথচ বর্তমানে ধর্মীয় হানাহানির খবর প্রায়শয়ই শিরোনামে চলে আসে। তবে সেগুলি যে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া আর কিছুই নয় তা প্রমাণ করে দিলেন কেরলের চিকিৎসক রেখা কৃষ্ণা। মৃত্যু পথযাত্রী এক মুসলমান করোনা (Coronavirus) রোগীর কানে কলমা পড়ে শোনালেন তিনি।
দিনকয়েক আগে কেরলের (Kerala) পলাক্করের পতম্বির সেবানা হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে ভরতি হন করোনা আক্রান্ত এক মুসলমান মহিলা। ওই হাসপাতালেরই চিকিৎসক রেখা কৃষ্ণা (Rekha Krishna)। তিনিই ওই মহিলার চিকিৎসা করছিলেন। আইসিইউতে ছিলেন রোগী। তবে কিছুতেই তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না। চিকিৎসক বুঝতে পারছিলেন ওই করোনা রোগীকে কোনওভাবেই সুস্থ করে তোলা সম্ভব নয়। পরিজনদেরও সেকথা জানিয়েছিলেন তিনি। যেহেতু করোনা আক্রান্ত তাই ওই মহিলার সঙ্গে পরিজনদের কেউই দেখা করতে পারছিলেন না।
[আরও পড়ুন: এশিয়ার ধনীদের তালিকার শীর্ষে দুই ভারতীয়, মুকেশ আম্বানির পরই গৌতম আদানি]
এদিকে, একদিন রেখা বুঝতে পারেন রোগীর নাড়ির স্পন্দন ধীর হচ্ছে। ঠিকমতো নিঃশ্বাস নিতেও পারছেন না। সেই সময় রোগীর কানের কাছে গিয়ে আস্তে আস্তে কলমা পড়তে থাকেন ওই চিকিৎসক। রেখা দেখেন কলমা পড়ামাত্রই রোগী গভীর শ্বাস নেন। তারপরই মৃত্যু হয় তাঁর। রেখা বলেন, “আমার দুবাইতে বেড়ে ওঠা। তাই ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে আমি অল্পবিস্তর জানি।” সে কারণেই মৃত্যুপথযাত্রী করোনা রোগীর কানে কলমা পড়ে শুনিয়েছিলেন চিকিৎসক।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে বিপর্যস্ত দেশ। সংক্রামক এই রোগ থেকে বাঁচতে আক্রান্তদের থাকতে হচ্ছে নিভৃতবাসে। সেক্ষেত্রে কিছুদিনের জন্য হলেও পরিজনদের সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। মৃত্যুপথযাত্রীর সঙ্গেও শেষ দেখা করার সুযোগ পাচ্ছেন না পরিবারের লোকজনেরা। সেই সময় চিকিৎসকরাই একমাত্র ভরসা রোগীদের। তাই মুসলিম রোগীর জীবনের শেষ মুহূর্তে ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে হিন্দু চিকিৎসকের এহেন আচরণ যে যথেষ্ট প্রশংসাযোগ্য সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।