বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: ‘দলের ভাঙন রুখতে নজর দিন’। প্রথম বৈঠকে বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে পরামর্শ বিজেপির শীর্ষনেতৃত্বের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) থেকে শুরু করে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষের (BL Santosh) মতো নেতার সঙ্গে সুকান্তর বৈঠকে বাংলায় বিজেপির ভাঙনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
গত সপ্তাহে বাংলায় দলের রাজ্য সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে দু’দিনের প্রথম দিল্লি সফর সেরে বুধবার দুপুরেই রাজ্যে ফিরে গিয়েছেন সুকান্ত। তার আগে মঙ্গলবার দলের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎপর্ব সেরেছেন। বুধবার সকালে বালুঘাটের সাংসদ সুকান্ত দিল্লিতে নিজের নর্থ অ্যাভিনিউয়ের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিক বৈঠকে প্রতিটি সাক্ষাৎপর্বকেই ‘সৌজন্য’ বলে দাবি করেছেন।
[আরও পড়ুন: পাঞ্জাবের পর এবার ছত্তিশগড়েও টালমাটাল কংগ্রেস! দিল্লিতে রাহুলের দ্বারে ১৫-১৬ জন বিধায়ক]
জানা গিয়েছে, নাড্ডার (JP Nadda) সঙ্গে সুকান্তর বৈঠকে দলের ভাঙন প্রসঙ্গে বাবুল সুপ্রিয়র বিষয়টিও উঠেছিল। বাবুল কেন বিজেপি ছেড়ে অন্য দলে যোগ দিলেন, তার উত্তর এখনও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মেলাতে পারছে না। বিজেপির তিন বিধায়কও দল ছেড়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে পা বাড়িয়েছে। আগামী দিনে যাতে সংখ্যাটি না বাড়ে সেই বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য সুকান্তকে (Sukanta Majumdar) বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামিকাল, শুক্রবার সুকান্ত রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছেন। দলের ভাঙন নিয়ে সতর্ক হওয়া এবং রোখার বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পরামর্শ দিলেও, দলে যোগদানকারীদের ক্ষেত্রে বিজেপি কোনও বাছবিচার রাখবে না। এমনকী, যাঁরা দল ছেড়ে গিয়েছেন তাঁরাও ফিরে আসতে চাইলে দ্বার অবারিতই থাকছে। সুকান্তর মন্তব্য থেকেই এদিন তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “বিজেপির (BJP) নীতি-আদর্শে যাঁরা বিশ্বাস করেন তাঁদের ফিরে আসার কথা বলব। তাঁরা ফিরে আসুন, একসঙ্গে লড়াই করব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ মন্ত্র তা দেখে যাঁরা আকৃষ্ট হবেন, যা পণ্ডিত দীনদয়ালের অক্লান্ত মানবদর্শন, তাতে আকৃষ্ট হয়ে কেউ আসতে চাইলে আমরা তাঁদের স্বাগত জানাব। তবে, ব্যক্তিস্বার্থ নিয়ে যারা আসতে চান, তাঁদের আমরা চাই না। তবে, কার মনে কী আছে তা জানার উপায় তো নেই!”
[আরও পড়ুন: ভোটের আগের রাতে ইন্দ্রনীল সেনের বাড়িতে গানের আসরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়]
মুকুল রায়, বাবুল সুপ্রিয়রা (Babul Supriyo) দল ছেড়ে চলে যাওয়ায় বিজেপির কোনও ক্ষতি হয়নি বলে দাবি নতুন রাজ্য সভাপতির। সঙ্গে এদের ভূমিকা নিয়ে কটাক্ষও করেছেন। সুকান্ত বলেছেন, “যাঁরা চলে গিয়েছেন তাঁরা থাকলে দল শক্তিশালী হত। তবে, খুব বেশি কিছু ক্ষতি হবে না। বিজেপির যে সাংগঠনিক কাঠামো তাতে সাময়িকভাবে একটা ধাক্কা লাগলেও সাংগঠনিকভাবে কোনও ক্ষতি হয়নি। যারা দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত, সংগঠন করেছেন তাঁরা কেউ কোথাও যান না। এখন পদ পাওয়া নিয়ে অনেকের অনেক সমস্যা। এখানে আমার প্রশ্ন এটাই যে রাজনীতি করা কি পদ পাওয়ার জন্য নাকি আদর্শ?” বিজেপির জন্য গাওয়া বাবুলের গানের কপিরাইট দলের কাছে থাকলে আগামিদিনে রাজ্যে তা ব্যবহার করা হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন সুকান্ত।