সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বর্ষশেষের রাতে জাতির উদ্দেশে তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, চিরাচরিত নিয়মের বাইরে গিয়ে সাধারণ মানুষকে, বিশেষত মধ্যবিত্তকে স্বস্তি দিতে। আর, নোট বাতিলের পঞ্চাশ দিনের মাথায় নরেন্দ্র মোদির সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে রবিবারই ঋণে সুদ কমানোর পথে হাঁটল দেশের সর্ববৃহত্ রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া-সহ আরও কয়েকটি ব্যাঙ্ক৷ ছোট ও স্বল্পমেয়াদি ঋণে সুদ কমানোর কথা ঘোষণা করেছে এসবিআই৷ একই পথে হেঁটেছে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া৷
রবিবার এসবিআইয়ের তরফে একটি বিবৃতি পেশ করে জানানো হয়, এক বছরের জন্য মার্জিনাল কস্ট অফ ফান্ড বেসড লেন্ডিং রেট (এমসিএলআর) বা তহবিল ভিত্তিক সুদের হার ৮.৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করা হচ্ছে৷ এমসিএলআর ০ .৯ শতাংশ কমায় বাড়ি -গাড়ির ঋণে সুদের হার কমবে৷ অন্যদিকে মহিলা গৃহঋণ গ্রহণকারীদের ক্ষেত্রে সুদের হার ৮.২৫ শতাংশ থেকে কমে ৮.২০ শতাংশ হচ্ছে৷ এসবিআইয়ের নির্দেশিকা অনুযায়ী, দু’বছরের জন্য ঋণে সুদের হার হবে ৮.১০ শতাংশ, তিন বছরের জন্য সুদের হার হবে ৮.১৫ শতাংশ, এক থেকে ছ’মাসের ঋণের ক্ষেত্রেও একইভাবে সুদের হার কমবে ০.৯ শতাংশ৷ নতুন সুদের হার ১ জানুয়ারি থেকেই কার্যকর হবে৷
উল্লেখ্য, বর্ষশেষের রাতে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণে ব্যাঙ্কগুলিকে গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের উপর নজর রাখার আহ্বান জানিয়েছিলেন৷ তিনি বলেন, “ব্যাঙ্কের স্বশাসনকে সম্মান দিয়েও তাদের আহ্বান করছি নিম্ন, নিম্ন-মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের উপর বেশি গুরুত্ব দিতে৷” এরপরই রবিবার এসবিআইয়ের ঘোষণা সামনে এসেছে৷ ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের ফলে এই মুহূর্তে বাজারে ছড়িয়ে থাকা বিপুল অর্থ ব্যাঙ্কিং পদ্ধতিতে এসেছে৷ এর ফলে ব্যাঙ্কগুলির হাতে এখন প্রচুর তহবিল রয়েছে৷ তা বাজারে ছাড়তেই ঋণে সুদ কমানোর পথে হাঁটছে ব্যাঙ্কগুলি৷ একটি হিসাবে দাবি করা হয়েছে, ব্যাঙ্কের হাতে এসেছে ১৪.৯ লক্ষ কোটি টাকা৷
একইভাবে ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এমসিএলআর ৬৫ বেসিস পয়েণ্ট কমানোর কথা ঘোষণা করেছে৷ এই ক্ষেত্রে সুদের হার ৮.৬৫ শতাংশ থেকে কমে ৮ শতাংশ হয়েছে৷ পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক এমসিএলআর ০.৭ শতাংশ কমিয়েছে৷ সেক্ষেত্রে সুদের হার ৯.১৫ থেকে কমে ৮.৪৫ শতাংশ হয়েছে৷ এর আগে শুক্রবারই অবশ্য আইডিবিআই ব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্ক অফ ত্রিবাঙ্কুর ঋণে সুদের হার কমানোর কথা ঘোষণা করে৷ ব্যাঙ্কগুলির এই সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক৷
অর্থনীতিবিদদের মত, ২০০৮ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে ধসের পর এই প্রথম সুদের হার এতটা কমানো হল৷ মনে করা হচ্ছে, নোট বাতিলের কারণে সমাজের কোনও অংশের আবেগে আঘাত হয়ে থাকলে তা এই সুদ কমানোর পথে সামাল দেওয়া যাবে৷ এদিকে ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক সঙ্কট কাটাতে বাজারে কিউআইপি ছেড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা তোলার জন্য ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে রবিবার অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক৷
The post ক্ষুদ্রঋণে সুদের হার কমাল SBI, সস্তা হচ্ছে গাড়ি-বাড়ির ঋণ appeared first on Sangbad Pratidin.