দেবব্রত দাস, পাত্রসায়র: দীর্ঘ লকডাউনে সমস্ত দোকানপাটের সঙ্গে বন্ধ ছিল মদের দোকানও। যার জেরে দেশি-বিদেশি মদের আকাল দেখা দিয়েছিল। গত ৪ মে থেকে মদ বিক্রিতে সায় দিয়েছে রাজ্য সরকার। দাম বেঁধে দিলেও, অনেক জায়গাতেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সুরা। অনেকে সাধ্যমতো সেই দামেই মদ কিনছেন। কিন্তু আকালের এই বাজারে যাঁরা সেই দাম দিতে পারছেন না, তাঁদের ভরসা জোগাচ্ছে হাঁড়িয়া, মহুল বা চোলাই। লকডাউনের সুযোগে বাঁকুড়ার বহু গ্রামেই এখন ঘরে তৈরি এই জাতীয় সুরা রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে। যদিও আবগারি দপ্তরের দাবি, বেআইনি চোলাই বিক্রির খবর পেলেই অভিযান চালিয়ে তা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
প্রায় দু’মাস ধরে দেশজুড়ে লকডাউন। তার মেয়াদ আরও দু সপ্তাহ বাড়তে চলেছে। প্রথম দু দফা লকডাউনে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল সরকারি লাইসেন্স প্রাপ্ত দেশি-বিদেশি মদের দোকান। এই অবস্থায় চরমে বিপাকে পড়েছিলেন সুরাপ্রেমীরা। এই সুযোগে গ্রামে গ্রামে কোথাও শুরু হয়ে গিয়েছে হাঁড়িয়া তৈরি। আবার কোথাও বা মহুলের কারবার। অনেক জায়গায় চলছে পুরনো চোলাই। লকডাউনের সুযোগে বাঁকুড়ার ইন্দাস, পাত্রসায়ের থেকে জঙ্গলমহলের রানিবাঁধ, রাইপুর, বারিকুল, হিড়বাঁধ এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে ফের রমরমিয়ে চলছে হাড়িয়া, মহুল বা চোলাই মদের কারবার। স্থানীয় সূত্রের খবর, এক লিটার হাঁড়িয়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা, মহুল ১০০ থেকে ১২০ টাকা ও চোলাই ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আকালের বাজারে সেই মদ দেদারে বিক্রি হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: এখনও টাটকা ফণী-বুলবুলের ক্ষত, ঘূর্ণিঝড় আমফানের আতঙ্কে কাঁটা সুন্দরবন]
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সুরাপ্রেমী আক্ষেপের সুরে বলেন, “দেশি বিদেশি মদ আগে মিলছিল না। এখন যদি বা মিলছে দাম অনেকে বেড়ে গিয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে হাঁড়িয়া, মহুল বা চোলাই খেয়ে নেশা মেটাতে হচ্ছে। তবে আগের থেকে এর দামও অনেক বেড়ে গিয়েছে।” বাঁকুড়া জেলা আবগারি আধিকারিক সৌম্য সেনগুপ্ত বলেন, “বেআইনি মদ বিক্রি এখন পুরোপুরি বন্ধ। খবর পেলেই আমরা অভিযান চালাই। তবে জঙ্গলমহলের কিছু এলাকায় হাঁড়িয়া বা মহুল মদ বাড়িতে তৈরি করে অনেকেই খায়। ব্যাপকভাবে মদ বিক্রির খবর আমাদের জানা নেই।”
[আরও পড়ুন: ক্যানসারের যন্ত্রণাকে অগ্রাহ্য! মাস্ক বানাচ্ছেন বোলপুরের সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা]
The post লকডাউনে দোকান খুললেও মহার্ঘ মদ, গ্রামাঞ্চলে নেশা মেটাচ্ছে মহুল-হাঁড়িয়াই appeared first on Sangbad Pratidin.