সুমন করাতি, হুগলি: বয়স পুরোপুরি নয় হয়নি। সারাদিনের হুল্লোড়ে মাতিয়ে রাখে গোটা বাড়ি। মুখের হাসিতে বাবা-মার সারাদিনের কষ্ট দূর হতে বাধ্য। তবে ক্যারাটের সাদা পোশাক পরতেই অন্য মেজাজ। বোঝা মুশকিল এই শিশুকন্যাই এতক্ষণ ছুটছিল বাড়ির এ প্রান্ত থেকে অপ্রান্ত! কিছুদিন আগে ক্যারাটের জাতীয় স্তরের দুটি প্রতিযোগিতায় সোনার মেডেল জিতেছে সে। এবার নাম তুলল ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস ও এশিয়া বুক অফ রেকর্ডসে।
হুগলির (Hooghly) মগড়ার গজঘণ্টা বকুলতলার বাসিন্দা অভিষেক ও মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী। তাঁদের কন্যা আরাত্রিকা চক্রবর্তী। তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। মাত্র তিন বছর বয়স থেকে ক্যারাটে (karate) শিখছে। নিছক খেলার ছলেই মেয়েকে ক্যারাটেতে ভর্তি করান চক্রবর্তী দম্পতি।তখন কে ভেবেছিল এই খেলাতেই একের পর রেকর্ড তৈরি করবে সে।
এতো ছোট বয়সে আরাত্রিকার প্রতিভা দেখে অবাক হয়ে যান কোচেরাও। সেই কথা জানানো হয় বাবা-মাকে। পড়াশোনা, গান, আবৃত্তির পাশাপাশি ক্যারাটের দিকে বিশেষ নজর দেন অভিভাবকরা।
সেই শুরু। আর ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর রের্কড তৈরি করেছে ছোট্ট আরাত্রিকা। এবার তার মুকুটে জুড়ল নতুন পালক। প্রায় একই সঙ্গে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস ও এশিয়া বুক অফ রেকর্ডসে (Asian book of records) নিজের নাম তুলে ফেলল এই কন্যা।
[আরও পড়ুন: ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের নিরাপত্তা কর্মীকে ধাক্কা! কালনার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের কর্তৃপক্ষের]
কীভাবে এল এই শিরোপা? আরাত্রিকার কোচ ও পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, রের্কড তৈরি করতে গেলে দরকার ছিল মিনিটে ৩৫০টি পাঞ্চ। আরাত্রিকা সেই লক্ষ্যমাত্রা পার করে মিনিটে ৬৯০ টি পাঞ্চ করে। সেই ভিডিও পাঠানো হয় ইন্ডিয়া এবং এশিয়া রেকর্ডসে। কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখে ৪৮০ টি পাঞ্চ বৈধ বলে ঘোষণা করে। তার জেরেই নতুন রেকর্ড। একই সঙ্গে দুই জায়গা থেকে পুরস্কার।
মঙ্গলবার সেই শংসাপত্র হাতে আসে। তারপরই খুশির জোয়ার চক্রবর্তী পরিবারে। অভিষেক ও মৈত্রেয়ী এই রেকর্ডের পুরো কৃতিত্ব দিচ্ছেন, নিজেদের মেয়ে এবং তার দুই কোচ শংকর রাউত ও সঞ্জয় দাসকে।
আরাত্রিকার বাবা অভিষেক চক্রবর্তী বলেন, "মেয়ের এই সাফল্যের গোটা কৃতিত্ব ওর। সঙ্গে আরাত্রিকার দুই কোচ যেভাবে খেটেছেন তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আমরা বাবা-মা হিসাবে যতটা পেরেছি ওর পাশে থেকেছি। এই রেকর্ডে আমরা খুব খুশি।" আগামিদিনে আরাত্রিকার ইচ্ছাকেই প্রাধন্য দেওয়া হবে বলে জানাচ্ছে পরিবার।