ধীমান রায়, কাটোয়া: আর জি কর কাণ্ডের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদের ঝড়। গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কাটোয়ার গুসুম্বা গ্রাম। একটি লজে নিয়ে গিয়ে ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে বেহুঁশ করে এই ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ। গৃহবধূর অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও বাকিরা অধরা। ধৃতকে চারদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন কাটোয়া মহকুমা আদালতের বিচারক। অপরজনের খোঁজ চলছে।
পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার (Katwa) ঘটনা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম বিশ্বজিৎ হালদার। তাঁর বাড়ি কাটোয়ার গুসুম্বা গ্রামে। কাটোয়া থানা এলাকার এক বধূ গত রবিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ, ওই বধূর স্বামী কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে থাকেন। বধূ জানান, ঘটনার সূত্রপাত গত ১৫ আগস্ট। ওইদিন তিনি কাটোয়া শহরে ডাক্তার দেখাতে আসছিলেন। তখন কাটোয়ার গাঁফুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা রাজেশ নন্দী ওরফে রাজা নামে এক যুবকের টোটোয় চড়ে বধূ কাটোয়া শহরে আসছিলেন।
বধূর অভিযোগ, টোটোচালক (Toto driver) যুবক কাটোয়ার লেনিন সরণিতে একটি লজের দোতলার ঘরে তাঁকে নিয়ে যায়। ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে মাদক (Drug) জাতীয় কিছু মিশিয়ে বেহুঁশ করে। তার পর রাজেশ ও তাঁর এক বন্ধু বিশ্বজিৎ হালদার দুজনে মিলে তাঁকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। গৃহবধূর আরও অভিযোগ, "আমি ঘটনার কথা স্বামীকে জানিয়ে দেব যখন বলি তখন ওই দুজন আমাকে হুমকি দেখিয়ে বলে, ধর্ষণের ভিডিও মোবাইল ক্যামেরায় তোলা আছে। কাউকে জানালে ভাইরাল (Viral)করে দেব।"
[আরও পড়ুন: আর জি করের দোষী কে? উত্তর খুঁজতে সিবিআইয়ের দলে হাথরসের তদন্তকারী অফিসার]
বধূর অভিযোগ, ওদিনই অভিযুক্ত বিশ্বজিৎ হালদার তাঁকে ভয় দেখিয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে জোর করে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। এরপর বধূ ঘটনার কথা তাঁর স্বামীকে ফোনে জানান। বধূর স্বামী কাজের সূত্রে হায়দরাবাদে (Hyderabad) থাকেন। স্বামীকে ফোনে জানানোর পর বধূর স্বামী তাঁর মামাতো ভাইদের ঘটনার কথা জানান। এর পর নির্যাতিতার মামাতো দুই দেওর গত শনিবার বিকেলে বিশ্বজিতের বাড়ি থেকে বধূকে উদ্ধার করে আনেন। রবিবার বধূ কাটোয়া থানায় রাজেশ নন্দী ও বিশ্বজিৎ হালদারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। রবিবার রাতেই বিশ্বজিৎকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যজন পলাতক বলে জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: সঞ্জয়ের পলিগ্রাফ টেস্টের অনুমতি আদালতের, এবার কাটবে আর জি কর রহস্যের জট?]
আরও জানা গিয়েছে, ধৃত যুবক কলকাতা শহর সংলগ্ন এলাকায় একটি গেস্ট হাউসে কাজ করেন। কাটোয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কাশীনাথ মিস্ত্রি জানিয়েছেন, গণধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।