shono
Advertisement
Theft

মহিলার ছদ্মবেশে বেহালার একের পর এক মন্দিরে চুরি! যুবককে ধরিয়ে দিল 'গেট প্যাটার্ন অ্যানালিসিস'

১০০ টি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তদন্তের পরই সমীর হালদার ওরফে জোজোর আসল পরিচয় জানতে পারেন তদন্তকারীরা।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 09:01 AM Mar 11, 2025Updated: 09:01 AM Mar 11, 2025

অর্ণব আইচ: সিসিটিভির ফুটেজ দেখে প্রথমে একটু অবাকই হয়েছিলেন পুলিশ আধিকারিকরা। এভাবে এক মহিলা শরীর আপাদমস্তক ঢেকে চুরি করছেন মন্দিরে? সেই ভুল ভাঙল প্রায় ১০০টি সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তদন্তের পর। বোঝা গেল, মহিলার ছদ্মবেশে 'চোর' আসলে এক যুবক। মহিলা সেজে হাওড়া থেকে বাইকে লিফট নিয়ে বেহালা, পর্ণশ্রীতে একের পর এক মন্দিরে লুটপাট চালাচ্ছিল সে। ১০০টি সিসিটিভি ফুটেজ ও চলাফেরার ভঙ্গি বা 'গেট প্যাটার্ন অ্যানালিসিস' করে শেষপর্যন্ত হাওড়ার বালটিকুরি থেকে সমীর হালদার ওরফে জোজো নামে ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করলেন পর্ণশ্রী থানার আধিকারিকরা।

পুলিশ জানিয়েছে, কিছুদিন আগে পর্ণশ্রীর মহেন্দ্র ব্যানার্জি রোডের উপর একটি কালীমন্দিরে চুরি যায়। মন্দিরের গেটের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে কয়েক লক্ষ টাকা মূল্যের অন্তত বারোটি সোনার গয়না লুট করে দুষ্কৃতী। এই ব্যাপারে মন্দির কমিটি তথা একটি ক্লাবের পক্ষ থেকে পর্ণশ্রী থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। সিসিটিভিতে ধরা পড়ে চুরির ঘটনা। দেখা যায়, একজনই দুষ্কৃতী ভিতরে প্রবেশ করেছে। তার সারা মুখ-মাথা কালো কাপড়ে ঢাকা। পুরো শরীর ঢাকা আলখাল্লার মতো পোশাকে। চালচলন যেন অনেকটা মহিলার মতো।

কিন্তু এহেন 'মহিলা দুষ্কৃতী'র এই ধরনের কীর্তি দেখে চমকে যান পুলিশ আধিকারিকরাও। তাঁরা রাস্তার সিসিটিভির ফুটেজ দেখতে শুরু করেন। দেখা যায়, একটি বাইক তার সামনে এসে দাঁড়ায়। বাইকে চড়ে বেরিয়ে যায় সে। ওই বাইকের সন্ধানে রাস্তায় বিভিন্ন থানা ও ট্রাফিক পুলিশের একের পর এক সিসিটিভির ফুটেজ পুলিশ দেখতে শুরু করে। এভাবেই জানা যায়, হাওড়ায় গিয়েছে বাইকটি। নম্বর দেখে বাইকটি শনাক্ত করে পুলিশ আরও হতবাক হয়ে যায়। ওই বাইকের চালক জানান, তিনি শ'খানেক টাকার বিনিময়ে ওই আরোহীকে 'লিফট' দিয়েছেন। কিন্তু তার কণ্ঠস্বর শুনে বাইক চালকের মনে হয়েছে, সে নারী নয়, পুরুষ। এখানেই পুলিশ আধিকারিকদের খটকা লাগে। তাঁরা হাওড়ার বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ দেখে এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করেন। তার চালচলন আর হাঁটার ধরন অনেকটা মন্দিরের দুষ্কৃতীর মতোই। পুলিশ ওই ব্যক্তির চালচলন বা 'গেটওয়ে প্যাটার্ন' পরীক্ষা করে। তাতে প্রমাণিত হয় যে, মন্দিরে লুটপাট সে-ই করেছে। শেষমেশ বালটিকুরি এলাকা থেকে সমীর ওরফে জোজোকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

Advertisement

জানা যায়, ভগবৎ মাইতি নামে এক সঙ্গীর কাছে জোজো লুকিয়ে রেখেছিল কালী প্রতিমার সোনার মুকুট-সহ প্রায় এক ডজন সোনা ও রুপোর গয়না। জগাছা থেকে ভগবৎকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ চোরাই এক ডজন গয়না উদ্ধার করে। পুলিশ জেনেছে, সমীর ওরফে জোজো ছোটবেলায় সরশুনা এলাকায় থাকত। সেসময় সাইকেলে করে সে ঘুরে বেড়াত সরশুনা, পর্ণশ্রী, বেহালার বিভিন্ন জায়গায়।
মন্দিরের সামনে প্রণামীর বাক্স দেখে চুরির কথা তার মাথায় আসে। পরে হাওড়ায় পরিবার নিয়ে থাকতে শুরু করলেও হেঁটে আসত হাওড়া স্টেশনে। তার পর বাইকে লিফট নিয়ে বেহালা অঞ্চলে এসে মন্দিরে লুটপাট চালাত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রণামীর বাক্স ও ছোটখাটো চুরি করত বলে কেউ অভিযোগও জানাতেন না। কিন্তু হাত পাকানোর পর সে বড় মন্দিরে চুরির ছক কষে। আর তাতেই ধরা পড়ে যায় সমীর। তাকে জেরা করে ক'টি জায়গায় লুট করেছে, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
Advertisement