সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একমাস পূর্ণ হতে চলেছে ইজরায়েল বনাম প্যালেস্টাইনের জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসের লড়াইয়ের। মধ্যপ্রাচ্যের এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতে হামাসকে সমর্থন করে ইজরায়েলের বুকে হামলা চালাচ্ছে ইরানের মদতপুষ্ট লেবাননের সন্ত্রাসী সংগঠন হেজবোল্লা। এবার তাদের দোসর হয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র হাউথি গোষ্ঠী। ইজরায়েলে একের পর এক মিসাইল ছুড়ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, ইজরায়েলে মিসাইল ছুড়ে কাকে বার্তা দিচ্ছে ইয়েমেনের হাউথিরা? কোন অঙ্ক মধ্যপ্রাচ্যে?
আল জাজিরার সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগেই ইজরায়েলের (Israel) দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ইয়েমেনের সশস্ত্র হাউথি গোষ্ঠী। কিন্তু সেগুলো মার্কিন নৌসেনার দ্বারা ধ্বংস করে দেওয়া হয়। তাছাড়া, ইয়েমেন থেকে ইজরায়েলের দুরত্ব ২ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি। হাউথিদের ভাণ্ডারে এতটা দূরে আঘাত হানার মতো কোনও মিসাইল নেই। ফলে মনে করা হয়েছিল আর হয়ত ইজরায়েলে হামলা করবে না তারা। কিন্তু গত মঙ্গলবার ফের মিসাইল ছোড়ে হাউথি গোষ্ঠী। এখানেই প্রশ্ন উঠছে প্রতিকূল পরিস্থিতির কথা জেনেও কেন বারবার হামলা চালাচ্ছে তারা?
[আরও পড়ুন: এবার গাজায় পরমাণু বোমা হামলা? ইজরায়েলের মন্ত্রীর কথায় তুঙ্গে বিতর্ক]
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, হাউথিরা প্যালেস্টাইনের হয়ে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে নামলেও তাদের আসল টার্গেট তেল আভিভ নয়। এর পিছনে রয়েছে অন্য সমীকরণ। হাউথিদের নিশানায় আসলে সৌদি আরব। যারা আমেরিকাপন্থী। মার্কিন প্রশাসনের মধ্যস্থতায় ইজরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে উদ্যোগী হয়েছে রিয়াধ। কিন্তু বাধ সেধেছে হামাস-ইজরায়েলের লড়াই। ফলে ইরানের অঙ্গুলি হেলনে ইহুদি দেশটিতে আক্রমণের মাধ্যমে মুসলিমদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিতে চাইছে হাউথিরা। এভাবেই সৌদি আরবকে মুসলিম বিশ্বে কোণঠাসা করার ছক কষছে তেহরান।
বলে রাখা ভালো, ইয়েমেনে হাউথিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে সৌদি জোট। সানার উপর চাপ বাড়িয়ে এক সময় সৌদি প্রশাসন ১০ লক্ষের বেশি ইয়েমেনি শ্রমিককে দেশ থেকে বের করে দেয়। যার ফলে বেকারত্ব আরও গ্রাস করে দীন ইয়েমেনকে। সেই সময় এই দেশটির পাশে দাঁড়ায় ইরান। সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে ইয়েমেনকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করে। ২০১৪ সালে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। যার এক দিকে ছিল সৌদি সমর্থিত গোষ্ঠী এবং অন্য দিকে ইরান সমর্থিত হাউথি গোষ্ঠী। কূটনীতিকদের মতে, এবার হাউথিদের ইজরায়েলে আক্রমণ করার নেপথ্যেও রয়েছে ইরানের মদত।