সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক অসম লড়াই ছিল। বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা ছিল ১ শতাংশেরও কম। কিন্তু ছোট্ট শিবন্যার মধ্যে অসীম শক্তি ছিল। তাই সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে এতগুলো মাস পর তার শারীরিক অবস্থার উন্নতিকে সবাই বলছেন – মিরাক্যল! আর এই ‘মিরাক্যল বেবি’কেই দেশের ‘ক্ষুদ্রতম নবজাতক’ (Tiniest infant) বলে চিহ্নিত করেছেন চিকিৎসকরা। আর তার লড়াইকে কুর্নিশ করছেন সকলে।
পুণের (Pune) নবজাতক শিবন্যা। ২০২২-এর মে মাসে মাত্র ২৪ সপ্তাহে জন্মেছিল সে। ওজন ছিল ৫০০ গ্রামেরও কম! শুনে বিস্মিত হচ্ছেন? কিন্তু এই তথ্যই জানিয়েছেন পুণের হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ৩০ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের শিবন্যাকে দু’হাতের তালুতেই ধরা যেত। তার শরীরের অনেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পরিপূর্ণভাবে তৈরি হয়নি। চিকিৎসা পরিভাষায় সে ‘এক্সট্রিমলি প্রি-ম্যাচিওর বেবি’ (Extremely Premature Baby)। এহেন শিশু কীভাবে বেঁচে থাকবে? তা নিয়ে বিভ্রান্ত ছিলেন চিকিৎসকরাই। কিন্তু হাল ছাড়েননি তাঁরা। কারণ, শিবন্যার আধবোজা চোখে তাঁরা এক অদ্ভুত শক্তি দেখেছিলেন। ফলে শুরু হল ৪০০ গ্রামের ক্ষুদ্রতম শিশুকে বাঁচানোর লড়াই। শিবন্যার সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়েছে পুণের চিকিৎসক দলটিও।
[আরও পড়ুন: বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্রীকে খুনের পর দেহ পুঁতে দেওয়ার অভিযোগ, আটক ২ প্রতিবেশী]
টানা প্রায় ৯৪ দিন বাচ্চাটিকে নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে (Neonatal Care Unit) রেখে চলে চিকিৎসা। তাও আবার সাধারণ ইউনিট নয়, শিবন্যার জন্য তৈরি হয় টার্শিয়ারি নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট। চলে উচ্চতরঙ্গের ভেন্টিলেশন (Ventilator)। সেইসঙ্গে পেটে ক্যাথিটার ঢুকিয়ে তরল খাবার দেওয়া হতে থাকে। টানা পর্যবেক্ষণ করেন চিকিৎসকরা। ৭০ দিনের মাথায় একটু একটু করে তার শারীরিক উন্নতি হতে থাকে। অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পূর্ণতা পেতে থাকে। কিন্তু ত্বক তখনও তৈরি হয়নি। ফলে স্পেশ্যাল ইনকিউবেটরে রাখা হয়। ৯৪ দিন পর তার শরীরের ওজন দাঁড়ায় ২.১৩ কেজি, অর্থাৎ সাধারণ শিশুদের চেয়ে সামান্য কম। এবার চিকিৎসকরা নিশ্চিন্ত হন। শিবন্যাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় মায়ের কোলে।
[আরও পড়ুন: অঞ্জলিকে চাপা দিল কে? অভিযুক্তদের বয়ানে বিভ্রান্ত দিল্লি পুলিশ, প্রকাশ্যে CCTV ফুটেজ]
তবে এই লড়াই যেমন শিবন্যার, তেমনই চিকিৎসকরদেরও। তাঁদেরও নতুন অভিজ্ঞতা হল। মাত্র ২৪ সপ্তাহে ভূমিষ্ঠ হওয়া এত ক্ষুদ্র নবজাতককে যে সত্যিই বাঁচানো সম্ভব, তা এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না কারও কারও। কিন্তু কথায় বলে না, বাস্তব কল্পনার চেয়েও অদ্ভুদ! শিবন্যার লড়াই যেন সে কথাই আবার প্রমাণ করে দিল।