shono
Advertisement

একাধিক সিম থেকে চ্যাট, প্রেমের ফাঁদে ফেলেই লস্কর জঙ্গি নিয়োগ করত আলতাফ! প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য

আলতাফের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হত কাদের? জানার চেষ্টা করছে তদন্তকারীরা।
Posted: 08:56 AM Apr 17, 2021Updated: 08:56 AM Apr 17, 2021

অর্ণব আইচ: একের পর এক সিমকার্ড পালটে কাশ্মীরে বসে সারা দেশে মূলত তরুণীদের মগজধোলাই করত লস্কর-ই-তৈবার নেতা আলতাফ আহমেদ রাকিব। প্রেমের ফাঁদ পেতে তরুণীদের লস্করের সদস্য তৈরির জন্য একাধিক সিমকার্ড ব্যবহার করা হত বলেই সন্দেহ এনআইএর। ক’য়েকটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে কাদের সঙ্গে আলতাফ যোগাযোগ রাখত, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এমনকী, ভোটের আগে থেকে জঙ্গিদের এই ‘জেহাদি’ গ্রুপগুলিতে দেশবিরোধী প্রচার করা হচ্ছিল বলেও জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।

Advertisement

কাশ্মীরের বান্দিপুরায় তল্লাশি চালিয়ে এনআইএ গ্রেপ্তার করে লস্কর সদস্য আলতাফকে। এক বছর আগে ধৃত উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা কলেজছাত্রী তানিয়া পারভিনকে সোশ্যাল মিডিয়ায় মগজধোলাই করে এই আলতাফ। তানিয়া তার সদস্য হিসাবেই কাজ শুরু করেছিল। তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দারা জানতে পারে, সাইবার নাশকতা বা ভার্চুয়াল যুদ্ধ শুরুর ছক কষছে লস্কর-ই-তৈবা। সরাসরি গিয়ে দেখা করে সদস্য নিয়োগের ঝুঁকি না নিয়ে এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সদস্য নিয়োগের উপরই গুরুত্ব দিচ্ছে পাকিস্তানের এই জঙ্গি সংগঠন। লস্কর এই পদ্ধতিতে নিয়োগের জন্য কয়েকজনকে দায়িত্ব দিয়েছে। তাদের মধ্যে আরও সাতজনের উপর বিশেষ নজর রয়েছে গোয়েন্দাদের। ইতিমধ্যেই দু’জন, কর্নাটক থেকে ইদ্রিশ ওরফে মুন্না ও কাশ্মীর থেকে আলতাফকে এনআইএ গ্রেপ্তার করেছে। শুক্রবার আলতাফকে ব্যাঙ্কশালে বিশেষ এনআইএ আদালতে তোলা হয়। এদিন অভিযুক্ত জঙ্গির কোনও আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেননি। সরকারি আইনজীবী অভিযুক্তকে সাতদিনের জন্য এনআইএ হেফাজতে রাখার জন্য আবেদন জানান। বিচারক জানান, অভিযুক্তর কোনও আইনজীবী নেই, কিন্তু অভিযুক্তরও সপক্ষে কিছু বলার থাকতে পারে। অভিযুক্ত জঙ্গি আলতাফকে বিচারক ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। সেদিন অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করার পর অভিযুক্তর আইনজীবীর বক্তব্য শুনে পরবর্তী নির্দেশ দেবে আদালত।

[আরও পড়ুন: ভারচুয়াল প্রচারে আপত্তি, কোভিডবিধি মেনেই জনসভা চায় বিজেপি, সওয়াল সর্বদল বৈঠকে]

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তের ক্ষেত্রে আলতাফের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোনটিকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ, মোবাইল থেকেই মিলছে লস্কর জঙ্গিদের কিছু যোগসূত্র। তার কাছ থেকে যে সিমকার্ডগুলি উদ্ধার হয়েছে, সেগুলির অধিকাংশই তার নিজের নামে নয়। একজন তরুণীর সঙ্গে ভিডিও চ্যাটের জন্যও একাধিক সিমকার্ড ব্যবহার করত সে। পাকিস্তানে লস্করের ‘হ্যান্ডলার’এর নির্দেশেই সে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে তরুণ-তরুণীদের যোগ করত। এমনকী, কয়েকটি গ্রুপের অ্যাডমিন পাকিস্তানিও। এই জিহাদি গ্রুপে দেশবিরোধী কথা বলা হত। বিভিন্ন দেশবিরোধী ভিডিও, ছবি পাঠানো হত। এর পিছনে আইএসআইয়ের মদতও যে রয়েছে, সেই বিষয়ে গোয়েন্দারা নিশ্চিত। ওই গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে আলতাফ কথা বলে তাদের মধ্যে থেকেই বেছে নিত বিশেষ কয়েকজন তরুণীকে, যাদের প্রেমের ফাঁদে ফেলত সে। তার জন্য ভিডিও চ্যাটে লাগাতার তাদের সঙ্গে কথা বলত আলতাফ। সারা দেশের বেশ কয়েকজন তরুণীকে এই পদ্ধতিতেই লস্করে যে সে নিয়োগ করেছিল, সেই বিষয়ে গোয়েন্দারা নিশ্চিত। প্রশিক্ষণের জন্য সে পাকিস্তানে গিয়েছিল কি না, গোয়েন্দারা তা জানার চেষ্টা করছেন। তবে কয়েকমাস আগে বাড়ি থেকে পালায় ৩৫ বছরের এই স্কুলশিক্ষক। সম্প্রতি সে বাড়িতে ফিরে আসে। তখনই তার উপর নজর রাখা শুরু করেন গোয়েন্দারা। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, লস্কর ই তৈবার হয়ে স্লিপার সেল তৈরি ও তহবিল বৃদ্ধির কাজও শুরু করে অভিযুক্ত লস্কর জঙ্গি।

গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, এবার সাইবার নাশকতা বা ভার্চুয়াল যুদ্ধ শুরুর ছক কষছে লস্কর-ই-তৈবা। সাইবার নাশকতা করে একের পর এক সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক করার ছক কষছে এই জঙ্গি সংগঠন। এমনকী, ব্যাঙ্কের সাইট হ্যাক করার ছকও রয়েছে তাদের। এই ব্যাপারে আরও তথ্য জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement