shono
Advertisement

মোবাইল ফোন, সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে কীভাবে ভোটার টানা হয় জানেন?

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ভারতীয় সহযোগী ওভলেনো বিজনেস ইনটেলিজেন্সের প্রধান অমরীশ ত্যাগী কী জানাচ্ছেন পড়ুন। The post মোবাইল ফোন, সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে কীভাবে ভোটার টানা হয় জানেন? appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 10:38 AM Mar 23, 2018Updated: 03:44 PM Aug 01, 2019

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্বাচনী সাফল্যের জন্য কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নামে একটি ব্রিটিশ ‘তথ্য বিশ্লেষক’ সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু গত দু’দিন ধরে যে সমস্ত কেচ্ছাকাহিনি ফাঁস হয়েছে, তাতে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু ব্রিটিশ তথ্য বিশ্লেষক সংস্থা কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা।

Advertisement

সাধারণ মানুষের গোপন তথ্য বিনা অনুমতিতে ব্যবহারের দাবিই প্রমাণিত। বিশেষত ফেসবুক গ্রাহকদের তথ্য অবৈধভাবে ব্যবহার করে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শুধু আমেরিকা, ব্রিটেন, কেনিয়া নয়, আঙুল উঠেছে ভারতীয় রাজনৈতিক দলগুলির দিকেও। বিষয়টি কীভাবে হয় তা নিয়ে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। সেই অকথিত কাহিনিই জানিয়েছেন অমরীশ ত্যাগী। গাজিয়াবাদের বাসিন্দা অমরীশ রাজনীতিবিদ কে সি ত্যাগীর পুত্র। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ভারতীয় সহযোগী ওভলেনো বিজনেস ইনটেলিজেন্সের প্রধান। ২০১০ থেকেই বিভিন্ন ভারতীয় নির্বাচনে তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রচারে সাহায্য করতে সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে তাঁদের।

[তথ্য চুরির দায় স্বীকার করলেন মার্ক জুকারবার্গ, আশ্বাস পূর্ণ তদন্তের]

কীভাবে?

“২০১০-এর গোড়ায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ভোট প্রচারের কৌশল আমরা তৈরি করছিলাম। প্রযুক্তিগত নানা বদলের আঁচ সবে তখন আমরা টের পেতে শুরু করেছি। বহু নেতা প্রশ্ন করতেন, মোবাইল বা কম্পিউটার দিয়ে কীভাবে ভোটে জিতব? আমাদের সংস্থার কাজ তো সেটাই,” ব্যাখ্যা ত্যাগীর। সেজন্যই ২০১৬-র মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিশ্বব্যাপী তাবড় তথ্য বিশ্লেষকদের নিয়ে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা যে দল গড়েছিল, তার অংশ ছিলেন ত্যাগী।

কীভাবে তাঁর সংস্থা কাজ করে, গত বছর নিজেই এক সাক্ষাৎকারে ত্যাগী সেটা বর্ণনা করেছিলেন। ত্যাগী বলেন, “আগে গ্রামেগঞ্জে ভোট প্রচারের উপর নির্ভর করত কারা জিতবে। কিন্তু বিশ্বায়নের পর ছবিটা পাল্টে গিয়েছে। আগে বাড়ির লোক কাকে ভোট দেবে, সিদ্ধান্ত নিতেন পরিবারের সবচেয়ে প্রবীণ সদস্য। এখন সেই সিদ্ধান্ত নেয় পরিবারের সবচেয়ে বেশি রোজগেরে সদস্য। বহু ক্ষেত্রেই তারা পরিবারের তরুণ সদস্য, যারা শহরে চাকরি করে। সেখানকার পরিস্থিতি অনুযায়ী তাদের বিচারধারা। গ্রামে ফিরে সেটাই তারা পরিবারের কাছে ব্যাখ্যা করে। এরা প্রত্যেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়। ভারতে যে সংখ্যা প্রায় ৬০ কোটি।”

মোবাইল ফোন কীভাবে ভোটের রং বদলে দিতে পারে? “সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এখন ভাবমূর্তি ও ব্র‌্যান্ডের যুগ। ব্যক্তিগত ব্র‌্যান্ড সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় কারও সম্পর্কে ভাল বা খারাপ ধারণা ছড়িয়ে দেওয়াও সহজ। যা আছে হোয়্যাটসঅ্যাপে, সেটাই অনেকের কাছে বাস্তব। চোখের সামনের দুনিয়াটা সেখানে ঝাপসা হয়ে যায়,” মন্তব্য ত্যাগীর। বক্তৃতা, সভা, পোস্টারের মতো প্রথাগত প্রচারের তুলনায় অনেক দ্রুত জনমত তৈরি করতে পারে মোবাইল ফোন, সোশ্যাল মিডিয়া।

[তথ্য চুরির ডামাডোলে মসুল থেকে নজর ঘোরাচ্ছে সরকার, দাবি রাহুলের]

আগে সারা বছরের প্রচার, জনসংযোগ নির্বাচনের আগে মুহূর্তের ভুলে পণ্ড হয়ে যেতে পারত। এখন সেই সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ। ত্যাগী নিজেই এমন ঘটনার সাক্ষী। তাঁর কথায়, “২০১৫-য় বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগের ঘটনা। হঠাৎ নীতীশজির একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেল। তিনি একজন তান্ত্রিককে জড়িয়ে ধরেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে আমাদের হাতে পুরনো ছবি চলে এল। রাজস্থানে এক জ্যোতিষীকে হাত দেখাচ্ছেন স্মৃতি ইরানি। যিনি স্মৃতিজিকে ভারতের রাষ্ট্রপতি হবেন বলে মন্তব্য করেছিলেন। দ্রুত পরিস্থিতি মোকাবিলা করাটা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।” ত্যাগীর মত, যদি কোনও রাজনীতিবিদ ভোটারদের মনের খবর টের পান, পাশা উলটে দিতে পারেন। আর সে কাজে তথ্য বিশ্লেষণের ভূমিকাই প্রধান।

ট্রাম্পের হয়ে সেই কাজটাই করেছিল ত্যাগীর সংস্থা। ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের মনে ট্রাম্পকে নিয়ে শঙ্কা ছিল। চাকরি, অভিবাসন-সহ একাধিক ইস্যুতে ট্রাম্পের অবস্থান ছিল অত্যন্ত গোঁড়া। আবার পাকিস্তান প্রশ্নে ট্রাম্পের মত ভারতীয়দের বিশেষ পছন্দের। তাই ত্যাগীর পরামর্শমতো ভারতীয়দের নিয়ে সুর নরম করে ফেলেন ট্রাম্প। যত প্রচার এগিয়েছে, ততই ভারতীয়দের বুদ্ধিমত্তা ও অবদান নিয়ে প্রশংসার বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এমনকী, ভার্জিনিয়ার একটি হিন্দু মন্দিরে গিয়ে দেওয়ালি উদযাপন করেন ট্রাম্পের পুত্রবধূ।

কিন্তু কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ব্যবহৃত পদ্ধতি কতটা বৈধ, ন্যায়সঙ্গত? ত্যাগীর জবাব, বিভিন্ন পাবলিক ডোমেনে পাওয়া তথ্যই তাঁরা কাজে লাগান। কোথায় খাচ্ছেন, চুল কাটাচ্ছেন, অ্যাপল স্টোর থেকে কী মিউজিক কিনছেন-একজনের ব্যক্তিগত রুচি, পছন্দ-অপছন্দ জানা এখন কষ্টকর নয়। তারপর সেটা অনুযায়ী বার্তা, বিজ্ঞাপন, তৈরি করা। প্রত্যেকে নিত্য বহু বাণিজ্যিক মেসেজ পায়। তার কোনটার কী উদ্দেশ্য, কতটা গবেষণা, কে খোঁজ রাখে।

আর সেই ফাঁকেই সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য হাসিল করে তাদেরই মগজধোলাই করছে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার মতো রাজনৈতিক তথ্য বিশ্লেষক সংস্থা।

[রান্নার গ্যাসের দাম বেড়ে দু’বছরে সর্বোচ্চ হতে চলেছে]

The post মোবাইল ফোন, সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে কীভাবে ভোটার টানা হয় জানেন? appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার