সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন হাওড়া সদরের বিজেপি সভাপতি। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা নেতাদের অধীনে কাজ করতে আপত্তিও জানিয়েছিলেন। এবার সেই শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে হাওড়া (Howrah) সদরের বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহাকে বহিষ্কার করল দল। বুধবার বিকেলে দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। পুরভোটের আগে এই বহিষ্কার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
১৯ ডিসেম্বর হাওড়ায় পুরভোট। সেই নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিজেপির তরফে একটি কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়। সেই কমিটি নিয়েই আপত্তি ছিল সুরজিৎ সাহার। তাঁর কথায়, “নির্বাচন কমিটি গঠনের জন্য মঙ্গলবার হাওড়া জেলার যে ২৩ জনকে ডাকা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই তৃণমূল থেকে আসা নেতা ছিল। তৃণমূলের বি টিমের অধীনে আমরা কাজ করব না।”
[আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘আমিও ছটের ব্রত করি’, পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে ঠেকুয়া খাওয়ার আবদার মমতার]
নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল তৃণমূল থেকে আসা রথীন চক্রবর্তীকে। তিনি সময় দিতে পারবেন না বলে কো-চেয়ারম্যান করা হয়েছে তৃণমূল থেকে আসা আরেক নেতা সুপ্রীতি চট্টোপাধ্যায়কে। দলের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন সুরজিৎবাবু। বলেন, “আমাকেও কো-চেয়ারম্যান করা হয়েছে। কিন্তু দলের নিয়ম অনুযায়ী জেলায় যে কোনও কমিটির মাথায় থাকেন জেলা সভাপতি। এক্ষেত্রে আমাকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এভাবে দলের তৃণমূলীকরণ মানব না। নবগঠিত নির্বাচন কমিটিকেও মানব না।” তবে শেষ সিদ্ধান্ত দল নেবে বলেই জানিয়েছিলেন তিনি। বহিষ্কারের পরও তিনি বিজেপির সঙ্গে থাকবেন বলে জানিয়েছেন সুরজিৎবাবু।
নির্বাচন কমিটি গঠনের জন্য বৈঠক ডেকেছিল রাজ্য নেতৃত্ব। সেই বৈঠকের শুরুতেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “হাওড়ার বিজেপি নেতৃত্ব তো অরূপ রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। ওঁরা কী করে পুরভোটে জিতবেন?” এর প্রেক্ষিতে সুরজিৎবাবুর চ্যালেঞ্জ, “আমি বলছি, ওঁকে প্রমাণ দিতে হবে। আমার কাছে অরূপ রায়ের ফোন নম্বরও নেই। পারিবারিক সূত্রে সম্পর্ক থাকায়, দেখা হলে কখনও-কখনও অরূপ রায়কে প্রণাম করি। কিন্তু কোনওদিন রাজনীতি নিয়ে কোনও কথা বলিনি। অরূপ রায়ের সঙ্গে আমার যোগসাজস প্রমাণ করতে হবে, না হলে শুভেন্দু অধিকারীকে ক্ষমা চাইতে হবে।”
[আরও পড়ুন: অভিযোগের পাহাড়, হাই কোর্টের নির্দেশে ফের থমকে গেল উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ]
এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নিজের রাজনৈতিক জীবনের কথাও তুলে ধরেন তিনি। সুরজিৎবাবু আরএসএস থেকে উঠে আসা কর্মী। হাওড়া জেলায় ২৮ বছর বিজেপি করেছেন। ২০১৮ সাল থেকে জেলা সভাপতি। জেলায় দ্বিতীয়বারের জন্য সভাপতি হয়েছেন। ২০০২ সালে হাওড়ায় যুব সভাপতি ছিলেন। তার পর রাজ্য কমিটিরও সদস্য ছিলেন। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা নেতাদের কটাক্ষ করে সুরজিৎবাবু বলেন, “বিজেপির রাজনীতি আমাকে তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের কাছে শিখতে হবে না। শুভেন্দু অধিকারীকে নারদায় টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। উনি আগে নিজে ঠিক হন। তার পর বিজেপি নেতাদের মূল্যায়ন করবেন।”