সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: বিপুল পরিমাণে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ঘিরে শোরগোল পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরে (Pandabeswar)। প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র-সহ এক দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার থেকে মিলেছে দেশি কার্বাইন, একে-৪৭ সহ বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ। ধৃত দুষ্কৃতির নাম সুনীল ওরফে শোলে পাসওয়ান। ধৃত ব্যক্তি এলাকার বালি, কয়লা পাচারের অন্যতম কিংপিন নূর আলমের দেহরক্ষী বলে জানা গিয়েছে। আরেক দুষ্কৃতীর খোঁজ করছে পুলিশ। তাকে গ্রেপ্তার করে অস্ত্র কেনাবেচা চক্রের হদিশ পেতে মরিয়া তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে পাণ্ডবেশ্বর থানার রামনগর ৩ নম্বর কোলিয়ারি এলাকায় এই আগ্নেয়াস্ত্রগুলি কেনার জন্য এক দুষ্কৃতী আসে। তখনই গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখানে হানা দেয় পাণ্ডবেশ্বর থানার পুলিশ। উদ্ধার হয় ২টি দেশি কার্বাইন, ১টি দেশি বড় পাইপগান, ১টি দেশি পিস্তল, AK-47, ১ টি সিঙ্গেল ব্যারেল পাইপগান-সহ ৮ রাউন্ড ৭.৬২ এমএম কার্তুজ। এই বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয় সুনীল পাসওয়ানের হেফাজত থেকে। গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। মনজিৎ রাম নামে যে দুষ্কৃতী এই আগ্নেয়াস্ত্র (Arms)কিনতে এসেছিল, পুলিশে দেখে সে পালিয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: বাগদা গণধর্ষণ কাণ্ড: ‘রক্ষকই ভক্ষক হয়ে উঠছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্ষমা চান’, তীব্র নিন্দা কুণাল ঘোষের]
কে এই সুনীল পাসওয়ান? জানা গিয়েছে, পাণ্ডবেশ্বর এলাকার কুখ্যাত কয়লা, বালি মাফিয়া ডালুরবাঁধের বাসিন্দা নূর আলমের দেহরক্ষী ছিল সুনীল ওরফে শোলে পাওয়ান। ২০০২ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এলাকায় কয়লা, বালি কারবারের পাণ্ডবেশ্বরে কিংপিন ছিলেন এই নূর আলম। ২০১৯ সালে নূরে আলম মারা যাওয়ার পর কিছুদিন পলাতক ছিলেন সুনীল পাসওয়ান। এলাকায় কয়লা এবং বালির কারবার চালাতে এই আগ্নেয়াস্ত্রগুলি ব্যবহার করত সুনীল পাওয়ান বলে পুলিশের দাবি।
২০২১ সালেও পাণ্ডবেশ্বর থানা আগ্নেয়াস্ত্র-সমেত গ্রেপ্তার করেছিল এই সুনীল পাসওয়ানকে। শনিবার ধৃতকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে অস্ত্র আইনে তোলা হলে আদালত ধৃতের সাতদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা জানান, “পাণ্ডবেশ্বর থানার বিশেষ পুলিশের দল, গোয়েন্দা পুলিশ ধৃতকে জেরা করে ও তদন্ত করে এই আগ্নেয়াস্ত্র কোথায় থেকে এসেছিল, কোথায় তৈরি হত।
[আরও পড়ুন: পুলিশের সাহায্য নিয়েই উত্তরপ্রদেশে অসহায় বিধবার বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিল গুন্ডারা!]
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা জানান, “পাণ্ডবেশ্বর থানার বিশেষ পুলিশের দল, গোয়েন্দা পুলিশ ধৃতকে জেরা করে ও তদন্ত করে এই আগ্নেয়াস্ত্র কোথায় থেকে এসেছিল, কোথায় তৈরি হতো তা জানার চেষ্টা করা হবে। তদন্ত করে আরও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে এই চক্রের হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করা হবে।”