সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে আগ্রাসী চিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নতুন মহাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে কমিউনিস্ট দেশটি। এবার নয়াদিল্লির উদ্বেগ বাড়িয়ে প্রকাশ্যে এসেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের একটি রিপোর্ট। সেখানে বলা হয়েছে,আফ্রিকার জিবৌতিতে তৈরি নৌঘাঁটিতে দ্রুত যুদ্ধবিমানবাহী রণতরী ও সাবমেরিন মোতায়েন করতে চলেছে চিন। ভারত মহাসাগরে লালফৌজের ‘অতি-তৎপরতা’ নয়াদিল্লির মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠবে বলে মনে করছে মার্কিন সেনাবাহিনী।
চলতি সপ্তাহে মার্কিন কংগ্রেসে ‘হর্ন অফ আফ্রিকা’য় অবস্থিত চিনের জিবৌতি নৌঘাঁটি নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর। সেখানে চিনা নৌঘাঁটির বেশ কয়েকটি উপগ্রহ চিত্রও ছিল। ওই রিপোর্ট মোতাবেক, ইতিমধ্যেই সোমালিয়ার পড়শি দেশটিতে কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে ফেলেছে লালফৌজ। ওই নৌঘাঁটির পরিকাঠামো বলছে, সেখানে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ এবং সাবমেরিন মোতায়েনেও সক্ষম তারা। এর ফলে অদূর ভবিষ্যতে ভারত মহাসাগরে ভারতীয় নৌসেনার গতিবিধি বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। মার্কিন রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘গত মার্চ মাসে চিনা নৌসেনার একটি FUCHI II class পণ্য সরবরাহকারী জাহাজ জিবৌতি বন্দরে নোঙর করে। ফলে বন্দরটি যে তৈরি তা স্পষ্ট।’
[আরও পড়ুন: জাতীয় দলের হারে উচ্ছ্বাস, ইরানে সরকারি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ গেল ‘হিজাব বিদ্রোহী’র]
পূর্ব আফ্রিকার ছোট্ট দেশ জিবৌতি। জনসংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ। ২০১১ সালে সেখানে নৌঘাঁটি তৈরির কাজ শুরু করে চিন। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, কৌশলগত অবস্থানের জন্য ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ জিবৌতি। এডেন উপসাগর থেকে লোহিত সাগর হয়ে সুয়েজ খালমুখী জলপথের বাব-এল-মান্দেব প্রণালীতে অবস্থিত এই নৌঘাঁটি থেকে আফ্রিকা এবং এশিয়ার বিস্তীর্ণ অংশে উপস্থিতি জানান দেওয়ার কাজ করতে পারবে চিনা নৌবাহিনী। ভারত মহাসাগরের পাশাপাশি আরব সাগরের জলসীমায় ঢুকে চাপে ফেলতে পারবে নয়াদিল্লিকে। প্রতিদিন ওই সরু প্রণালী দিয়ে লক্ষ লক্ষ ডলারের তেল ও তেলজাত দ্রব্যের জাহাজ যায়। ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও এই এলাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সোমলিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে বাণিজ্যিক জাহাজগুলিকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এই এলাকার অদূরে টহলদারি চালায় ভারতীয় নৌবাহিনীও। চিনের আধিপত্যবৃদ্ধির ফলে তা ব্যাহত হতে পারে।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, ভারতকে চাপে ফেলতেই ভারত মহাসাগরে এই তৎপরতা চিনের। আর জিবৌতির কৌশলগত অবস্থান ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য উদ্বেগজনক। ভারত-আমেরিকা-জাপান-অস্ট্রেলিয়ার চতুর্দেশীয় অক্ষকে চাপে ফেলতেই চিনের এই পদক্ষেপ। সবমিলিয়ে, যুদ্ধের পরিস্থিতিতে সুয়েজ খালমুখী জলপথে অবরোধ তৈরি করে নয়াদিল্লির উদ্বেগ বাড়াতে পারে চিনের (China) ফৌজ।