কৃষ্ণকুমার দাস: মহানগরের ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণ রুখতে ‘মাইক্রোপ্ল্যানিং স্ট্র্যাটেজি’ বদলে এবার কনটেনমেন্ট জোন ছেড়ে পাড়ার গলি ও স্ট্রিটকে টার্গেট করছে কলকাতা পুরসভা। বিশেষ করে শহরের যে গলি বা রাস্তায় গত কয়েকদিনে অনেক বেশি সংখ্যায় করোনা রোগী পাওয়া গিয়েছে সেখানেই কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়ছেন পুরসভার স্বাস্থ্যকর্তারা। করোনা মোকাবিলায় বিশেষ অভিযানে নেমে প্রথম দফাতেই ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ইলনেস’ (ইলি) রোগীদের খোঁজার কাজ শুরু করছেন পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা। কারণ, যাঁরাই ‘ইলি’, তাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কমে যাওয়ায় COVID-19 ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে।
শহরের ওয়ার্ডভিত্তিক স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, “যাঁদের সর্দি-জ্বর রয়েছে, অর্থাৎ ‘ইলি’ রোগী, তাঁদের পুরসভাই ওষুধ খাইয়ে সুস্থ করবে। প্রয়োজনে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন খাওয়ানো হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই ওষুধ খাওয়ালে করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গুও প্রতিরোধ হবে।” সংক্রমিত নতুন এলাকায় বিশেষ অভিযান শুরু করতে গ্রিন জোনের কর্মীদের নিয়ে আসছে পুরসভা।
[ আরও পড়ুন: অভিনব প্রতিবাদ, ‘করোনা পাশবালিশ’-এ হেলান দিয়ে রাস্তায় শুয়ে বিজেপি নেতা ]
কলকাতা পুরসভার ৪ ও ৯, এই দু’টি বরোতে গত সাতদিনে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। চেতলা, ভবানীপুর, ইকবালপুর, আলিপুর-সহ দক্ষিণের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে ও অভিজাত বহুতলেও করনার হানা দিয়েছে। চেতলা অহীন্দ্র মঞ্চের বৈঠকে পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগের প্রশাসক অতীন ঘোষ এদিন বলেন, “যে রাস্তায় গত ১০ দিন করোনা রোগী নেই, সেখানের চেয়ে যেখানে নতুন রোগীর সন্ধান মিলছে যেখানে বিশেষ অভিযান শুরু হবে। পাড়া ছেড়ে এবার স্ট্রিট, গলিকে ধরেই মাইক্রোপ্ল্যানিং হচ্ছে। প্রথম টার্গেট ‘ইলি’ রোগী।” বৈঠকে ‘ইলি’ নিয়ে ঝুঁকির তথ্য ব্যাখ্যা করেন আইএমএ সভাপতি ডাঃ শান্তনু সেন।
করোনার সঙ্গে এবার ডেঙ্গুকে প্রতিরোধ কর্মসূচি হচ্ছে। এতদিন করোনার জেরে ডেঙ্গুর লার্ভা দেখতে নাগরিকদের বাড়ি ঢুকতে পারছিল না পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে আমফান ও বৃষ্টির জেরে শহরে অনেক বাড়িতে, নিচু জায়গায় জল জমেছে। উদ্বিগ্ন পুরসভা এদিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে ডেঙ্গু নিয়ে নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে। অতীন জানান, “যে বাড়িতে প্রবেশে বাধা আসবে সেখানে ঢুকবেন না স্বাস্থ্যকর্মীরা।” কনটেন্টমেন্ট জোন নিয়ে নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বহুতলে একজন আক্রান্ত হলে সেই টাওয়ারে নিষেধাজ্ঞা। যদি একাধিক টাওয়ারে হয় তবে গোটা হাউজিং কমপ্লেক্সই কনটেনমেন্ট জোন। একক বাড়িতে হলে সেই বাড়িটি শুধু। বস্তিতে হলে বাথরুম, কল নিয়ে ছোট কনটেনমেন্ট জোন।
[ আরও পড়ুন: রাজ্যে ফিরছেন হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক, বেকারত্বের নিরিখে কোথায় দাঁড়িয়ে বাংলা? ]
The post সর্দি-জ্বরেও দাওয়াই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন, করোনার পর ডেঙ্গু ঠেকাতে নয়া নীতি কলকাতা পুরসভার appeared first on Sangbad Pratidin.