shono
Advertisement
Shashanka

বঙ্গ রাজনীতিতে এবার গৌড়াধিপতি শশাঙ্কের এন্ট্রি! বাংলার নিজস্ব 'হিন্দুহৃদয় সম্রাটের' খোঁজে বিজেপি

ইতিহাসে শশাঙ্কের কোনও ছবি না মিললেও সংঘ পরিবার শশাঙ্কের মূর্তি তৈরি করবে।
Published By: Subhajit MandalPosted: 03:48 PM Apr 03, 2025Updated: 06:53 PM Apr 03, 2025

স্টাফ রিপোর্টার: ঘটা করে রামনবমী উদযাপন করে বঙ্গে রাম আবেগ তৈরির চেষ্টা হয়েছে। ছত্রপতি শিবাজীকেও বাঙালি মননে প্রবেশ করানোর চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত বিশেষ সাফল্য আসেনি। বস্তুত বাংলার মনে হিন্দুত্ব জাগাতে ভিনরাজ্যের হিন্দু বীর দিয়ে যে বিশেষ কাজ হচ্ছে না, সেটা সম্ভবত অনুধাবন করতে পেরেছে আরএসএস এবং বঙ্গ বিজেপি। সেজন্যই সন্ধান শুরু হয়েছে বাংলার নিজস্ব হিন্দুহৃদয় সম্রাটের। সেই তল্লাশি অভিযানে প্রথম যে নামটি উঠে এসেছে, সেটি হল গৌড়াধিপতি শশাঙ্ক।

Advertisement

মহারাজ শশাঙ্ককে বাংলার হিন্দু জাগরণের প্রতীক হিসাবে তুলে ধরে প্রচার শুরু করছে বিজেপি। বাংলার সালগণনা অর্থাৎ বঙ্গাব্দ গণনার প্রবর্তক কে? এ নিয়ে দ্বিমত আছে ইতিহাসবিদদের। কেউ কেউ মনে করেন, বঙ্গাব্দের প্রবর্তক ছিলেন শশাঙ্ক। কারও কারও মতে, মোগল সম্রাট আকবর বঙ্গাব্দের প্রবর্তক। কিন্তু গত কয়েক বছরে বিজেপি তথা আরএসএসের একাংশ বাংলায় জোরের সঙ্গে প্রচার করেছে বঙ্গাব্দের সূচনা করেছেন শশাঙ্কই। তাঁর রাজ্যাভিষেকের সময় থেকেই বঙ্গাব্দ গণনা শুরু। সেটা প্রমাণ করতে গত কয়েক বছর ধরে কল্পিত ছবি দিয়ে ক্যালেন্ডার প্রকাশ করছে সংঘ।

নতুন বছরের আগে গত কয়েক বছর ধরে বঙ্গীয় সনাতনী সংস্কৃতি পরিষদের ব্যানারে শশাঙ্কের সম্মানে কলকাতায় একটি শোভাযাত্রাও করা হয়। এ বছরও সেটা করা হবে। বঙ্গীয় সনাতনী সংস্কৃতির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা প্রবীর ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, গৌড়াধিপতি শশাঙ্ক সম্পর্কে বঙ্গ সমাজে সচেতনতা জাগাতে তাঁরা গত কয়েক বছর ধরে কাজ করছেন। এমনিতে ইতিহাসবিদরা শশাঙ্কের কোনও মূর্তি বা ছবি এখনও খুঁজে পাননি। তবে ইতিহাসবিদ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রমেশচন্দ্র মজুমদারের বর্ণনা শুনে বছর চারেক আগে শশাঙ্কের একটি ছবি বানানো হয়। সেই ছবিই এবার ক্যালেন্ডারে ব্যবহার করা হচ্ছে। এবার অবশ্য ক্যালেন্ডারে সীমাবদ্ধ থাকা হবে না। আগামী ১৫ এপ্রিল অর্থাৎ পয়লা বৈশাখ ঘটা করে এবারও শশাঙ্ককে নিয়ে শোভাযাত্রা করা হবে। তবে তাঁরও আগে যেটা করা হবে সেটা হল শশাঙ্কের মূর্তি প্রতিষ্ঠা।

সূত্রের দাবি, আগামী ৮ এপ্রিল সল্টলেকের ইজেডসিসিতে গৌড়াধিপতির একটি মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হবে। শশাঙ্কের কোনও ছবি ইতিহাসে না মিললেও ইতিহাসবিদদের বর্ণনা অনুযায়ী ওই মূর্তি ফুটিয়ে তোলা হবে। তারপর শশাঙ্কের বীর গাঁথা সোশাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু হবে। বিভিন্ন সোশাল মিডিয়া গ্রুপে একপ্রকার শশাঙ্ক ভজনা শুরু হবে। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বগুলির কাহিনি নিয়ে ক্যালেন্ডারের ১২টি পাতার জন্য ১২টি ছবি তৈরি করা হয়েছে। সেসব প্রচার করা হবে। পয়লা বৈশাখ ন্যাশনাল মিউজিয়ামে বৈশাখী অনুষ্ঠান হবে। সবটারই দায়িত্বে রয়েছে সংঘের সাংস্কৃতিক শাখা সংস্কার ভারতী। 

প্রশ্ন হল, হিন্দুত্বের আইকন হিসাবে শশাঙ্কই কেন? বিজেপি এবং সংঘের সূত্র বলছে, একে তো শশাঙ্ক বঙ্গাব্দের প্রবর্তক। শশাঙ্ক ঘোষিত ভাবে শিব উপাসক ছিলেন। তাছাড়া গোটা ভারতে বৌদ্ধ রাজাদের আধিপত্যের মধ্যে হিন্দু রাজা হিসাবে মাথা তুলে নিজের সাম্রাজ্য রক্ষা করেছিলেন। তাছাড়া শশাঙ্ক পরবর্তী সময়ে আর কোনও বাঙালি হিন্দু রাজা সেভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি। পাল রাজারা বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। আর সেন বঙ্গ দক্ষিণ ভারতীয়। সে অর্থে খাঁটি বাঙালি হিন্দুত্বের আইকন খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। সেকারণেই খুঁজে পেতে শশাঙ্ককে বঙ্গ রাজনীতিতে আনার চেষ্টা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ছত্রপতি শিবাজীকেও বাঙালি মননে প্রবেশ করানোর চেষ্টা হয়েছে।
  • আগামী ৮ এপ্রিল সল্টলেকের ইজেডসিসিতে গৌড়াধিপতির একটি মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হবে।
  • শশাঙ্কের কোনও ছবি ইতিহাসে না মিললেও ইতিহাসবিদদের বর্ণনা অনুযায়ী ওই মূর্তি ফুটিয়ে তোলা হবে।
Advertisement