সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি শুধু ভারতের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য হিসাবেই পরিচিত ছিলেন না। বিরাট কোহলির (Virat Kohli) যুগে জাতীয় দলের হেড কোচ হিসাবেও আলাদা পরিচিতি গড়ে তুলেছিলেন। ওয়াসিম আক্রম (Wasim Akram), ওয়াকার ইউনিস (Waqar Yunis), শোয়েব আখতার (Shoaib Akhtar)। কিংবা মুথাইয়া মুরলীধরন (Muttiah Muralitharan), জেমস অ্যান্ডারসন (James Anderson), ডেল স্টেইন (Dale Steyn)। তৎকালীন সময় বিশ্বের এহেন নামজাদা বোলারদের খুব কাছ থেকে দেখেছেন রবি শাস্ত্রী। খেলেছেন কপিল দেবের মতো লেজেন্ডের সঙ্গে। যদিও এহেন শাস্ত্রী এহেন অকপটে জানিয়ে দিলেন যে মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)-জশপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah)-মহম্মদ সিরাজকে (Mohammed Siraj) মোকাবিলা করা একেবারেই অসম্ভব। কারণ শুধু গনগনে পেস নয়। চলতি বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়ার (ICC ODI World Cup 2023) তিন জোরে বোলার উইকেটের দুই দিকে সমানভাবে সুইং করানোর পাশাপাশি সঠিক লাইন-লেন্থ বজায় রেখে বোলিং করে বিপক্ষের ব্যাটিং লাইনআপকে বুঝে নিচ্ছেন। আর তাই ভারতের এই বোলিং অ্যাটাককে গত ৫০ বছরে সেরা আক্রমণ বলে মন্তব্য করলেন শাস্ত্রী।
একটি অনুষ্ঠানে শাস্ত্রী বলেছেন, “যে যাই বলুক, আমার মতে এটাই গত ৫০ বছরে ভারতের সেরা বোলিং অ্যাটাক। বিশেষ করে বিশ্বকাপের নিরিখে তো এটাই সেরা বোলিং আক্রমণ বটেই। বুমরাহের কাছে গতির সঙ্গে আছে ঘাতক সুইং, শামির সিম পজিশন অনবদ্য। সঙ্গে যোগ হয়েছে লাইন-লেন্থ। সিরাজ আবার আগুনে পেসে বিপক্ষ ব্যাটারদের মনে ভয় ধরাচ্ছে। বিপক্ষের ব্যাটিং ভয়ে কাঁপছে!।”
তিন জোরে বোলারের সঙ্গে ফর্মে রয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা (Ravindra Jadeja) ও কুলদীপ যাদব (Kuldeep Yadav)। অবশ্য অভিজ্ঞ রবিচন্দ্রন অশ্বিনকেও বাদ দেওয়ার উপায় নেই। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলার পর অশ্বিন আর সুযোগ পাচ্ছেন না। তবে এমন ম্যাচ উইনার স্পিনারদের নিয়ে শাস্ত্রীর ব্যাখ্যা, “তিনজন জোরে বোলারের কাছ থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় নেই। তাদের পর বল চলে যায় জাদেজা ও কুলদীপের হাতে। ভারতের পিচে দুজন কতবড় ম্যাচ উইনার, সেটা আমার বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়া সাজঘরে বসে আছে অশ্বিনের মতো অভিজ্ঞ স্পিনার। এই ভারত কোনও ভুল না করলে, বিশ্বকাপ জিতবেই।”
[আরও পড়ুন: ওয়ানডেতে একবছরে সবচেয়ে বেশি ছক্কা, ডে’ভিলিয়ার্সকে টপকে নজির রোহিতের]
তিন জোরে বোলারের সঙ্গে দুই স্পিনার কতটা সফল, সেটা পরিসংখ্যান দেখলেই সেটা স্পষ্ট হয়ে যাবে। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচের আগে ভারতের বোলারদের পারফরম্যান্সের দিকে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।
১। মাত্র ৪ ম্যাচেই শামি নিয়ে ফেলেছেন ১৬ উইকেট। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন ‘সহেসপুর এক্সপ্রেস’।
২। বুমরাহ এখনও পর্যন্ত ৮ ম্যাচে নিয়েছেন ১৫ উইকেট। ৩৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সেরা পারফরম্যান্স আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে।
৩। গত কয়েক ম্যাচে ছন্দ না খুঁজে পেলেও, সিরাজ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ফর্মে ফিরেছেন। নিয়েছেন ৮ ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে এসেছে ১০ উইকেট। সেরা পারফরম্যান্স শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেই। সেই ম্যাচে ১৬ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
৪। ফর্মে রয়েছে জাদেজাও। ৮ ম্যাচে তাঁর দখলে এসেছে ১৪ উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে নিয়েছিলেন ৩৩ রানে ৫ উইকেট।
৫। পিছিয়ে নেই কুলদীপ। ৮ ম্যাচে তাঁর মোট উইকেট ১২। সেরা পারফরম্যান্স প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে। গত ম্যাচে মাত্র ৭ রানে ২ উইকেট পেয়েছিলেন বাঁহাতি স্পিনার।
আর তাই এই পাঁচ বোলারের পারফরম্যান্সের জন্য ভারতের বোলিং বিভাগকে দরাজ সার্টিফিকেট দিচ্ছেন শাস্ত্রী। গলা উঁচিয়ে বলে দিচ্ছেন যে, এটাই গত ৫০ বছরে ভারতের সেরা বোলিং অ্যাটাক।