সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে কপিল দেবের (Kapil Dev) সেই ক্যাচটা ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে আছে। সেই ফাইনালে মদন লালের বলে ভিভ রিচার্ডসের (Sir Vivian Richards) ক্যাচ দৌড়ে ধরেছিলেন ভারত অধিনায়ক। ক্যাচটি ধরার সময়ে এক মুহূর্তের জন্যও বল থেকে নজর সরাননি কপিল। রিচার্ডসের ওই ক্যাচ ধরে কপিল ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন। প্রবল শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে তিরাশিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। এবারের কাপযুদ্ধের ফাইনালে ঠিক সেভাবেই রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) ক্যাচ প্রায় একইরকম ভাবে দৌড়ে ধরেন ট্রাভিস হেড (Travis Head)। আর সেটাই হয়ে যায় ম্যাচের অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট। টিম ইন্ডিয়াকে (Team India) হারিয়ে ষষ্ঠবার বিশ্বকাপ জিতল অস্ট্রেলিয়া (Australia)।
ভারতের ইনিংসের তখন ৯.৪ ওভারের খেলা চলছে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের (Glenn Maxwell) একটি নির্বিষ ডেলিভারিকে তুলে মারতে গেলে মিস টাইম করেন রোহিত। বল আকাশের দিকে উঠতেই কভারের দিকে দৌড়ে যান হেড। এবং বল তাঁর নাগালের বাইরে থাকলেও সামনের দিকে ডাইভ মেরে ক্যাচ ধরে নেন। রোহিতকে প্যাভিলিয়নে ফেরত যেতে হয়। আর ম্যাচের মোড় সেখান থেকেই ঘুরে যায়।
[আরও পড়ুন: বিশ্বজয়ী হওয়ার স্বপ্ন অধরা, পর্দার আড়ালেই থেকে গেলেন রাহুল দ্রাবিড়]
পরে ম্যাচের শেষে ট্রাভি হেড বলেন, “আমার মতে রোহিতের ক্যাচ নেওয়াই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। সেইজন্য আমার মনে হয় এই মুহূর্তে রোহিতই হল ‘বিশ্বের সবচেয়ে হতভাগ্য মানুষ’। সেইজন্য আমরা ফিল্ডিংয়ে প্রচুর পরিশ্রম করেছি। সেই ফল হাতেনাতে পেলাম।” সেরা ক্যাচ কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তবে ট্রাভিস হেডের ক্যাচটা ম্যাচের উপরে যে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল, সেটা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
এদিকে ভারতীয় দল ২৪০ রানে গুটিয়ে গেলেও, রোহিতদের কাছে ম্যাচ জেতার সুযোগ চলে এসেছিল। জশপ্রীত বুমরাহ ও মহম্মদ শামির দাপটে মাত্র ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারায় অজিরা। তবে সেই সময় ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন ট্রাভিস হেড ও মার্নাস লাবুশানে। দুজন চতুর্থ উইকেটে ১৯২ রান যোগ করেন। আগ্রাসী মেজাজেই মহম্মদ শামি-জশপ্রীত বুমরাহ-মহম্মদ সিরাজদের বুঝে নিলেন বাঁহাতি ওপেনার। ১২০ বলে ১৩৭ করেন ট্রাভিস হেড। মারলেন ১৫টি চার ও ৪টি ছক্কা।
এবং এমন ইনিংস খেলার সুবাদে অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও রিকি পন্টিংয়ের তালিকায় নাম লেখালেন ট্রাভিস হেড। এর আগে ২০০৩ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে ১২১ বলে ১৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন পন্টিং। এর পর ২০০৭ সালের কাপযুদ্ধের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১০৪ বলে ১৪৯ রান করেছিলেন গিলক্রিস্ট। এবার সেই তালিকায় জুড়ে গেল ট্রাভিস হেডের নাম।