সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চ্যাম্পিয়নরা নিজের সেরা পারফরম্যান্স তুলে ধরার জন্য বেছে নেন সেরা মঞ্চ। বিরাট কোহলি (Virat Kohli) ব্যাটিং দেখে কলমচিরা এভাবেই হয়তো লেখাটা শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেটা আর হয়েছিল কোথায়! আসমুদ্র হিমাচলের সামনে ঘটেছিল স্বপ্নভঙ্গ! ৯৪ বলে ৮৮ রানে ফিরেছিলেন টিম ইন্ডিয়ার (Team India) মহাতারকা। তাঁর সেই ইনিংস তাঁর ইনিংস ১১টি চার দিয়ে সাজানো ছিল। শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) বিরুদ্ধে বিরাটের এমন প্রস্থান ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের ভিভিআইপি বক্সে বসে দেখেছিলেন শচীন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar)।
তবে গত ম্যাচ অতীত। ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens) দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) বিরুদ্ধে মহারণের আগে বিরাট যেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। একদিনের ক্রিকেটে ৪৯তম শতরান করে তাঁর ‘আইকন’-কে ছুঁয়ে ফেলতে মরিয়া হয়ে আছেন। শনিবার দলের ঐচ্ছিক অনুশীলনেও ‘কিং কোহলি’-কে (King Kohli) বিভিন্ন মুডে দেখা গেল। কখনও তিনি সতীর্থদের সঙ্গে হাসছেন। আবার কখনও মাঠ জুড়ে হেঁটে বেড়াচ্ছেন রাজার মতো। সেই বিরাটের হাতে ব্যাট উঠতেই একেবারে অন্য মেজাজে। চোখ-মুখ একেবারে সিরিয়াস। একদিকে ৩৫তম (Virat Kohli’s 35th Birthday) জন্মদিন। অন্যদিকে ৪৯তম শতরান করার হাতছানি। তাহলে কি বিরাট চাপে আছেন?
চাপ থাকুক কিংবা না থাকুক, দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড় কিন্তু সেটা মনে করেন না। বরং বলছেন, “আমার মতে তো বিরাট একেবারে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। আর সেটাই তো হওয়া উচিত। এবার আমাদের ব্যাটাররা দারুণ পারফরম্যান্স করছে। বিরাট দারুণ ছন্দে রয়েছে। তাই বাড়তি চাপ নেওয়ার কোনও কারণ নেই। বিরাট নিজেও সেই ভাবে ব্যাপারটা দেখে না।”
[আরও পড়ুন: হার্দিকের পরিবর্তে আমাদের ষষ্ঠ বোলার বিরাট! মজার ছলে বললেন দ্রাবিড়]
কিছুক্ষণ থেমে দ্রাবিড় ফের যোগ করেন, “বিরাট খুবই পেশাদার। সবসময় কঠিন পরিশ্রমে বিশ্বাস করে। তাই ওর কাছে ৪৯ ও ৫০তম শতরান একই ব্যাপার। তাই জন্মদিন নিয়ে একেবারেই ভাবছে না। বরং আরও একবার বিশ্বকাপ জেতাই বিরাটের একমাত্র।”
তবে ৪৯তম শতরান না করতে পারলেও, বিরাট তাঁর ‘আইকন’-এর অন্য একটি রেকর্ড নিজের নামে করে ফেলেছেন। শচীন তাঁর দীর্ঘ ২৪ বছরের কেরিয়ারে কোনও এক বছরে মোট ৭বার ১০০০ রান করেছিলেন। ১৯৯৪, ১৯৯৬, ১৯৯৭, ১৯৯৮, ২০০০, ২০০৩ ও ২০০৭ সালে এই কীর্তি গড়েছিলেন। বিরাট এবার সেই রেকর্ডেও নিজের নাম লিখিয়ে নিলেন। এই নিয়ে আটবার কোনও এক বছরে ৮বার ১০০০ রান করার নজির গড়েছিলেন তিনি। ২০১১, ২০১২, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২৩ সালে এই কীর্তি গড়ে শচীনকে টপকে যান বিরাট।
সুনীল গাভাসকরের সময় ক্রিকেট কোচেরা বলতেন তাঁর খেলা দেখে শিখতে। শচীন তেন্ডুলকরের সময় তাঁরা বলতেন মুম্বইকরের খেলা উপভোগ করতে। এখন কোচেরা বলেন বিরাট কোহলির খেলা দেখ আর শুধু হাততালি দাও, কারণ অন্য গ্রহের মানুষের খেলা কখনও অনুকরণ করা সম্ভব নয়। তবে কি বিরাটই ভারতের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার? একদিনের ক্রিকেটে ‘মাস্টার ব্লাস্টার’-এর ৪৯তম শতরানে এখনও তিনি ভাগ বসাতে পারেননি। তবে তিনি যে ফর্মে আছেন, তাতে বিরাটের এই রেকর্ড গড়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। তা হলে কি শুধু সংখ্যার বিচারে বিরাটকেই কি সর্বকালের সেরা ব্যাটার বলে দেওয়া যায়?