সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একটা মারাত্মক চোট মানুষের জীবনকে শেষ করে দেয়। কেরিয়ারের বারোটা বেজে যেতে পারে। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে চোটের জন্য মাঠের বাইরে থাকা যেন শাপে বর হয়ে দাঁড়ায়। কেএল রাহুলের (KL Rahul) ক্ষেত্রে তো সেটাই হল। ২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন টিম ইন্ডিয়া (Team India) কাঁপছে। ২০০ রান আটকাতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার (Australia) পেস বোলিং অ্যাটাক তখন বাইশ গজে আগুন ঝরাচ্ছে। ঠিক সেই সময় বিরাট কোহলির (Virat Kohli) সঙ্গে ক্রিজে লড়াই শুরু করলেন কেএল রাহুল। সরি, ‘কেএল রাহুল টু’। শেষ পর্যন্ত বিরাট ১১৬ বলে ৮৫ রানে থামলেও, কেএল রাহুল ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। ১১৫ বলে ৯৭ রানে অপরাজিত থাকেন। তিনি মারলেন ৮টি চার ও ২টি ছক্কা। স্ট্রাইক রেট ৮৪.৩৪। তাঁর এই ইনিংসের জন্য চলতি বিশ্বকাপে (ICC ODI World Cup 2023) জয় দিয়ে অভিযান শুরু করল ‘মেন ইন ব্লু’ ব্রিগেড।
কিন্তু কোন ছকে অজি বোলারদের তিনি বুঝে নিয়েছিলেন? ম্যাচের সেরার পুরষ্কার নিতে এসে কেএল রাহুল কিন্তু তাঁর সিনিয়র পার্টনারকেই সার্টিফিকেট দিলেন। কেএল রাহুল বলেন, “সত্যি বলতে সেই সময় দুজনেই চাপে ছিলাম। ক্রিজে আসার কিছুক্ষণ পরেই বিরাট আমাকে টেস্ট ক্রিকেটের মতো ব্যাট করার পরামর্শ দিয়েছিল। কারণ সেই সময় অজি পেসাররা খুব ভালো বোলিং করছিল। তবে ইনিংসের মাঝ থেকে শেষ পর্যন্ত শিশির বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। সেটা আমাদের পক্ষেই গিয়েছিল।”
[আরও পড়ুন: ICC ODI World Cup 2023: স্পিনারদের দাপটের পর বিরাট-রাহুলের শাসন, অজি বধে বিশ্বকাপের বোধন ভারতের]
ফিট হয়ে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কামব্যাক করেছিলেন। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে ১০৬ বলে ১১১ রানে অপরাজিত থেকে নীরবে দিয়েছিলেন স্টেটমেন্ট। এর পর থেকে নিন্দুকদের প্রতি ম্যাচেই জবাব দিচ্ছেন। শেষ ৯ ম্যাচের ৭ ইনিংসে তাঁর রান ১১১*, ৩৯, ১৯, ৫৮*, ৫২, ২৬। আর এবার অজিদের বিরুদ্ধে ম্যাচে জেতানো ৯৭ রান!
কিপার হিসাবে উন্নতি করেছেন। চেন্নাইয়ের মারাত্মক গরমে কিপিং করার পর, এবার দায়িত্ব নিয়ে অজিদের বোলিংয়ের মহড়া নিলেন তিনি। ৫০ ওভার কিপিং করার পর ৪১.২ ওভার পর্যন্ত ক্রিজে ব্যাট করলেন। চেন্নাইয়ের তীব্র গরমকে উপেক্ষা করে এই অলরাউন্ড পারফরম্যান্স মনে রাখার মতো।
তবে এত দ্রুত তাঁকে ব্যাট করতে যেতে হবে, সেটা স্বপ্নেও ভাবেননি। বলছিলেন, “৫০ ওভার কিপিং করার পর ড্রেসিংরুমে গিয়ে স্নান করে সবে বসেছি, দেখি চোখের সামনে দিয়ে ৩ উইকেট চলে গেল! অগত্যা মাঠে ছুটতে হল। এর পর বিরাট যেমন নির্দেশ দিচ্ছিল সেভাবে ব্যাট করে গিয়েছি। এই উইকেটে ব্যাট করা খুব সহজ ছিল না। তবে একেবারে যে ব্যাট করা যায় না, তেমনটাও কিন্তু নয়। মাথা ঠান্ডা রেখে ব্যাট করতে পেরেছি বলেই জয় এল।”
প্রথমে দুরন্ত বোলিং। পরে চাপের মুখেও লড়াকু ব্যাটিং। জয় দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করে জোরাল ইঙ্গিত দিল রোহিত শর্মার দল। ১১ অক্টোবর প্রতিপক্ষ রশিদ খানের আফগানিস্তান। জশ হ্যাজেলউড-প্যাট কামিন্সরাই পারল না। আফগানরাও আত্মবিশ্বাসে ভরা এই ভারতের কাছে উড়ে যাবে। সেটা স্কুল পড়ুয়াও জানে।