সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিনের ক্রিকেটে ৪৮তম শতরান। আর দুটি শতরান করলেই আইকন’ শচীন তেন্ডুলকরকে (Sachin Tendulkar) ছাপিয়ে যাবেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। চলতি বিশ্বকাপে (ICC ODI World Cup 2023) ফর্মের তুঙ্গে রয়েছেন টিম ইন্ডিয়ার (Team India) মহাতারকা। অস্ট্রেলিয়ার (Australia) বিরুদ্ধে প্রবল চাপের মুখে করেছিলেন ৮৫ রান। আফগানদের (Afghanistan) বিরুদ্ধে ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। পাকিস্তানের (Pakistan) বিরুদ্ধে সেই রাতে ১৬ রানে থামতে হয়েছিল বিরাটকে। তবে এবার তিনি থামলেন না। বরং ৪৮তম শতরান করে বাংলাদেশকেই (Bangladesh) থামিয়ে দিলেন ‘চেজ মাস্টার’। ৯৭ বলে ১০৩ রান করলেন বিরাট। মারলেন ৬টি চার ও ৪টি ছক্কা। তবে এমন ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে সাত উইকেটে হারিয়ে দেওয়ার পরেও সতীর্থ রবীন্দ্র জাদেজার (Ravindra Jadeja) কাছে ক্ষমা চাইলেন ‘কিং কোহলি’ (King Kohli)।
এদিন বল হাতে ৩৮ রানে ২ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি পয়েন্টে দাঁড়িয়ে উড়ে ক্যাচ ধরেন ‘স্যর জাদেজা’। এমন পারফরম্যান্সের জন্য অনেকেই ধরে নিয়েছিল যে, তাঁর হাতেই উঠবে ম্যাচের সেরার পুরষ্কার। তবে অপরাজিত শতরানে সব লাইমলাইট কেড়ে নিলেন বিরাট। আর তাই পুরষ্কার নিতে এসেই বিরাট বলে দেন, “মনে হচ্ছে আমি যেন জাদেজার পুরষ্কার ‘চুরি’ করলাম! ওর জন্য সত্যি খুব খারাপ লাগছে।”
[আরও পড়ুন: ওয়ানডে-তে বিরাটের ৪৮তম শতরান! পঞ্চমীর রাতে বাংলাদেশকে হারিয়ে শীর্ষে ভারত]
একটা সময় জয়ের জন্যে ২০ রান দরকার ছিল, বিরাটের শতরানের জন্যেও ২০ রান। ভারতের জয় নিয়ে কোনও সন্দেহ ছিল না। কিন্তু তাঁর ৪৮তম শতরান কি পূর্ণ হবে? এটাই প্রশ্ন ছিল সবার মনে প্রশ্ন। এর মধ্যে তাঁর শতরান রুখে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন নাসুম আহমেদ। তিনি প্রথম বলটিই ওয়াইড করেন। কিন্তু বিরাট সরে আসায় আম্পায়ার ওয়াইড দেননি। তখন হিসাব বলছিল, জিততে দরকার ১ রান। বিরাটের শতরানে দরকার ৩ রান। শেষ পর্যন্ত নাসুমকে ছক্কা মেরে দলকেও জেতালেন, নিজের শতরানও করলেন ‘কিং কোহলি’।
এর পর তিনি বলেন, “চলতি বিশ্বকাপে এর আগে দুটি অর্ধ শতরান করেছিলাম। তবে আমার নজর ছিল শতরানের দিকে। আসলে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রাখতে চেয়েছিলাম। তাই প্রথম বল থেকেই চালাতে শুরু করেছিলাম। এই মাঠের পিচ ব্যাটিংয়ের জন্য আদর্শ। শট খেলতে সুবিধা হচ্ছিল। তাছাড়া সবসময় সমর্থকদের পাশে পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে দিনটা ভালোই গেল। তবে এখনও অনেক ম্যাচ বাকি। আমাদের এভাবেই একজোট হয়ে এগিয়ে যেতে হবে।”
পুণের এই স্টেডিয়ামে বিরাটের কাছে খুবই পয়া। ২০১৩ থেকে ২০২৩, এখনও পর্যন্ত এখানে ৮টি ম্যাচে বিরাটের ব্যাট থেকে ৫৫১ রান এসেছে। গড় ৭৮.৭১। স্ট্রাইক রেট ৯৪.৩৪। সঙ্গে রয়েছে ৩টি শততান ও ৩টি অর্ধ শতরান। অন্যদিকে ২০১১ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত বিশ্বকাপে খেলা ৩০টি ম্যাচে তৃতীয় শতরান করলেন বিরাট। তবে রান তাড়া করতে এটাই তাঁর কাপ যুদ্ধে প্রথম শতরান। এর আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে অপরাজিত ১০০ ও ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ১০৭ রান।
[আরও পড়ুন: শুভমান চার মারতেই আনন্দে হাততালি দিলেন সারা! ভাইরাল ভিডিও ঘিরে শোরগোল]
একদিনের ক্রিকেটে ২৮৫টি ম্যাচে তাঁর রান ১৩৩৪২। গড় ৫৮। স্ট্রাইক রেট ৯৩.৭১। সঙ্গে রয়েছে ৪৮টি শতরান ও ৬৮টি অর্ধ শতরান। সর্বোচ্চ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৮৩ রান। তবে রান চেজ করতে নেমে বিরাট আরও ভয়ংকর।
এবং কেন তাঁকে ‘চেজ মাস্টার’ বলা হয়ে থাকে সেটাও ফের স্পষ্ট করে দিলেন বিরাট। ১৫৮টি ম্যাচের ১৫১টি ইনিংসে বিরাটের ব্যাট থেকে এসেছে ৭৬৯৯ রান। গড় ৬৫.২৪। স্ট্রাইক রেট ৯৩.৬৭। সঙ্গে রয়েছে ২৭টি শতরান ও ৩৯টি অর্ধ শতরান। সর্বোচ্চ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৮৩ রান।