সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাজার কাজের ব্যস্ততা, রাজস্থান, তেলেঙ্গানার নির্বাচনী প্রচারের চাপ, সেসবের মাঝেই সময় বের করেছিলেন। ছুটে গিয়েছিলেন আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে। মনে হয়তো সুপ্ত আশা ছিল, এবার রোহিতদের জয়চ্ছ্বাসের শরিক হতে পারবেন তিনি। কিন্তু নাহ! এবারেও হল না। তিনি এলেন, তিনি দেখলেন, কিন্তু তাঁর সামনে বিশ্বজয় করা হল না রোহিতদের।
কথা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদির। গত পৌনে ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বহু খেলায় বহু সাফল্য দেখেছেন তিনি। কিন্তু ক্রিকেট, তাতে তো সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে পারল না ভারত। ইন্দিরা গান্ধী, মনোমোহন সিংরা যে সাফল্যের স্বাদ পেয়েছিলেন, সেই স্বাদ এবারেও অধরা রয়ে গেল প্রধানমন্ত্রীর। ক্রিকেট বিশ্বকাপ হাতে কপিল দেবের সঙ্গে ছবি রয়েছে ইন্দিরা গান্ধীর, মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে একফ্রেমে দেখা গিয়েছে মনমোহন সিংকেও। পাশের ফ্রেমে হয়তো রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) এবং নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) ছবি রবিবারই বসিয়ে দেওয়া যেত, কিন্তু অদৃষ্টের পরিহাসে সেটা এবারও হল না।
[আরও পড়ুন: শিয়রে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন, শহর থেকে প্যান্ডেলের বাঁশ খোলার ডেডলাইন দিল পুরসভা]
শেষবার ২০১৩ সালে ভারত জিতেছিল আইসিসি (ICC) ট্রফি। তখনও প্রধানমন্ত্রী পদে মনমোহন সিং। ২০১৪ টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল ভারত। জয় আসেনি। তখনও অবশ্য মোদি প্রধানমন্ত্রী হননি। মোদি প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর আটবার আইসিসি ইভেন্টের নক-আউটে খেলেছে ভারত। ২০১৫ বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল, ২০১৬ টি-২০ বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল, ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনাল, ২০১৯ বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল, ২০২১ টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল, ২০২১ এবং ২০২৩ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল এবং ২০২৩ বিশ্বকাপ ফাইনাল। প্রতিবারই কোথাও না কোথাও খামতি থেকে গিয়েছে। শেষবেলায় গিয়ে ট্রফি জেতা হয়নি।
[আরও পড়ুন: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়ান্ট স্ক্রিনে বিশ্বকাপ, মদ-মাদক-বাজি-বহিরাগতে নিষেধাজ্ঞা]
পরপর এই ব্যর্থতার দায় যেমন দলের উপর এসে পড়েছে, তেমন কিন্তু বিদ্ধ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকেও। সোশাল মিডিয়ায় তাঁর বিরোধীরা, তাঁর নিন্দুকেরা বারবার লিখেছেন, মোদির দুর্ভাগ্যই ঝকঝকে ভারতীয় দল আর আইসিসি ট্রফির মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী হয়তো ভেবেছিলেন রবিবার তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরবে। তিনিও বিশ্বজয়ী প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে একফ্রেমে নাম লেখাতে পারবেন। কিন্তু বিধির বিধানে হয়তো অন্য কথা লেখা ছিল। এবারেও বিশ্বজয় হল না ভারতের। বিশ্বজয়ের স্বাদ পেলেন না মোদিও। তবুও দিনের শেষে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিজের কর্তব্য পালন করেছেন। মহার্ঘ্য সেই ট্রফি তুলে দিয়েছেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের হাতে। ব্যর্থতার জন্য ভারতের কাউকে দোষারোপ করেননি, কাউকে বিঁধে হতাশাও প্রকাশ করেননি। বরং সোশাল মিডিয়ায় এসে দলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। বলেছেন, “প্রিয় ভারতীয় দল, তোমাদের চেষ্টা, তোমাদের একাগ্রতা ভারতকে গর্বিত করেছে। আমরা তোমাদের পাশে আছি।”