বাংলাদেশ: ২০৪ (মহম্মদুল্লাহ ৫৬, লিটন ৪৫)
পাকিস্তান: ২০৫-৩ (ফখর জামান ৮১, আবদুল্লাহ শফিক ৬৮)
পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অসহায় আত্মসমর্পণের আদর্শ উদাহরণ যদি দিতে হয় তাহলে মঙ্গল সন্ধ্যায় ইডেন গার্ডেন্স যে একপেশে ম্যাচের সাক্ষী থাকল, সেটা থাকবে উপরের সারিতে। চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত আশানুরূপ কিছু করেনি ঠিকই, কিন্তু মঙ্গলবারের বড় ম্যাচে অন্তত শাকিবরা জ্বলে উঠবেন সেই আশায় ওপার বাংলার বহু ক্রিকেটপ্রেমীই বুক বেঁধেছিলেন। শহর কলকাতার কয়েক হাজার দর্শক এদিন গলা ফাটিয়েছেন বাংলার টাইগারদের হয়েই। ওপার বাংলা থেকেও এসেছিলেন বহু মানুষ। কিন্তু হায়, কারও সমর্থন, কারও প্রাণ উজাড় করা ভালোবাসা, গলা ফাটানো কোনও কিছুই কাজে লাগল না। শাকিবরা (Shakib Al Hasan) যে তিমিরে ছিলেন, সেই তিমিরেই রয়ে গেলেন। বলা ভালো ডুবে গেলেন আরও অতল অন্ধকারে। পাকিস্তান শুধু জিতল তাই নয়, সেই সঙ্গে অনেকটা শুধরে নিলেন নিজেদের নেট রান রেটও।
[আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়া সরে দাঁড়াতেই কেল্লাফতে, চূড়ান্ত হয়ে গেল ২০৩৪ ফুটবল বিশ্বকাপের ভেন্যু!]
এমনিতে পাকিস্তানের সেমিফাইনালে (ICC World Cup 2023) খেলার অঙ্ক দুরূহ। যে দূরতম সম্ভাবনা আছে, সেটাও বেঁচে থাকবে নিজেদের শেষ সবকটা ম্যাচ বড় ব্যবধানে জিতলে। সেই শুরুটা শাকিবদের বধ করেই করল বাবর আজম ব্রিগেড। মঙ্গলবার পাকিস্তান জিতল ৭ উইকেট। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণভাবে ১০৫ বল বাকি থাকতে জয় ছিনিয়ে নিল পাক দল। যা পাকিস্তানের নেট রান রেট অনেকটাই শুধরে দিল।
[আরও পড়ুন: Jyotipriya Mallick: সুস্থ হতেই ফের জেরার মুখে জ্যোতিপ্রিয়, সব দায় চাপালেন প্রাক্তন আপ্তসহায়কের কাঁধে!]
এদিন ইডেনে (Eden Gardens) টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শাকিব। কিন্তু তাঁর সেই সিদ্ধান্ত শুরুতেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। মাত্র ৬ রানে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তৃতীয় উইকেটটি পড়ে যায় ২৩ রানে। এর পর লিটন দাস এবং মহম্মদুল্লাহ কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। জুটিতে তাঁরা যোগ করেন ৭৯ রান। ব্যক্তিগত ৪৫ রানে আউট হয়ে যান লিটন। এর পর মহম্মদুল্লাহর সঙ্গী হন অধিনায়ক শাকিব। কিন্তু ব্যক্তিগত ৫৬ রানে মহম্মদুল্লাহ আউট হতেই শুরু হয় ভাঙন। সেসময় বাংলাদেশের স্কোর ১৩০ রানে ছয় উইকেট। সেখান থেকে মাত্র ২০৪ রানে অল আউট ওপার বাংলার টাইগাররা। শাকিব করেন ৪৩ রান। পাকিস্তানের শাহিন আফ্রিদি এবং মহম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র দুজনেই পান ৩টি করে উইকেট।
জবাবে শুরু থেকেই মার-মার কাট-কাট ভঙ্গিতে নেমে পড়েছিল পাকিস্তান। লক্ষ্য শুধু জয় নয়, নেট রান রেটও শুধরে নেওয়া। প্রথম উইকেটের জুটিতে মাত্র ২১ ওভারে ১২৮ রান তুলে ফেলেন দুই পাক ওপেনার। ফখর জামান করেন ৮১ রান, আবদুল্লাহ শফিক করেন ৬৮ রান। দুই ওপেনার ফেরার পরও কমেনি রানের গতি। অধিনায়ক বাবর অবশ্য এদিনও ব্যর্থ হন। তবে জয় পেতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি পাকিস্তানকে। রিজওয়ান এবং ইফতিকার ৩২ ওভার ৩ বলেই লক্ষ্যে পৌঁছে যান।
এই হারের ফলে প্রথম দল হিসাবে বিশ্বকাপ থেকে সরকারিভাবে ছিটকে গেল বাংলাদেশ। ৭ ম্যাচে তাঁদের পয়েন্ট ২। সেমিফাইনালে খেলার আর কোনও আশাই নেই শাকিবদের। অন্যদিকে পাকিস্তান টুর্নামেন্টে পুনরুজ্জীবন পেল। এই বড় জয়ের ফলে সাত ম্যাচে তাঁদের সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট। আপাতত পয়েন্ট টেবিলের পঞ্চম স্থানে রয়েছে তাঁরা।