সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কথাবার্তায় বরাবরই চাঁচাছোলা। তাত্বিক বাম নেতানেত্রীদের মতো পরিশীলিত সাজানো গোছানো কথা বলেননি কোনওদিন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে তাঁর নানা কথা নানা সময়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তিনি নন্দীগ্রামের সিপিএম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় (Minakshi Mukherjee)। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) মতো হেভিওয়েট প্রার্থীর বিরুদ্ধে শিরদাঁড়া সোজা রেখে লড়াই করেছিলেন। হেরে যাওয়ার পরও দমেননি। এবার তিনি সরাসরি সরকারি প্রকল্পগুলির কথা উল্লেখ করে হুঁশিয়ারির সুরে বললেন, ”সরকারি প্রকল্প থেকে কারও নাম বাদ গেলে যে হাত সেই নাম বাদ দিচ্ছে, তার হাত আর হাতের জায়গায় থাকবে না। গলা থেকে ঝুলবে।” তাও আবার অনুব্রতর গড়ে দাঁড়িয়ে এই হুঙ্কার শোনা গেল তাঁর গলায়। আপাতত মীনাক্ষীর এই জ্বালাময়ী বক্তব্য বঙ্গে রাজনৈতি মহলের আলোচনার কেন্দ্রে।
সারা বছরই ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলন বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের ইউএসপি। এভাবেই শাসকের বিরুদ্ধে বামেদের আন্দোলনের চরিত্র ধরে রেখেছে তারা। এই মুহূর্তে এসএফআই(SFI)-ডিওয়াইএফআইয়ের জাঠা চলছে দেশজুড়ে। চলছে ছোট ছোট সভা, সমাবেশ। বীরভূমের (Birbhum) লোহাপুরে তেমনই এক সভায় সোমবার যোগ দিয়েছিলেন DYFI-এর রাজ্য সম্পাদিকা মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়েই মেঠো ভাষায়, চোখা চোখা সংলাপে শাসকদলকে বিদ্ধ করলেন তিনি। ‘কন্যাশ্রী’, ‘স্বাস্থ্যসাথী’, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে’র মতো বহুল জনপ্রিয় সরকারি প্রকল্পগুলি থেকে কোনও কোনও নাগরিকের নাম বাদ যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে বললেন, ”সরকারি প্রকল্প সকলের জন্য। অথচ সেখান থেকে কারও কারও নাম বাদ পড়ছে। যদি নাম বাদ যায়, যে হাতে সেই নাম কাটা হবে, সেই হাত আর হাতের জায়গায় থাকবে না। গলা থেকে ঝুলবে। সেই ব্যবস্থা আমরা করব।”
[আরও পড়ুন: পর্ষদের ভুলে নষ্ট ৫ বছর, ২৩ TET উত্তীর্ণকে নিয়োগের নির্দেশ হাই কোর্টের]
দিন কয়েক আগে ডিওয়াইএফআইয়ের আন্দোলনে পুলিশ বাধা দিলে মীনাক্ষীর আরও এক মন্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। তিনি নাকি বলেছিলেন, পুলিশ যেন বাম কর্মীদের গায়ে হাত না দেয়। এদের রক্ত গরম। কিছু অঘটন ঘটে গেলে দায়িত্ব নেবে না বাম ছাত্র-যুবরা। অর্থাৎ ময়দানে নেমে আন্দোলন, প্রতিবাদ, বিক্ষোভে মীনাক্ষী বরাবরই অনেকের চেয়ে এগিয়ে। তথাকথিত বাম আদর্শের খানিকটা বাইরে হেঁটে তিনি নিজের লড়াই নিজের মতো করেই করেন। আর সেটাই নজরকাড়া।
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি ভবনে শেখ হাসিনা, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি উসকে বললেন ভারতের সঙ্গে ‘চিরবন্ধুত্বে’র কথা]
যদিও মীনাক্ষীর এই হুঁশিয়ারির পালটা দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের বক্তব্য, ”এভাবেই ওঁরা লোকসভা আর বিধানসভায় শূন্য হয়েছে। এরপর আরও হবে।” তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ”এটা ওদের জেনেটিক সমস্যা। বিনয় কোঙাররাও বলেছিলেন, লাইফ হেল করে দেব। ওদের কথা ধরেই মীনাক্ষী এসব বলছে।”