সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুবছর পেরিয়েও জারি রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন রক্তক্ষয়ী লড়াই। হানাহানি, মৃত্যু সব কিছুই অব্যাহত। এখনও মেলেনি কোনও রফাসূত্র। আর এদিকে ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুঙ্কার দিয়ে দিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। এই আবহেই আমেরিকার আশঙ্কা, এই যুদ্ধে যদি পুতিন জয়লাভ করেন তাহলে তিনি শুধু ইউক্রেনেই থেমে থাকবেন না। এর পরিণতি হবে ভয়ংকর।
এই যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে ইউক্রেনের পাশে রয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো। আমেরিকার অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের সাহায্যে রণক্ষেত্রে মস্কোকে পালটা মার দিচ্ছে কিয়েভ। মঙ্গলবার ইউক্রেনের মিত্রদেশগুলো একটি বৈঠকে বসেছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন। সেই বৈঠকের বিবৃতি দিয়ে পেন্টাগন জানায়, ‘রাশিয়ার আগ্রাসানের মুখে ইউক্রেন কোনওদিন পিছপা হয়নি, আগামিদিনে হবেও না। পিছু হটবে হবে না আমেরিকাও।’
[আরও পড়ুন: খনিতে ধস নেমে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, ১২ জনের মৃত্যু পাকিস্তানে]
এই বৈঠকেই লয়েড অস্টিন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে সাহায্য করার জন্য আমাদের জোটবদ্ধ হতে হবে। কোনওভাবেই রাশিয়াকে জিততে দেওয়া যাবে না। কারণ পুতিন যদি এই লড়াইয়ে বিজয়ী হন তাহলে তিনি শুধু ইউক্রেনেই থেমে থাকবে না। দুবছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনীয় ফৌজ দক্ষতার সঙ্গে পুতিনের আগ্রাসানের জবাব দিয়ে চলেছে। এই যুদ্ধে রাশিয়াকেও বড় মূল্য চোকাতে হয়েছে। এখনও পর্যন্ত অন্তত ৩ লক্ষ ১৫ হাজার রুশ সৈনিক রণক্ষেত্রে নিহত হয়েছেন কিংবা আহত হয়েছেন। তাই ইউক্রেনের শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য অভিলম্বে আরও সামরিক সাহায্য করতে হবে। বিশেষ করে সেদেশের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে তুলতে হবে, গোলাবারুদ প্রদান করতে হবে।”
বলে রাখা ভালো, টানা পঞ্চমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে পুতিন বলেছিলেন, “সকলের কাছেই বিষয়টা খুব পরিষ্কার। রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটো যদি সরাসরি যুদ্ধ শুরু করে তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ খুব বেশি দেরি নেই। তবে আমার মনে হয় কেউই চান না যে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ুক ন্যাটো।” এর আগে ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে আমেরিকা-সহ পশ্চিমা দুনিয়াকে পরমাণু হামলার হুঙ্কার দিয়েছেন পুতিন। ফলে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে পরাজিত করতে মরিয়া আমেরিকা।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই আমেরিকার মতোই আশঙ্কার সুর শোনা গিয়েছিল ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর গলায়। তিনি বলেছিলেন, “রাশিয়াকে আমাদের প্রতিপক্ষ হিসাবে দেখা উচিত। দুবছর ধরে ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। কিন্তু পুতিন শুধু কিয়েভেই থেমে থাকবেন না। তিনি এই লড়াইয়ে জয় পেলে ইউরোপের বিশ্বাসযোগ্যতা শূন্যে নেমে যাবে।” তাই আগামিদিনে এই যুদ্ধের আঁচ ইউক্রেন পেরিয়ে কতদূর পর্যন্ত সেদিকেই নজর ওয়াকিবহাল মহলের।