স্টাফ রিপোর্টার: বাম-বিজেপির সমালোচকদের হুমকি দেওয়ায় ফের বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূলের প্রবীন সাংসদ অধ্যাপক সৌগত রায় (Sougata Roy)। দিন কয়েক আগে কুৎসাকারীদের ‘পিঠের চামড়া গুটিয়ে পায়ের জুতো করে পরা’র হুঙ্কার দিয়েছিলেন তিনি। আর শনিবার ‘তৃণমূল কর্মীদের চোর বলে উত্যক্ত করা’ সিপিএম-বিজেপি কর্মীদের ‘এলাকাছাড়া’ করার হুমকি দিলেন দমদমের সাংসদ। বললেন, “সিপিএম, বিজেপি যদি আমাদের চোর বলে উত্যক্ত করে, তাহলে কিন্তু তৃণমূল কর্মীরা চুপ করে বসে থাকবে না। আমরা একবার রুখে দাঁড়ালে ওদের এলাকাছাড়া হতে হবে।’’
উত্তর ২৪ পরগনায় (North 24 Parganas) শনিবার একটি দলীয় কর্মসূচিতে এদিন শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির ইস্যু নিয়ে খোলাখুলি মন্তব্য করেন সৌগত রায়। বিরোধীদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা ছুঁড়ে তিনি বলেন, ‘‘সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস – আপনারা সব তৃণমূলকে চোর ধরো, জেল ভরো বলবেন না। তৃণমূলের সবাইকে চোর বলবেন না। আমাদের দলের ৯৮% সৎ, ২% দুর্নীতিবাজ। আমরাও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেব। দল থেকে বের করে দেওয়া হবে।’’ এরপরই তিনি হুমকির সুরে বলেন, ‘‘তৃণমূল মানেই সবাই চোর এটা ঠিক নয়। সিপিএম-বিজেপি যদি দিনের পর দিন আমাদের চোর বলে উত্যক্ত করে তাহলে কিন্তু তৃণমূলের কর্মীরা চুপ করে বসে থাকবেন না।” সভায় রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনি বলেন, ‘‘বিরোধীদের কেউ একজন প্রমাণ করুক সৌগত রায় কারও থেকে টাকা নিয়েছে, কোথাও সম্পত্তি রয়েছে। তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেব। ফালতু অভিযোগ শুনতে রাজি নই।’’
[আরও পড়ুন: প্রেক্ষাগৃহের ভিতরে কেন্দ্রীয় নেতার অনুষ্ঠান, বাইরে মারামারি বিজেপি কর্মীদের! ICCR-এ অশান্তি]
উল্লেখ্য সিপিএম (CPM)রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও রুটিন করে প্রায়ই বলছেন, ‘‘তৃণমূলের সবাই চোর একথা বলা ঠিক নয়। তৃণমূলে অনেক সৎ মানুষও রয়েছেন। তাঁদের উচিত গলা তোলা।’’ সেইসঙ্গে সেলিমের তির্যক মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলের সবাই চোর একথা যেমন ঠিক নয় তেমন এও ঠিক যে বাংলার সব চোর-জোচ্চর তৃণমূলের ছাতার তলায় রয়েছে।’’ তবে সৌগত রায়ের এমন বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে সরব সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ”সৌগতবাবু দুষ্কৃতীদের মতো কথা বলছেন। এলাকায় থাকতে পারবেন না পর্যন্ত বলে দিচ্ছেন। চোরেদের একটা তালিকা প্রকাশ করুন। অযথা কেন বাড়তি কথা বলছেন?” কটাক্ষ করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য, ”সবে তো খোঁজা শুরু হয়েছে। খোঁজার শুরুতেই উনি ২ শতাংশ চোর বলে স্বীকার করে নিয়েছেন। পার্টির প্রাক্তন মহাসচিবই চোর বলে ধরা পড়েছেন, বাকি আর কী থাকল?”
[আরও পড়ুন: দুবাইয়ের সবচেয়ে দামি বাড়ির মালির আম্বানির ছেলে, কী কী আছে বিলাসবহুল ভিলায়?]
বর্ষীয়ান সাংসদের পাশে থেকে তৃণমূলের দাবি, সৌগতবাবু বোঝাতে চেয়েছেন, যারা দুর্নীতিগ্রস্ত, তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে যায় আসে না। কিন্তু তৃণমূলের সবাইকে ‘চোর’ বললে গায়ে তো লাগবেই। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দলের বহুকর্মীর ত্যাগ ও সংগ্রামের মধ্য দিয়েই তৃণমূল এখানে পৌঁছেছে।