সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যে মাটিতে মায়ের চিন্ময়ীরূপ পূজিত, সেই মাটিতেই মৃণ্ময়ীরা নির্যাতিত। ভূলুন্ঠিত তাঁদের সম্মান। নারীশক্তির আরাধনা করা 'সভ্যতা'র হাতেই নারীরা লাঞ্ছিত। সেই আবহে দুর্গাপুজো করা কতটা যুক্তিসঙ্গত? প্রশ্ন দ্বিখণ্ডিত সমাজ। তবে এই উৎসবের উপরই যে সারাবছর বহু মানুষ তাকিয়ে থাকেন, শুধু দুবেলার দুমুঠো অন্ন জোগাড় করার জন্য, সেটাও অজানা নয় কারও। মায়ের আগমনে তাঁদের ফাঁকা পকেটে লক্ষ্মীর কৃপা বজায় থাকে। কিন্তু মন খারাপের ভিড়ে এমন উৎসবের আমেজে মেতে উঠতে অনেকেই নারাজ। এবার সেই আবহেই দুস্থ মানুষদের পেটের কথা চিন্তা করে বড় বার্তা দিলেন ইমন চক্রবর্তী (Iman Chakraborty)।
দিন চারেকের উৎসব, হইহুল্লোড়। চোখের নিমেষে সময়টা পার হয়ে যায়। কিন্তু তার জন্য প্রস্তুতি চলে একেবারে ৩৬১ দিন ধরে। এটাই বাংলার রীতি, বাঙালির প্রাণের উৎসব। ফি বছর এই ছবিটা দেখতেই অভ্যস্ত রাজ্যবাসী। তবে এই বছর প্রতিবাদেই উৎসবে শামিল হওয়ার ডাক দিয়েছেন একাংশ। কেউ বা আবার উৎসববিমুখ বার্তাও দিয়ে চলেছেন। নেপথ্যে আর জি কর হাসপাতালের নারকীয় ঘটনা। যে ঘটনা শুধু কলকাতা নয়, নাড়িয়ে দিয়েছে জেলা-শহরগুলোকেও। প্রশ্ন উঠেছে নারীসুরক্ষা নিয়েও। এই আবহেই ‘মেয়ে’র বিচার চেয়ে ‘মায়ের পুজো’ এবার কিছুটা নমো নমো করে সারতে চাইছেন বহু উদ্যোক্তা। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে বঙ্গে দুর্গাপুজো শুধু উৎসব, উদযাপনই নয়, এ এক বড় অর্থাগমের ক্ষেত্রও। বছরভর তার জন্য অপেক্ষায় থাকে বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। তাই পুজো ভালোভাবে না হলে তাঁদের জন্য ‘আশ্বিনের শারদপ্রাতে’ বেজে উঠবে না ‘আলোকমঞ্জির’। সেই প্রেক্ষিতেই গায়িকা ইমন চক্রবর্তী বিচারের পাশাপাশি দুস্থদের কথাও মাথায় রেখে উৎসবে শামিল হওয়ার আর্জি জানালেন।
[আরও পড়ুন: মালাইকার থেকে মোটে ১১ বছরের বড় ‘বাবা’, পদবীও আলাদা, কে অনিল মেহতা?]
অন্যান্যবারের তুলনায় এবার পুজোর প্রস্তুতি ম্লান। কিন্তু তাই বলে এক মেয়ের বিচার চেয়ে অন্য মা-মেয়েদের সংসারে 'শূন্য হাড়ি' থাকা কখনোই যুক্তিযুক্ত নয়। মেয়েরাও যখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোলের সন্তান নিয়ে তিলোত্তমার ন্যায়বিচার চেয়ে পতে নামতে পারে কিংবা অশীতিপর, নবতিপর বৃদ্ধারা যখন হাতে মোম নিয়ে হাঁটেন, সেই চিত্রই বলে দেয় বাংলার নবজাগরণের কথা। নারীরা গর্জে উঠেছেন তিলোত্তমার ন্যায়বিচারের দাবিতে। সেই আবহেই পুজোর চারদিন দুস্থ মানুষদের অর্থনীতির জোগান দেওয়াটাও এই সমাজেরই কর্তব্য। ইমন চক্রবর্তী যে পোস্টটি শেয়ার করেছেন, তাতে লেখা- "বিচার চাই, উৎসবও চাই, ঢাকি-ফুচকাওয়ালাদের মুখে হাসি চাই।" তিলোত্তমার ন্যায়বিচারের সঙ্গে ওঁদের ঘরেও আলো জ্বলুক।