গৌতম ব্রহ্ম: রাজ্যজুড়ে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। কলকাতা-সহ বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গুতে (Dengue) মৃত্যুও ঊর্ধ্বমুখী। উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। আর তা সামাল দিতে সোমবার, ছুটির দিনেও নবান্নে (Nabanna) ডেঙ্গু নিয়ে হয়ে গেল জরুরি বৈঠক। মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদীর নেতৃত্বে দুটি পর্যায়ে বৈঠক হয়। প্রথম বৈঠকে উদ্বেগের শীর্ষে থাকা চার জেলাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। পরে সবক’টি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। ডেঙ্গু প্রতিরোধে জেলাগুলিকে পাঁচ দফা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার করম পুজো (Karam Puja) উপলক্ষে এ বছর থেকেই চালু হয়েছে সরকারি ছুটি। কিন্তু ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকায় ছুটির দিনেই নবান্নে বৈঠক সারলেন মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদী। মশাবাহিত রোগের সবচেয়ে বেশি প্রকোপ দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি জেলায়। এছাড়া দমদম ও বিধাননগর পুরসভা এলাকার পরিস্থিতিও খারাপ। সেই কারণে পুরসভাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনকেও যুক্ত করতে হবে ডেঙ্গু সংক্রমণ রুখতে। জমা জল বের করার জন্য পুলিশ কমিশনার এবং পুলিশ সুপারদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
[আরও পড়ুন: মুসলিম পড়ুয়াকে মার উত্তরপ্রদেশে, ‘বিবেক জাগ্রত হোক’, বলছে সুপ্রিম কোর্ট]
সোমবার বেলা ১১টা থেকে এই চার জেলার সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। জেলা প্রশাসনকে তাঁর নির্দেশ, জেলার হটস্পটগুলো (Hotspot) চিহ্নিত করতে হবে। কোথাও জল জমতে দেওয়া যাবে না। বিশেষত বাজার এলাকা, বন্ধ কলকারখানা জমা জল ও মশার আঁতুড়ঘর। তাই সেসব জায়গা অগ্রাধিকার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। প্রয়োজনে ড্রোন ব্যবহার করে, বন্ধ কারখানার তালা ভেঙে ঢুকে জমা জল নিষ্কাশন করতে হবে। এমনই কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। সোমবারই যাদবপুরের বন্ধ হয়ে যাওয়া কৃষ্ণা গ্লাস ফ্য়াক্টরিতে ড্রোন উড়িয়ে মশার লার্ভা ধ্বংস করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ফের নতুন রূপে ছড়াতে পারে করোনা ভাইরাস! হুঁশিয়ারি চিনের ‘বাদুড়-মানবী’র]
এরপর দুপুর ১২টা থেকে সবকটি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যপরীক্ষায় (Testing) জোর দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। এছাড়া প্রাথমিক নির্দেশিকা অনুযায়ী, সাবধানতা অবলম্বনের কথা ফের মনে করিয়ে দেন মুখ্যসচিব। জ্বর হলে বারবার থার্মোমিটারে শরীরের তাপমাত্রা মাপা, প্যারাসিটামল (Paracitamol) ও প্রচুর জল খাওয়ার মতো প্রাথমিক চিকিৎসা বাড়িতেই করতে হবে। শারীরিক অবস্থায় এর চেয়ে খারাপ হলে নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে রোগীকে। সময়মতো স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও চিকিৎসার মাধ্যমেই ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা করার পরামর্শ নবান্নের। তবে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে পরিচ্ছন্নতায়।