সুমন করাতি, হুগলি: গত ১ মার্চ আরামবাগে (Arambag) সভা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখান থেকে দেশ ও রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। সভা ঘোষণা পর থেকেই আশায় বুক বেঁধে ছিলেন আরামবাগ মহকুমার মানুষ। ভেবেছিলেন রামমোহনের(Raja Ram Mohan Roy) জন্মভূমিকে কেন্দ্র করে কিছু ঘোষণা থাকবে প্রধানমন্ত্রীর ঝুলিতে। তবে তাঁদের সেই আশা পূর্ণ হয়নি। রাজা রামমোহন রায়ের জন্মস্থান খানাকুলের রাধানগরকে (Radhanagar) কেন্দ্র করে সরকারি বঞ্চনার অভিযোগ থেকেই গেল আরামবাগ মহকুমার বাসিন্দাদের।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) গত শুক্রবার বিকালে আরামবাগে সভা করতে এসে একাধিকবার রাজা রামমোহনের নাম উচ্চারণ করে তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেও তাঁর জন্মস্থানকে কেন্দ্র করে কোনও উন্নয়নের কথা বলেননি। সভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শুধু বলেন, “এখানকার খানাকুল রাজা রামমোহন রায়ের জন্মস্থান। তিনি নারীমুক্তির জাগরণ ঘটিয়েছিলেন”। এর পরেই মোদি চলে যান সন্দেশখালি (Sandeshkhali) প্রসঙ্গে। সন্দেশখালি নিয়ে কথা বলতে গিয়েও রামমোহনের কথা ঘুরে-ফিরে এসেছে তাঁর মুখে। কিন্তু জন্মস্থানের উন্নয়ন বা রাধানগর পর্যন্তল রেলপথ সংযোগ নিয়ে কোনও কথা খরচ করেননি তিনি। যা নিয়ে হতাশ এলাকার মানুষ।
রাধানগর রামমোহন মেমোরিয়াল অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজ়েশন-এর সম্পাদক দেবাশিস শেঠের খেদ, “আশা করেছিলাম রাজা রামমোহনের জন্মভূমিকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন সময়ে আমাদের এবং অন্যান্য সংগঠনের যে দাবি পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল তা নিয়ে তিনি তাঁর ভাবনা বা সিদ্ধান্তের কথা কিছু বলবেন। কিন্তু রাধানগর পর্যন্ত রেলপথ-সহ সামগ্রিক উন্নয়ন নিয়ে কোনও আলোকপাত করলেন না।”তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনেক প্রত্যাশা ছিল। তিনি আরামবাগ থেকে বর্ধমান পর্যন্ত রেলপথের ঘোষণা করবেন ভেবেছিলাম। নদীঘেরা আরামবাগ মহকুমায় বিশেষ করে খানাকুলের বন্দরে রূপনারায়ণ নদ ও নতিবপুরে মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপরে সেতুর কথা বলবেন। সে সব নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে কিছু শোনা যায়নি। ফলে এখান থেকে দেশ এবং রাজ্যের কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন বা শিলান্যাস করলেও আরামবাগ মহকুমার প্রাপ্তির ঝুলি কার্যত শূন্য।
[আরও পড়ুন: মোদির সভার দিন ১৫টি ছাত্র সংগঠনের মিছিল শহরে, তীব্র যানজটের আশঙ্কা]
ভারতের প্রথম রেলযাত্রী রামমোহনের জন্মস্থানে রেল সংযোগের দাবি না মেটায় একই ভাবে হতাশা ব্যক্ত করেছেন আরামবাগ সাহিত্য ও শিল্প পরিষদের সম্পাদক বিভাংশু দত্ত,আরামবাগ নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক শৈলেন সরকাররা।
রামমোহনের জন্মস্থানের তদারকির দায়িত্বে রয়েছে হুগলি জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়ার বলেন, “রাধানগরের উন্নয়নের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আছে। তিনি ইতিমধ্যে শরৎচন্দ্রের স্মৃতিবিজড়িত দেবানন্দপুরের উন্নয়নে ১ কোটি টাকা দিয়েছেন। রাধানগরের উন্নয়নেও হাত দেবেন।” জেলা পরিষদ সূত্রের দাবি, ২০১৪ সাল নাগাদ রাজ্য সরকারের দেওয়া ৫০ লক্ষ টাকায় ৩৩ বিঘা এলাকার আমবাগানের প্রাচীর হয়েছে। তার আগে এখানে একটি অতিথিশালাও তৈরি করা হয়েছে।