সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের বাংলাদেশে (Bangladesh) দ্রুত গতিতে বাড়ছে কোভিড-১৯ (COVID-19) আক্রান্তের সংখ্যা। এ নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও গবেষকদের কাছে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) রূপ বদলেছে। তাই দ্রুতহারে আক্রান্ত বেড়েছে। বাংলাদেশেও করোনার ব্রিটেন স্ট্রেনের উপস্থিতির প্রমাণও মিলেছে। বাংলাদেশে UK ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত কয়েক জনের শরীরে মিলেছে ইংল্যান্ডের শনাক্ত হওয়া ভাইরাসের নতুন ধরন। এই অবস্থায় আতঙ্কিত মানুষজন ছুটছেন ভ্যাকসিন নিতে। প্রথম ডোজ শেষের দিকে, তাই দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ করেই পরিস্থিতি সামলাতে হচ্ছে।
করোনা নিয়ে গবেষণা করছেন ব্রিটিশ নাগরিক ড. সানজাম সাহা। গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশে এসেছিলেন বরিশালের নাগরিক। বাংলাদেশে করোনার লক্ষণ দেখে এবং দেশের বিজ্ঞানীদের মধ্যে যারা জিনোম সিকোয়েন্স নিয়ে কাজ করছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলে এবং খোঁজখবর নিয়ে ড. সানজাম সাহা জানিয়েছিলেন, সামনে বাংলাদেশে করোনা ক্ষিপ্রগতিতে ছড়ানোর সম্ভাবনা অনেক বেশি। আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগি জানান, দেশে ‘‘১০ জনের শরীরে করোনার ব্রিটেন স্ট্রেনের উপস্থিতি পেয়েছি। আরও পরীক্ষা করছি। তবে করোনা যে গতিতে ছড়াক না কেন, তার চিকিৎসাব্যবস্থা একই। প্রতিকার-প্রতিরোধের ব্যবস্থাও একই।”
[আরও পড়ুন: ‘নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেব না’, হুঙ্কার মৌলবাদী সংগঠনগুলির]
এদিকে, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট (SII) থেকে বেক্সিমকোর মাধ্যমে টিকা আসাও বন্ধ প্রায় দেড় মাস ধরে। কোভ্যাক্স থেকেও টিকা কবে নাগাদ আসতে পারে তা’ও ঠিক নেই। অপরদিকে সরকারের হাতে থাকা টিকার মজুত কমে আসছে। অবস্থা এখন এমন যে হিসেব অনুযায়ী দ্বিতীয় ডোজের মজুত খরচ করে প্রথম ডোজ চালু রাখতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৭ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজ শুরু হবে। কথা ছিল, এর মধ্যে টিকার একাধিক চালান আসবে, কিন্তু আসেনি। এখন যদি আগামী দুই মাসেও কোনও কারণে টিকা না আসে, তবে বড় বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হবে। কারণ এখনই দ্বিতীয় ডোজের মজুত খরচ করে প্রথম ডোজ চালু রাখা হচ্ছে। এছাড়া অন্য নতুন কোনও টিকা আনার মাধ্যমও বের করতে পারছে না সরকার। যদিও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘‘টিকাদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যতটা সম্ভব দ্রুত সময়ে বাকি টিকা আনতে যোগাযোগ চলছে।”
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ফের আক্রান্ত সংখ্যালঘু হিন্দুরা, দাঁড়িয়ে দেখল পুলিশ]
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল হাসান জানিয়েছেন, ”খোঁজখবর নিয়েছি, কিন্তু টিকার চালান আবার কবে আসবে তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ‘বেক্সিমকোফার্মা’ ভারতের সেরামের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। অবশ্য বিশ্বের অধিকাংশ দেশের চিন্তার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট। যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিলের পর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও পাওয়া গেছে করোনা ভাইরাসের বিপজ্জনক নতুন ভ্যারিয়েন্ট। দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বলেছেন, করোনার রূপ (জিনোম সিকোয়েন্স) বদলেছে। এ কারণে দ্রুত আক্রান্ত বাড়ছে। তাই চিকিৎসাব্যবস্থার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধিও মেনে চলতে হবে।