সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিক্ষা আনে চেতনা। চেতনা আনে মুক্তি। কিন্তু শিক্ষা বা চেতনা কোনওটাই কাজের সুযোগ আনে কি? বর্তমান ভারতীয় প্রেক্ষাপটে বললে উত্তরটা হবে মস্ত বড় না। অন্তত পরিসংখ্যান যা বলছে তাতে এদেশে শিক্ষিত হওয়া মানেই ভালো কাজের সুযোগ পাওয়া, তেমনটা নয়। বরং, ঠিক উলটোটা। ভারতে এখন শিক্ষিতদের থেকে নিরক্ষরদের কাজের সুযোগ বেশি। তেমনটাই বলছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (ILO) একটি রিপোর্ট।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ভারতের বেকার সমস্যা নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করেছে। সেই রিপোর্ট বলছে, এ দেশে শিক্ষিত বা উচ্চশিক্ষিতদের জন্য কাজের সুযোগ নিরক্ষর বা অদক্ষ কর্মীদের থেকে অনেকটাই বেশি। ওই রিপোর্টে ২০২২ সালের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। সেই পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশের গ্র্যাজুয়েট বা স্নাতকদের মধ্যে প্রায় ২৯.১ শতাংশ বেকার। মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল ডিগ্রিধারীদের মধ্যে ১৮.৪ শতাংশ বেকার। সেখানে দেশের নিরক্ষর বা অদক্ষ কর্মীদের বেকারত্বের হার মাত্র ৩.৪ শতাংশ। অর্থাৎ নিরক্ষরদেরদের তুলনায় গ্র্যাজুয়েটদের বেকার থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা ৯ গুণ। আবার নিরক্ষরদেরদের তুলনায় মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পাশদের বেকার থাকার সম্ভাবনা প্রায় ৬ গুণ।
[আরও পড়ুন: ‘ছাপরির বউ ছাপরি’, হার্দিকের ‘দুর্দিনে’ নেটিজেনদের কটাক্ষের শিকার স্ত্রী নাতাশা]
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার রিপোর্টে অবশ্য একটা আশার কথা শোনানো হয়েছে। ওই রিপোর্ট বলছে, দেশে ১৫-২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে বেকারত্বের হার ২০০০ সালের তুলনায় ২০২২ সালে সামান্য কমেছে। কিন্তু যত সময় যাচ্ছে তত শিক্ষিতদের মধ্যে বেকার থাকার প্রবণতা বাড়ছে। যেমন ২০০০ সালে দেশে শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারের হার ছিল ৫৪.২ শতাংশ। সেখানে ২০২২ সালে শিক্ষিত বেকারের হার ৬৫.৭ শতাংশ। অর্থাৎ শিক্ষিতদের কাজ পাওয়ার প্রবণতা ক্রমশ কমছে।
[আরও পড়ুন: ভোটের আগে খাস কলকাতা থেকে উদ্ধার ৮২ লাখ টাকার সোনা, গ্রেপ্তার ৫]
সরকারের দাবি তরতরিয়ে এগিয়ে চলেছে দেশের অর্থনীতি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) বলছেন ১৯৪৭ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হবে ভারত। কিন্তু বাস্তব কী বলছে? রঘুরাম রাজন সদ্যই বলেছেন, সরকার আর্থিক যে উন্নতির দাবি করছে সেটা পুরোপুরিই ভড়ং। সেটাই যেন প্রকাশ্যে এল আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার দেওয়া পরিসংখ্যানে। দেশের এই দক্ষ ও কর্মক্ষম জনসংখ্যাকে ভালো কাজের সুযোগ দিতে না পারলে উন্নতি যে সম্ভব নয়, সেটা একবাক্যে নেবেন অর্থনীতিবিদরাও।