সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মায়রা (Mayra) হল রাজস্থানি (Rajasthan) বিবাহ উৎসবের অন্যতম রীতি। ভাগ্নে বা ভাগ্নির বিয়েতে মামা তাঁর বোনের মায়রা ভরে দেন। আসলে বড়সড় অর্থমূল্য দান করেন বোনকে। রাজস্থানের নাগাউর (Nagaur) জেলা আবার মায়রার (Mayra) জন্য আলাদা করে প্রসিদ্ধ। সেখানেই দেখা গেল এক চমকে দেওয়া কাণ্ড। ভাগ্নের বিয়েতে ঝুড়ি ঝুড়ি টাকা নিয়ে হাজির হলেন তিন মামা। সেই টাকা গুনতে পাক্কা তিন ঘণ্টা সময় লেগে গেল। টাকার পরিমাণ কত ছিল জানেন?
জানা গিয়েছে, মায়রা উৎসবের জন্য কৃষক পরিবারটি গত আড়াই বছর ধরেই টাকা জমাচ্ছিল। রবিবার রাতে বিশাল আকারের দুই ঝুড়ি ভরে সেই টাকা নিয়ে বিয়ের আসরে হাজির হন তিন মামা। ঝুড়ির সমস্ত টাকাই ছিল ১০ টাকার নোট। মোট টাকার পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এই টাকা গুনতে ৩ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়। মায়রা দানের এই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
[আরও পড়ুন: ক্লাসে বসে মন দিয়ে ইংরেজি ক্লাস করল হনুমান! তাজ্জব মাস্টারমশাই]
নাগাউর জেলার দেশবাল গ্রামের বাসিন্দা সিপু দেবী। এদিন বিয়ে ছিল সিপু দেবীর ছেলে হিম্মতরামের। হিম্মতের বিয়েতে সিপু দেবীকে চমকে দেওয়া মায়রা দান করেছেন তাঁর তিন ভাই ডোগানার নিবাসী রামনিবাস জাট, কানারাম জাট এবং শোতানরাম জাট। জানা গিয়েছে, তিন মামার মায়রা ৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা ঘণ্টা তিনেক ধরে গোনেন ৮ জন।
মায়রা নিয়ে রাজস্থানে একটি প্রচলিত কাহিনি রয়েছে। সেটা মুঘল শাসনকালের কথা। বাদশার জন্য কর সংগ্রহ করে দিল্লির দরবারে জমা দেওয়ার কাজ করত ধর্মরাম জাট ও গোপালরাম জাট নামের দুই ভাই। বলা হয়, একবার তাঁরা যখন কর সংগ্রহ করে দিল্লি যাচ্ছিলেন, তখন রাস্তায় এক মহিলার সঙ্গে দেখা হয় তাঁদের। মহিলা কাঁদতে কাঁদতে জানান, তাঁর কোনও ভাই নেই। ফলে তাঁর সন্তানের বিয়েতে মায়রা ভরারও কেউ নেই। একথা শুনে ধর্মরাম ও গোপালরাম কর সংগ্রহের সব টাকা ওই মহিলাকে দান করেন। যদিও এই উদারতার জন্য ধর্মরাম জাট এবং গোপালরাম জাটকে বাদশাহ কোনও শাস্তি দেননি বলেই শোনা যায়।
[আরও পড়ুন: নিজে রান্না করে নববধূকে ভাতকাপড় দিলেন যুবক! সমাজের উলটো স্রোতে হেঁটে ভাইরাল দম্পতি]
উল্লেখ্য, ভাইয়েরা তাঁদের ভাগ্নে এবং ভাগ্নির বিয়ের সময় যখন বোনের মায়রা ভরেন, তখন মহিলারা লোকগীতি গান।