সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত মাসেই রাশিয়া সফরে গিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আলিঙ্গন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যা নিয়ে বিতর্কের মাঝেই এবার ইউক্রেন সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আলিঙ্গন করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝে নরেন্দ্র মোদির এই আলিঙ্গন কূটনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। পাশাপাশি এদিন রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের ভয়াবহ পরিস্থিতির ভিডিও ফুটেজ মোদিকে দেখালেন জেলেনস্কি।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধে শুরু থেকেই নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে ভারত। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান ও বার বার শান্তির বার্তা এসেছে ভারতের থেকে। এই পরিস্থিতিতেই রাশিয়া সফরের মাত্র ৬ সপ্তাহের ব্যবধানে শুক্রবার কিয়েভ গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন পোল্যান্ড থেকে 'রেল ফোর্স ওয়ান' ট্রেনে কিয়েভ পৌঁছন তিনি। সেখানে করমর্দন করে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান জেলেনস্কি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের পর এদিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকেও আলিঙ্গন করতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে। যে ছবি ইতিমধ্যেই ভাইরাল সোশাল মিডিয়ায়। কূটনৈতিক দিক থেকে এই আলিঙ্গন স্পষ্ট বার্তা যে যুদ্ধ নয় শান্তির লক্ষ্যে দুই দেশের পাশেই রয়েছে ভারত। পাশাপাশি এদিন জেলেনস্কির কাঁধে হাত রেখে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ইউক্রেনের ভয়াবহ পরিস্থিতির ভিডিও ফুটেজ দেখেন প্রধানমন্ত্রী। জানা যাচ্ছে, আলোচনার মাধ্যমে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ থামাতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও বিস্তারিত আলোচনা করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
জেলেনস্কির কাঁধে হাত রেখে দেখলেন যুদ্ধের ভয়াবহতা।
[আরও পড়ুন: নেপালে নদীতে পড়ল ভারতীয় পর্যটকবোঝাই বাস, মৃত অন্তত ১৪]
উল্লেখ্য, গত মাসে রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন মোদি। সেই সময়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাত ও আলিঙ্গনের তীব্র নিন্দা করেছিলেন জেলেনস্কি। বলেছিলেন, 'মস্কোতে বিশ্বের সবচেয়ে বর্বর অপরাধীকে আলিঙ্গন।' তার পরেই জানা যায়, কেবল রাশিয়া নয় ইউক্রেন সফরেও যাবেন মোদি। তবে কিয়েভে পৌঁছনোর আগেই শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিতে শোনা গিয়েছিল মোদিকে। তিনি বলেন, বন্ধু এবং সঙ্গী হিসাবে ভারত চায় পূর্ব ইউরোপে শান্তি ফিরুক। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে আমার যা কথা হয়েছিল, সেটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা হবে। শান্তিপূর্ণভাবে যেন এই সমস্যা মেটানো যায়, সেই বিষয়টি তুলে ধরব।”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে শহিদদের শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: ইউক্রেনের স্বাধীনতার পরে প্রথমবার, ইতিহাস গড়ে কিয়েভে পৌঁছলেন মোদি]
এদিকে নরেন্দ্র মোদির এই সফরকে কূটনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছে ইউক্রেনও। জেলেনস্কির অন্যতম উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিক বলেন, 'মোদির এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে ওদের (রাশিয়া) বোঝাতে হবে যুদ্ধের পরিণতি কী হওয়া উচিত।' মিখাইল আরও বলেন, যেহেতু নয়াদিল্লির সঙ্গে মস্কোর সুসম্পর্ক আছে তাই মোদির এই সফরের প্রভাব পড়বে রাশিয়ার উপর।