সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী দিনে দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করাই তাঁর মূল লক্ষ্য। লালকেল্লায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে বুঝিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট বললেন, এতদিন যে দেওয়ানি বিধি দেশে চলছে, সেটা সাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ নয়। এই দেশ ৭৫ বছর ধরে দেখে এসেছে সাম্প্রদায়িক দেওয়ানি বিধি। এবার সময় ধর্মনিরপেক্ষ দেওয়ানি বিধি চালু করার।
প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লা থেকে দাঁড়িয়ে বললেন, "দেশের সুপ্রিম কোর্টও আমাদের বহুবার বলে এটা করতে। সংবিধান নির্মাতাদের স্বপ্ন ছিল ধর্মনিরপেক্ষ দেওয়ানি বিধি। যে আইন ধর্মের ভিত্তিতে দেশকে বিভাজিত করে, যে আইন উচ্চ বর্ণ, নিম্ন বর্ণের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে, আধুনিক সমাজে সেই আইনের কোনও জায়গা নেই।" প্রধানমন্ত্রীর সাফ কথা, "আমরা একটা সাম্প্রদায়িক দেওয়ানি বিধিতে ৭৫ বছর কাটিয়েছি। এবার একটা ধর্মনিরপেক্ষ দেওয়ানি বিধি চালু হওয়া দরকার। তাহলে মানুষে মানুষে বিভেদ কমবে।"
[আরও পড়ুন: গভীর রাতে রণক্ষেত্র আর জি কর, চিকিৎসকদের মারধর, হাসপাতালে তাণ্ডব বহিরাগতদের]
রামমন্দির নির্মাণ, ৩৭০ ধারা বাতিল এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু। বিজেপি তথা সংঘ পরিবারের দীর্ঘদিনের এই ৩ এজেন্ডার দুটি ইতিমধ্যেই পূরণ হয়েছে। এবার পালা অভিন্ন দেওয়ানি বিধির। এক দেশ, দুই নিশান, দুই বিধান হতে পারে না, বিজেপির এই সংকল্প দীর্ঘদিনের। সেটা পূরণ করতে বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্য ইতিমধ্যেই স্থানীয় স্তরে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু করছে গেরুয়া শিবির। এবার নির্বাচিত হওয়ার পর অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুই যে প্রধান লক্ষ্য হতে চলেছে বিজেপির, সেটা ভোটের আগে স্পষ্ট করলেও ভোটের ফলাফলের পর সেটা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। বস্তুত কেন্দ্রের মোদি সরকার এখন শরিক নির্ভর। বিজেপির সব শরিক হয়তো অভিন্ন দেওয়ানি বিধির এই এজেন্ডাকে সমর্থনও করবেন না। তা সত্ত্বেও মোদি যে ঝুঁকি নিয়ে প্রস্তুত সেটা বুঝিয়ে দিলেন তিনি।
তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে নতুন যে দেওয়ানি বিধির কথা তিনি বললেন, তাতে 'অভিন্ন' শব্দটি ব্যবহার করেননি প্রধানমন্ত্রী। তিনি ব্যবহার করেছেন 'অসাম্প্রদায়িক দেওয়ানি বিধি' শব্দটি। সেই ধর্মনিরপেক্ষ দেওয়ানি বিধির রূপরেখা কেমন হয়, সেটাই দেখার।