সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে ফের ক্ষমতায় ফিরেছে আওয়ামি লিগ। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বিপুল ভোটে জিতেছেন। ফের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মুজিবকন্যা। দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচনের পর ফল যে এমনটাই দাঁড়াবে তা নিয়ে কারও কোনও সংশয় ছিল না। তবে বিশ্লেষকদের অবাক করে ভোটের লড়াইয়ে অপ্রত্যাশিত দাপট দেখিয়েছেন নির্দল প্রার্থীরা। ২৯৯ আসনের মধ্যে ৬১টি ঝুলিতে পুরেছে তাঁরা। ফলে সংসদে কি প্রধান বিরোধী শক্তি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করল ‘দলহীন’রাই, উঠছে এমন প্রশ্ন।
রবিবার ২৯৯টি সংসদীয় ক্ষেত্রের (মোট ৩০০) জন্য ভোটগ্রহণ হয় বাংলাদেশে। প্রার্থীর মৃত্যুতে একটি আসনে ভোট হয়নি। ফলাফল বেরলে দেখা যায় প্রত্যাশা মতো আওয়ামি লিগ জয়ী হয়েছে ২২৩টি আসনে। শাসকদলের জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টি (এরশাদ) পেয়েছে মাত্র ১১টি সিট। আসনরফা মেনে ২৬টি আসনে লড়াই করার সুযোগ পেলেও এরশাদের দল তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্লেষকদের চমকে, ৬১টি সিট ঝুলিতে পুরতে সক্ষম হয় নির্দল প্রার্থীরা। যদিও খবর অনুযায়ী তাঁরা আসলে আওয়ামি লিগের ‘ডামি প্রার্থী’।
[আরও পড়ুন: মসনদে ফের হাসিনাই, প্রতিদ্বন্দ্বীদের কত ভোটে হারালেন মুজিবকন্যা?]
এদিকে, পর্যবেক্ষকদের চমকে এই ডামি প্রার্থীদের কাছেই হেরেছেন হাসিনা সরকারের তিন দাপুটে প্রতিমন্ত্রী। এছাড়া আওয়ামি লিগ সভাপতিমণ্ডলীর একজন ও সম্পাদকমণ্ডলীর দুজন সদস্য-সহ বেশ কয়েকজন বর্তমান সাংসদ ‘ডামি’ প্রার্থীদের কাছে গড় খুইয়েছেন। উল্লেখ্য, দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবারও নির্বাচন বয়কট করেছে। তাদের দাবি, ‘মাত্র ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে। এতেই স্পষ্ট এই নির্বাচন প্রহসন মাত্র। মানুষ তা মেনে নেয়নি।’ খালেদা জিয়ার দল সংসদ থেকে সরে দাঁড়ানোয় এতদিন পর্যন্ত খাতায় কলমে প্রধান বিরোধী দল ছিল এরশাদের জাতীয় পার্টি। এবারের ফলাফলে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশের পার্লামেন্টে তা হলে প্রধান বিরোধী কে? ভোটের পর পরিসংখ্যানে বলীয়ান দলহীনরাই কি এবার সেই পদের দাবিদার? তথাকথিত নির্দল ও আওয়ামি লিগের ঘোষিত প্রার্থীদের মধ্যে কি ক্ষমতার লড়াই শুরু হবে? এই অন্তর্কলহ কীভাবে সামাল দেবেন হাসিনা? উত্তর আপাতত সময়ের গর্ভে।