সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণভোটের পর ইউক্রেনের চার অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত করার কথা ঘোষণা করেছে রাশিয়া। তারপর থেকেই এই ‘আগ্রাসন’ ও ‘প্রহসনের’ বিরুদ্ধে সরব হয়েছে আমেরিক-সহ পশ্চিমের দেশগুলি। কিন্তু চাপের মুখেও রাষ্ট্রসংঘে ‘বন্ধু’ রাশিয়ার পাশেই দাঁড়িয়েছে ভারত।
শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পেশ করে আমেরিকা ও আলবানিয়া। ওই প্রস্তাবে ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলে ‘অবৈধ গণভোটের’ নিন্দা করা হয়। নিয়মমাফিক প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে ভোটপর্ব শুরু হয় রাষ্ট্রসংঘের ১৫ সদস্য দেশের (৫ স্থায়ী সদস্য) মধ্যে। এবং মার্কিন চাপ উড়িয়ে ভোটদানে বিরত থাকে ভারত। ভোট দেয়নি চিন, গ্যাবন ও ব্রাজিলও। মোট দশটি দেশ রাশিয়া-বিরোধী প্রস্তাবে ভোট দিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিশেষ ক্ষমতা বা ভেটো প্রয়োগ করেছে মস্কো। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রস্তাবটি পাশ হয়নি।
[আরও পড়ুন: ‘বেশিদিন অগ্রাহ্য করা যাবে না’, UNSCতে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ নিয়ে সরব জয়শংকর]
উল্লেখ্য, ইউক্রেনের ডনেৎস্ক, লুহানস্ক (একত্রে দোনবাস), জাপরজাই ও খেরসন- এই চার অঞ্চলকে শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ভাবে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করার কথা ঘোষণা করেন পুতিন। গতকাল এক দীর্ঘ ভাষণে তিনি বলেছেন, “সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন পুনর্গঠন করা আমাদের লক্ষ্য নয়। কিন্তু মানুষের ইচ্ছা ছিল, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে রুশ নাগরিক হিসাবে পরিচিত হওয়া। সেই জন্যই আমরা গণভোটের মাধ্যমে ডোনেৎস্ক, লুহান্সক, খেরসন, জাপরজাই-এই চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করলাম।”
এই বিষয়ে উত্থাপিত প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রসংঘে ভারতের প্রতিনিধি রুচিরা কম্বোজ জানান, ইউক্রেনের ঘটনাপ্রবাহ সম্প্রতি যে খাতে বইছে, তাতে গভীর ভাবে চিন্তিত ভারত। নয়াদিল্লি বরাবরই শান্তি ও সম্প্রীতির পক্ষে রয়েছে বলেও জানান তিনি। বিশ্লেষকদের মতে, মোদি সরকার ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ নীতি মেনেই এই কাজ করছে। নিন্দা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়ে সময় পরীক্ষিত ‘বন্ধু’ রাশিয়াকে চিনের আরও কাছাকাছি ঠেলে দিতে চাইছে না নয়াদিল্লি। এছাড়া, এটা আমেরিকার জন্য কড়া বার্তাও। কারণ, সম্প্রতি এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের জন্য পাকিস্তানে বিরাট আর্থিক প্যাকেজ দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। আর সেটাই ভালভাবে নেয়নি সাউথ ব্লক।