সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত মহাসাগরে (Indian Ocean Region) শুরু হল ভারত এবং আমেরিকার (America) ২ দিনের যৌথ নৌ-মহড়া। দু’ দেশের সামরিক সহযোগিতাকে আরও দৃঢ় করতেই এই কর্মসূচি বলে জানানো হয়েছে। চিনের (China) তরফে এখনও পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও নভেম্বরে ‘কোয়াড’-এর নৌ-মহড়া নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছিল। যদিও তাকে বিশেষ পাত্তা দেয়নি কোয়াড (ভারত-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়া-জাপান)। ফলে ভারত মহাসাগর যেখানে চিন তাদের উপস্থিতি বোঝাতে বার বার সক্রিয়, সেখানে বার বার আমেরিকার সঙ্গে ভারতের যৌথ মহড়া চাপে রাখছে চিনকে।
আজ রবিবার থেকে শুরু হওয়া এই নৌ-মহড়ায় ভারতের রণতরী শিবালিক এবং দূরপাল্লার সামুদ্রিক টহলদারি বিমান ‘পি৮আই’ অংশ নিয়েছে। আমেরিকার (US Navy) তরফে অংশ নিয়েছে ‘ইউএসএস থিওডোর রুজভেল্ট’ (USS Theodore Rosevelt) ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ। ভারতীয় নৌ-বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে একথা।
ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ বা ক্যারিয়ার ব্যাটল গ্রুপ একটি বড় সড় নৌবহর। যাতে একটি বিমানবাহী রণতরীর সঙ্গে অনেকগুলি ডেস্ট্রয়ার (আক্রমণকারী) জাহাজ এবং ফ্রিগেট (ছোট এবং দ্রুত গতির যুদ্ধ জাহাজ) সঙ্গে আরও অন্য জাহাজ থাকে।
শুধু নৌ বাহিনীর সদস্যরাই নয় এই যৌথ মহড়ায় ভারতীয় বায়ু সেনার যুদ্ধ বিমানও অংশ নিয়েছে। ভারতীয় নৌ বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, এর ফলে ভারতীয় বিমান বাহিনীর সঙ্গে মার্কিন নৌ বাহিনীর বোঝাপড়া অনেক বাড়বে। কীভাবে মার্কিন বিমান বাহিনী আকাশসীমায় আক্রমণ বা আত্মরক্ষার কাজ করে সেই কৌশলের খুঁটিনাটি বুঝতে পারবে ভারতীয় বায়ু সেনা।
মার্কিন ডিফেন্স সেক্রেটারি লয়েড অস্টিনের ভারত সফরের এক সপ্তাহের মধ্যেই এই নৌ-মহড়া শুরু হল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন ভারতের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা হবে। বিশেষ করে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের চোখরাঙানি কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
[আরও পড়ুন: মাস্ক না পরলেই যেতে হবে জেলে, করোনা সংক্রমণ রুখতে কড়া দাওয়াই তেলেঙ্গানা সরকারের]
ভারতীয় নৌ বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, নভেম্বরে মালাবারে যে উদ্যোগ শুরু হয়েছিল তাকেই আরও দৃঢ় করতে রবি ও সোমবার চলবে এই যৌথ নৌ মহড়া। নভেম্বরে মালাবারে ভারত, আমেরিকা ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানের নৌ বাহিনী এই কোয়াডে অংশ নেয়। তার আগে চিন সন্দেহ প্রকাশ করে, এই বার্ষিক যৌথ মহড়া আসলে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় ক্ষমতার প্রদর্শনের চেষ্টা।
গত নভেম্বরের আগে গত বছরের জুলাইয়েও ভারত মার্কিন নৌ বাহিনীর একটি যৌথ মহড়া হয়। সেবার আন্দামান নিকোবর দীপপুঞ্জে ভারতীয় নৌ বাহিনীর সঙ্গে মহড়ায় নামে মার্কিন রণতরী ইউএসএস নিমিটজ। ইউএসএস নিমিটজ বিশ্বের সব থেকে বড় যুদ্ধ জাহাজ।
বার বার ভারত এবং আমেরিকার এভাবে যৌথ নৌ-মহড়া স্বাভাবিক ভাবেই চিনের রক্তচাপ বাড়াচ্ছে। কারণ প্রশান্ত এবং ভারত মহাসাগরে নিজেদের শক্তি বাড়াতে সচেষ্ট চিন। সেখানে ভারত এবং তার সঙ্গে বিশ্বের সব থেকে শক্তিশালী সামরিক শক্তি আমেরিকা যোগ হওয়ায় চাপেই থাকতে হচ্ছে চিনকে।