সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ১৮১/৭ (কোহলি ৬০, শাদাব ২-৩১)
পাকিস্তান ১৮২/৫ (রিজওয়ান ৭১, নওয়াজ ৪২)
পাকিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এশিয়া কাপে (Asia Cup) পাকিস্তানকে হারিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল ভারত (India)। রবিবার সুপার ফোরে ভারতকে হারিয়ে বদলা নিল পাকিস্তান (Pakistan)। ভারত ২০ ওভারে করেছিল ৭ উইকেটে ১৮১ রান। পাকিস্তান ৩ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে নেয়। বাবর আজমের দলকে জেতানোর আসল কারিগর মহম্মদ রিজওয়ান। ৫১ বলে ৭১ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন পাকিস্তানের উইকেটকিপার।
ম্যাচ পেন্ডুলামের মতো দুলল। ভারত প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ইঙ্গিত দিয়েছিল ২০০-র কাছাকাছি রান করবে। কিন্তু পাক বোলাররা ঠিক সময়ে ম্যাচের উপর রাশ টেনে ধরেন। তার ফলে ভারত আর ২০০-র কাছাকাছি পৌঁছতে পারেনি। আবার ভারতের রান তাড়া করতে নেমে একসময়ে পাকিস্তান পিছিয়েই ছিল। আস্কিং রেট বাড়ছিল। হঠাতই রান তোলার গতি বাড়িয়ে নেয় পাকিস্তান। ভারতীয় বোলাররাও আসল সময়ে শিক্ষানবিশের মতো বোলিং করেন। শেষের দিকে রবি বিষ্ণোইয়ের বলে আসিফ আলির লোপ্পা ক্যাচ ফেলেন অর্শদীপ সিং। ভুবনেশ্বর কুমারের মতো অভিজ্ঞ বোলারও শেষের দিকে রান দিয়ে ফেলেন। অর্শদীপ সিং শেষ ওভারে উইকেট নিলেও পাকিস্তানকে থামিয়ে রাখতে পারেননি। তাঁর হাত দিয়ে ফুলটস বেরল শেষ ওভারে। দলের সবচেয়ে অনভিজ্ঞ বোলারের জন্য শেষ ওভার রেখেছিলেন রোহিত। অবশ্য তাঁর হাতে দ্বিতীয় কোনও রাস্তা খোলা ছিল না। রবীন্দ্র জাদেজার অভাব অনুভূত হল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ব্যাট ও বল হাতে দুরন্ত পারফরম্যান্স করায় নায়ক বনে গিয়েছিলেন পান্ডিয়া। এদিন ব্যাট হাতে তিনি ব্যর্থ। মহম্মদ রিজওয়ান যখন ভারতের ক্যাম্প থেকে ম্যাচ নিয়ে যাওয়ার উপক্রম করছেন, ঠিক তখনই পান্ডিয়া ফেরান পাক উইকেট কিপারকে। কিন্তু তাতেও লাভ কিছু হল না। মরুশহরে পাকিস্তান জিতে নিল ম্যাচ। এশিয়া কাপে বাকি দুটো ম্যাচ এখন ভারতকে জিততেই হবে।
এদিন টস জিতে ভারতকে ব্যাটিং করতে পাঠায় পাকিস্তান। শুরুতে ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল ঝড় তুলেছিলেন। ভারত তখন ছুটছিল। মনে হচ্ছিল ২০০-র কাছাকাছি পৌঁছে যাবে ভারত। কিন্তু রোহিত শর্মা কেন যে হ্যারিস রাউফকে তুলে মারতে গেলেন, তা তিনিই ভাল বলতে পারবেন। খুশদিল শাহ ক্যাচটা ভাল নিয়েছেন রোহিতের (২৮)। ভারত প্রথম উইকেট হারায় ৫৪ রানে।
[আরও পড়ুন: স্থায়ী হল না শুরুর ঝড়, ২০০-র ইঙ্গিত দিয়ে ভারত থামল ১৮১ রানে]
রোহিত চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ফেরেন লোকেশ রাহুল (২৮)। শাদাব খানকে তুলে মারতে গিয়ে উইকেট ছুঁড়ে দেন কেএল রাহুল। সূর্যকুমার যাদব হংকংয়ের বিরুদ্ধে রানের গতি বাড়িয়েছিলেন। এদিন ব্যর্থ হন সূর্য (১৩)। ঋষভ পন্থও (১৪) হতশ্রী শট খেলে ডাগ আউটে ফিরে যান। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে হার্দিক পান্ডিয়া ম্যাচ জিতিয়েছিলেন ভারতকে। এদিন তিনি খাতা না খুলেই ফিরে যান। ভারত ১৮১ রানে পৌঁছয় বিরাট কোহলির জন্য। তিনি ৬০ রানে রান আউট হন। কিন্তু পরপর উইকেট হারিয়ে ভারত যখন কিছুটা হলেও চাপে, সেই সময়ে কোহলি দলের হাল ধরেন।
ভারতের রান তাড়া করতে নেমে বাবর আজম ফেরেন ১৪ রানে। চাহালের শিকার ফকর জামান (১৫)। দু’ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান একসময়ে হয়ে গিয়েছিল ৬৩। ঠিক এই অবস্থা থেকে পাকিস্তানকে টেনে তোলেন রিজওয়ান এবং মহম্মদ নওয়াজ। রিজওয়ান কতটা কার্যকরী ব্যাটিং করেন, তা দেখা গিয়েছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এদিন দরকারের সময়ে রিজওয়ানের সঙ্গে মহম্মদ নওয়াজ আক্রমণ নিয়ে যান ভারতের ক্যাম্পে। পাক অধিনায়ক বাবর আজম ব্যাটিং অর্ডারে উপরের দিকে পাঠান নওয়াজকে। তিনি মারমুখী ব্যাটিং করেন। নওয়াজ ও রিজওয়ানের ব্যাটিং ভারতকেই চাপে ফেলে দিয়েছিল। ভুবনেশ্বর কুমার ফেরান মহম্মদ নওয়াজকে। আউট হওয়ার আগে ২০ বলে ৪২ রান করে যান তিনি।
বিপজ্জনক হয়ে ওঠা রিজওয়ানকে আউট করেন হার্দিক। রিজওয়ানের (৭১) উইকেট যখন দরকার, ঠিক সেই সময়ে হার্দিক কাজের কাজটা করেন। কিন্তু ভুবনেশ্বর কুমারের মতো অভিজ্ঞ বোলার ১৯ তম ওভারে আটকে রাখতে পারেননি পাক ব্যাটারদের। ১৯ রান দেন ভুবি। শেষ ওভারে জেতার জন্য পাকিস্তানের দরকার ছিল ৭ রান। অর্শদীপ সিং সেই রান আটকাতে পারেননি। নিজেও ক্যাচ ছেড়েছেন। বল হাতেও কিছু করতে পারলেন না। ভারতীয় বোলিংয়ের রক্তাল্পতা চোখে পড়ল। ওয়াইড বল হল, পাক ব্যাটারদের ভুল লেন্থে বল করে গেলেন ভারতীয় বোলাররা। রোহিতের দল নিশ্চয় পরের ম্যাচে এই ভুলগুলো শুধরে নেবে।