সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বুচা গণহত্যার দৃশ্যে শিউরে উঠেছে বিশ্ব। একের পর এক গণকবর তুলে ধরছে যুদ্ধের ভয়াবহ ছবি। নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করলেও এই ঘটনার জেরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে রাশিয়া (Russia)। এহেন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘে বুচা গণহত্যার তীব্র নিন্দা করে ‘স্বাধীন’ তদন্তের দাবি জানিয়েছে ভারত।
[আরও পড়ুন: রুশ তেল আমদানি নিয়ে ফের ভারতকে হুঁশিয়ারি আমেরিকার, চাপের মুখে কি অবস্থান বদল করবে কেন্দ্র?]
এদিন রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি বলেন, “সম্প্রতি বুচায় আম নাগরিকদের হত্যার যে খবর প্রকাশে এসেছে তা অত্যন্ত অস্বস্তিকর। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করছি। এই ঘটনায় স্বাধীন তদন্ত হওয়া উচিত।” একইসঙ্গে, এদিন রাশিয়া ও ইউক্রেনের কাছে যুদ্ধ থামানোর আবেদন জানিয়েছেন তিনি। ভারত যে বরাবর শান্তির পক্ষে সেই বার্তা দিয়ে এদিন তিরুমূর্তি বলেন, “পরিস্থিতি যেভাবে খারাপের দিকে যাচ্ছে তাতে উদ্বিগ্ন ভারত। এই ঘটনাপ্রবাহের (যুদ্ধ) প্রভাব ওই অঞ্চলের (ইউরোপ) বাইরেও পড়ছে। কারণ, জ্বালানি ও খাদ্যসামগ্রীর দাম প্রচুর বাড়ছে। এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে। জখন নিরীহ মানুষের জীবন নিয়ে কথা হচ্ছে তখন কূটনীতিই সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ।”
বলে রাখা ভাল, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা রুশ হামলার মুখে এই প্রথম কিয়েভের আশপাশের ৩০টি শহর ও গ্রামের দখল নিতে পেরেছে ইউক্রেনের ফৌজ। তারপরই হানাদার বাহিনীর হাত থেকে উদ্ধার হওয়া এলাকাগুলির ভয়াবহ ছবি জনসমক্ষে উঠে আসছে। রবিবারই ইউক্রেনের বুচা শহরে রুশ ফৌজের অত্যাচারের ভয়াবহতা দেখে কেঁপে ওঠে বিশ্ব। শহরটিতে পাওয়া গিয়েছে একের পর এক গণকবর, ৩০০-রও বেশি নাগরিকের মৃত্যু, মৃত মহিলাদের শরীরে পোড়া স্বস্তিক চিহ্নের দাগ এমনকি ১০ বছরের বালিকার গোপনাঙ্গে আঘাত এবং অত্যাচারের চিহ্ণও স্পষ্ট। যা দেখে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিশ্বে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী বলে তোপ দেগেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুধু তাই নয়, অনেকটা নুরেমবার্গের কায়দায় পুতিনের বিচারের দাবিও জানিয়েছেন তিনি। যদিও, সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া। মস্কো স্পষ্ট জানিয়েছে, রুশ সেনা নিরীহদের হত্যা করে না। এই সমস্ত খবর আসলে পশ্চিমের দেশগুলির প্রোপাগান্ডা।
এই বিষয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, “আমরা খবর পাচ্ছি যে রুশ ফৌজের হাত থেকে মুক্ত করা বরোদিয়াঙ্কার মতো শহরগুলিতে নিহতের সংখ্যা বুচার চাইতেও বেশি। ওই শহরগুলির মানুষ কীভাবে রুশ বাহিনীর হাতে অত্যাচারিত হয়েছেন তার যাবতীয় তথ্য সংবাদমাধ্যমের সামনে আনতে চাই আমরা। আমরা চাই, সাংবাদিকরা এই সব শহরে আসুন। গোটা বিশ্বকে জানান রাশিয়া আমাদের প্রিয় ইউক্রেনের কী অবস্থা করেছে।”