ভারত: ১৬৮-৬ (কোহলি ৫০, পান্ডিয়া ৬৩)
ইংল্যান্ড: বিনা উইকেটে ১৭০ (বাটলার ৮০*, হেলস ৮৬*)
ইংল্যান্ড ১০ উইকেটে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পারল না ভারত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (ICC T-20 World Cup) সেমিফাইনালে থেমে গেল ভারতের দৌড়। আসল সময়ে এভাবে যে সিস্টেম ফেইলিওর হবে টিম ইন্ডিয়ার (Indian Cricket Team), তা কি আগে কেউ ভাবতে পেরেছিলেন? ইংল্যান্ডের (England) কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে রোহিত শর্মার দল ছিটকেই গেল বিশ্বকাপ থেকেই।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ১৬৮ রান খুব বড় কিছু টার্গেট নয়। এটা যেমন ঠিক, তেমনই খুব খারাপও নয়। বোলারদের লড়াই করার মতো পুঁজি তো হাতে ছিল। তবুও কেন ব্যর্থ হলেন ভুবনেশ্বর কুমার, অর্শদীপ, মহম্মদ সামিরা? ভারতীয় ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষাতেও দেখা যায়নি লড়াইয়ের উদ্যম। কোথায় গেল সেই কামড়? কোথায় তীব্রতা? বিনাশকালে কি বুদ্ধিনাশ হল রোহিত শর্মার দলের? বিনা উইকেটে ইংল্যান্ড ১৭০ রান করে ফাইনালে চলে গেল। ৪ ওভার বাকি থাকতেই ভারতের রান তুলে নেয় ইংরেজরা। বাটলার ৮০ রানে অপরাজিত থাকেন, হেলস ৮৬ রানে অপরাজিত থাকেন। কোনও ভারতীয় বোলারই তাঁদের বিব্রত করতে পারেননি।
[আরও পড়ুন: হার্দিকের লড়াকু ইনিংস, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সম্মানজনক স্কোর ভারতের]
রবিবার বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের সামনে পাকিস্তান। ১৯৯২ সালেরই পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। সেবারের ফাইনালে মেলবোর্নে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইমরান খানের দেশ। এবার কী হবে? উত্তর দেবে সময়।
২০১৩ সালের পর কোনও আইসিসি (ICC) টুর্নামেন্ট জেতেনি ভারত। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে সেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ই শেষ। তার পর থেকে ভারত হয় সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছে, নইলে ফাইনাল থেকে। এবারও সেই একই চিত্রনাট্য। নক আউটের অভিশাপ কাটাতে পারল না ভারত। আইসিসি বিশ্বকাপ থেকে এবারও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে ভারতীয় দলকে। নক আউটের অভিশাপ কাটাতে পারলেন না রোহিত শর্মাও।
অ্যাডিলেডে খেলা বলে বিশেষজ্ঞরা ভারতকেই এগিয়ে রেখেছিলেন। অ্যাডিলেডের পিচ স্পিন সহায়ক। আর ভারতীয়রা যে ধরনের ক্রিকেট খেলে থাকে, অ্যাডিলেডে সেই রকম ক্রিকেট খেলা সম্ভব। বৃহস্পতিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারত বড় রানের লক্ষ্যমাত্রা দিতেই পারল না ইংল্যান্ডকে। ২০ ওভারে ভারত করে ৬ উইকেটে ১৬৮ রান। পান্ডিয়া ৩৩ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন। ইনিংসের শেষ বলে তিনি হিট উইকেট হন। শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। তিনি হিট উইকেট না হলে ভারতের রান হত ১৭২। অবশ্য তাহলেও কি ভারত জিতত? কোহলি (Virat Kohli) এদিন ৪০ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলেন। কিন্তু পঞ্চাশ করার পরেই ফিরতে হল বিরাটকে। এই পঞ্চাশ কি বিরাটোচিত? আরেকটু গতিশীল ইনিংস কি তিনি খেলতে পারতেন না?
ভারতের রান তাড়া করতে নেমে জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলস খুব সহজেই ভারতের ক্যাম্প থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নিলেন। ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার নির্ভরতা দিলেন দলকে। অন্যদিকে ভারতের দুই ওপেনার লাগাতার ব্যর্থ হলেন এবারের বিশ্বকাপে। কোনও সময়তেই ভারতের ওপেনিং জুটিকে জ্বলে উঠতে দেখা যায়নি। শুরুর দিকে দ্রুত উইকেট হারানোয় চাপ এসে গিয়েছিল মিডল অর্ডারের উপরে। এদিনও একই চিত্রনাট্য। লোকেশ রাহুল ও রোহিত শর্মার ওপেনিং জুটি ভারতকে নির্ভরতা দিতে পারেনি এদিনও। শুরুর চাপ সামলে রান করতে অনেক সময় নিয়ে ফেলে ভারত। উইকেট হারানোর ভয়ে মারমুখী ব্যাটিংও করেননি ব্যাটাররা। এদিন হার্দিক পান্ডিয়া জ্বলে উঠলেন ঠিকই। ততক্ষণে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে।
১৬৮ রান নিয়ে জিততে হলে শুরু থেকেই চাপ তৈরি করতে হত ইংল্যান্ড ব্যাটারদের উপর। শুরুর দিকে উইকেট তুলে নিয়ে চাপে ফেলাই যেত ইংল্যান্ডকে। কিন্তু আসল দিনে এত নির্বিষ বোলিং করলেন কেন ভারতীয় বোলাররা, তা নিয়ে ময়নাতদন্ত করা যেতেই পারে। আর কবে আইসিসি টুর্নামেন্টে বিজয়কেতন ওড়াবে ভারত? কাগজ কলমে দুনিয়ার সেরা টিম, অথচ আসল সময়ে ব্যর্থ। দ্বিপাক্ষিক সিরিজেই এই ভারত ভাল। বিশ্বকাপে নয়।
[আরও পড়ুন: লক্ষ্য এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, নর্থ-ইস্টের বিরুদ্ধে আজ সতর্ক ফেরান্দো]