সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইদানীং কালে সবচেয়ে কঠিনতম সিরিজের নামছে ভারতীয় দল। প্রতিপক্ষ শুধু অস্ট্রেলিয়া (Australia) বলে নয়, আরও একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হচ্ছে বিরাট কোহলিদের (Virat Kohli)। শুধু সিরিজ জিতলে চলবে না, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যেতে গেলে অন্তত ২-০ কিংবা ৩-১ ব্যবধানে জিততে হবে টিম ইন্ডিয়াকে। আর এইরকম একটা সিরিজে নামার আগে স্পিন খেলার মহড়ায় ব্যস্ত রইলেন বিরাট, রোহিত শর্মারা।
আগের দু’দিন নাগপুরের সিভিল লাইন্সে ক্লোজডোর ট্রেনিং করেছিল ভারত। এদিন নাগপুরের মূল স্টেডিয়ামে ওপেন সেশন রাখা হয়েছিল। সেখানেই দেখা গেল নেটে অনবরত সুইপ আর রিভার্স সুইপ মারছেন ভারতীয় ব্যাটাররা। আগেরদিন ক্লোজ-ইন ফিল্ডিং এবং স্লিপ ক্যাচিংয়ের ওপর জোর দেওয়ার কথা বলেছিলেন ভারতীয় দলের হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়। ইঙ্গিতে স্পষ্ট, নাগপুরে স্পিনসহায়ক পিচে অস্ট্রেলিয়া বধের ব্লুপ্রিন্ট সাজাচ্ছে ভারত। এদিন সেই ভাবনা মাথায় রেখেই বিরাট, রোহিত থেকে শুভমান, সূর্যকুমারদের নেট-সেশনে একটানা রিভার্স সুইপ মারতে দেখা গেল। প্র্যাকটিসে তাঁদের বলেই দেওয়া হয়েছিল রিভার্স সুইপ প্র্যাকটিস করতে। পাশাপাশি চলল স্পিন বোলিংয়ের বিরুদ্ধে মহড়া।
[আরও পড়ুন: ৩৬ রানে অল আউট! সিরিজ শুরুর আগে ভারতকে কটাক্ষ অস্ট্রেলিয়ার]
দলের সঙ্গে চার স্পিনার তো ছিলই। সেইসঙ্গে জয়ন্ত যাদব, সৌরভ কুমার সহ আরও পাঁচ স্পিনারকে উড়িয়ে আনা হয়েছে শিবিরে। লক্ষ্য একটাই। স্পিন-ঘূর্ণি যাতে দলের কাছে বুমেরাং না হয়, সেটা নিশ্চিত করা। একটা ব্যাপার পরিষ্কার, নাগপুরে টার্নিং ট্র্যাকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে হতে পারে, তেমনটা ধরেই এগোচ্ছে ভারতীয় দল। পাশাপাশি প্রশ্নচিহ্ন ছিল ঋষভ পন্থের জায়গায় উইকেটের পিছনে গ্লাভস হাতে কাকে দেখা যাবে, তা নিয়ে। প্রথমে সেই দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন ঈশান কিষানই। ব্যাট হাতে যথেষ্ট ভাল ফর্মে পাওয়া গিয়েছে এই বাঁ হাতি ব্যাটারকে। তবে টার্নিং ট্র্যাকে খেলার ভাবনা থেকে এখন আর উপযুক্ত ব্যাটার নয়, দক্ষ উইকেটকিপার খেলানোর পরিকল্পনা ধরে এগোচ্ছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট।
আর সেই ভাবনায় কিষানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন শ্রীকর ভরত। উইকেটকিপিং দক্ষতায় কিষাণের চেয়ে অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য তিনি। ফলে অঘটন না ঘটলে ৯ ফেব্রুয়ারি নাগপুর টেস্টে ভারতের উইকেটকিপার হিসেবে রোহিতের প্রথম এগারোয় ভরতের থাকা প্রায় নিশ্চিত।
এদিকে, শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে অ্যাসেজের আগে ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজকে রাখছেন স্মিথ স্মিথ। একই সুর দলের অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের কথাতেও। স্মিথ বলেছেন, ‘‘ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জেতা সবসময় কঠিন। যদি সেটা সম্ভব হয়, তাহলে সেই সাফল্য অ্যাসেজ জয়ের চেয়েও অনেক বড়।’’ অন্যদিকে, ভারতের মাটিতে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি জয়কে ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যাসেজ জয়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন কামিন্স। ডেভিড ওয়ার্নার জানিয়েছেন, ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হল, বিপক্ষের বিশ্বসেরা স্পিনারদের মুখোমুখি হওয়া। সেই চ্যালেঞ্জ জয়ের সঙ্গে অন্য কিছুর তুলনা চলে না।
পাশাপাশি ভারতের মাটিতে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বিরুদ্ধে খেলাটা সবচেয়ে কঠিন কাজ বলে মনে করছেন অজি তারকা উসমান খোয়াজা। তিনি বলেছেন, ‘‘অশ্বিন ভারতের বড় অস্ত্র। ওর বোলিং বৈচিত্র্য অসাধারণ। ২২ গজকে দারুণ ব্যবহার করতে ও জানে। উপমহাদেশের উইকেটে সচরাচর যেটা দেখতে পাওয়া যায়, বল প্রথম দিন থেকে টার্ন করে। শেষের দু’দিনে আরও বেশি করে। সেখানে অশ্বিন বড় ফ্যাক্টর। ফলে ওর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া খেলা সম্ভব নয়।’’ সবমিলিয়ে অশ্বিনই ভাবাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া শিবিরকে।