সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিরোশিমা-নাগাসাকিতে ‘লিটল বয়’ ও ‘ফ্যাট ম্যান’-এর মৃত্যুলীলায় পাল্টে গিয়েছিল যুদ্ধের প্রকৃতি। শুরু হয়েছিল পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের প্রতিযোগিতা। তাই নিজেকে তৈরি করতে বাধ্য হয়ে পোখরানে একই পথ বেছে নিয়েছিল ভারতও। আজ দেশের অস্ত্রভাণ্ডারে রয়েছে পারমাণবিক মিসাইল, বিমান থেকে পারমাণবিক অস্ত্র ছোড়ার প্রযুক্তি। তবে জলপথেও যে আকস্মিক আঘাত আসতে পারে সেই জন্য এবার তৈরি হচ্ছে দেশ। প্রায় একমাসের ও বেশি সময় ধরে সিকিমে চিনের সঙ্গে ভারতের বিবাদ তুঙ্গে। ক্রমশ যুদ্ধের হুঙ্কার দিয়ে যাচ্ছে বেজিং। ভারত মহাসাগরে টহল দিচ্ছে চিনা রণতরী ও সাবমেরিন। তাই এবার জলের তলায় ‘ড্রাগন’ বধে শুরু হয়েছে ‘প্রজেক্ট-৭৫’।
[ভারতকে নয়া ‘মিগ-৩৫’ যুদ্ধবিমান বিক্রিতে আগ্রহী রাশিয়া]
তা কী এই ‘প্রজেক্ট-৭৫’? সরকারি সূত্রে খবর, প্রায় ১০ বছর লালফিতের জটে আটকে থাকার পর ওই প্রজেক্টের অন্তর্গত ভারতীয় নৌসেনা পেতে চলেছে ছ’টি অত্যাধুনিক ‘স্টেলথ সাবমেরিন’। ওই ‘মেগা প্রজেক্টে’র জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৭০ হাজার কোটি টাকা। জানা গিয়েছে, সাবমেরিনগুলি নির্মাণ করতে আগ্রহী ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, সুইডেন, স্পেন ও জাপানের মতো দেশ। শর্ত অনুযায়ী বরাদ্দ পেলে, ওই দেশগুলির অস্ত্রনির্মাণকারী সংস্থা ভারতীয় শিপইয়ার্ডের সঙ্গে যৌথ ভাবে সাবমেরিনগুলি নির্মাণ করবে। সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে ছ’টি অত্যাধুনিক ‘ডিজেল-ইলেকট্রিক’ সাবমেরিন চাইছে নৌসেনা। তাতে থাকা চাই ‘এয়ার-ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রপালসন সিস্টেম’। ওই প্রযুক্তি থাকলে অন্যান্য ডুবোজাহাজের তুলনায় অনেক বেশি সময় জলের তলায় থাকতে পারবে এই সাবমেরিনগুলি। থাকবে জলের নিচ থেকে জমিতে আঘাত হানার মতো ক্রুজ মিসাইল। শুধু তাই নয় শত্রুর জাহাজ ধ্বংস করতে বিভিন্ন ধরনের টর্পেডো ও অন্যান্য অত্যাধুনিক সেন্সরও থাকছে ওই সাবমেরিনগুলিতে।
[ডোকলাম নিয়ে ভারত ও চিনকে মুখোমুখি আলোচনায় বসার পরামর্শ আমেরিকার]
নয়া প্রজেক্টের অন্তর্গত ভারতীয় নৌসেনার প্রয়োজন ১৮টি ডিজেল-ইলেকট্রিক, ছ’টি পারমাণবিক শক্তিচালিত ‘অ্যাটাক সাবমেরিন’ ও তিনটি পারমাণবিক মিসাইল বহনে সক্ষম সাবমেরিন। ভারত মহাসাগরে লালফৌজ ও পাকিস্তানকে রুখতে এই পরিকল্পনা ভারতীয় নৌসেনার। তবে বর্তমানে ভারতীয় নৌসেনার হাতে রয়েছে মাত্র ১৩টি সাবমেরিন। যাদের মধ্যে ১০টি প্রায় ২৫ বছরেরও বেশি পুরনো। তুলনায় চিনের ভাণ্ডারে রয়েছে ৬০টিরও বেশি সাবমেরিন। উল্লেখ্য, ডোকলাম নিয়ে ক্রমশ সংঘাতের দিকে এগোচ্ছে ভারত ও চিন। চরমে পৌঁছেছে তরজা। বারবার যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে বেজিং। প্রত্যুত্তরে সুর চড়িয়েছে দিল্লিও। সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত স্পষ্ট জানিয়েছেন, একই সময়ে চিন ও পাকিস্তানকে একহাত নিতে প্রস্তুত ভারতীয় সেনা। তবে সদ্য প্রকাশিত এক রিপোর্ট বলছে, তুমুল যুদ্ধ শুরু হলে মাত্র ১০ দিনের মতো গোলা-বারুদ রয়েছে সেনার হাতে।
The post সমুদ্রে ড্রাগন বধে দিল্লির ‘প্রজেক্ট-৭৫’ appeared first on Sangbad Pratidin.