সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাঁদের দক্ষিণ মেরু ছুঁয়ে নয়া ইতিহাস গড়েছে ভারত। এভাবেই উন্নতির শিখরে পৌঁছে যাচ্ছে দিল্লি। কিন্তু পড়শি দেশ পাকিস্তানের অবস্থা ততটাই শোচনীয়। ভেঙে পড়েছে সেদেশের অর্থনীতি। এবার ভারতের অগ্রগতির প্রসঙ্গ টেনে নিজের দেশেরই সমালোচনায় সরব হলেন এক পাক সাংসদ। পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের দৈন্য দশার কথা তুলে ধরলেন তিনি।
বুধবার পাকিস্তানের পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখছিলেন মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান দলের সদস্য সৈয়দ মোস্তফা কামাল। সেখানেই ভারতের সফল চন্দ্রাভিজানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "গোটা বিশ্ব আজ চাঁদে চলে যাচ্ছে। অথচ আমাদের করাচির অবস্থা দেখুন। এখানে বহু শিশু আবর্জনার স্তূপে পড়ে প্রাণ হারায়। যে মুহূর্তে ভারত চাঁদের বুকে পা রেখেছিল তার ঠিক দুসেকেন্ড পড়ে খবর এসেছিল আবর্জনার স্তূপে একটি শিশু মারা গিয়েছে। প্রতি তিনদিনে এই শিশুমৃত্যুর খবর আমাদের কাছে আসে।"
[আরও পড়ুন: এবার চিনের হস্তক্ষেপে থামবে ইউক্রেন যুদ্ধ? পুতিনের বেজিং সফর ঘিরে জোর জল্পনা]
শুধু এখানেই থেমে থাকেননি কামাল। করাচির কড়া সমালোচনা করে এই সাংসদ বলেন, "পাকিস্তানের রেভেনিউ ইঞ্জিন করাচি। আমাদের দুটি সমুদ্রবন্দর রয়েছে। যা এই করাচিতেই অবস্থিত। এই শহর গোটা পাকিস্তান, মধ্য এশিয়া ও আফগানিস্তানের প্রবেশদ্বার। দেশের জন্য ৬৮ শতাংশ রাজস্ব এই শহর থেকেই আসে। কিন্তু গত ১৫ বছরে একটুও বিশুদ্ধ জল দিয়েছে করাচি? যা জল এসেছে তা মাফিয়ারা ট্যাঙ্কারে মজুত করেছে সাধারণ মানুষকে বিক্রি করার জন্য।"
পাকিস্তানে এখন প্রায় ২ কোটি ৬২ লক্ষ শিশু স্কুলছুট হয়ে গিয়েছে। সেই কথা উল্লেখ করে কামাল বলেন, "এই সংখ্যা প্রায় ৭০টি দেশের জনসংখ্যার সমান। এই বিপুল সংখ্যক নিরক্ষর শিশুই পাকিস্তানের আর্থিক উন্নতিকে ধ্বংস করে দেবে। " বলে রাখা ভালো, করোনা মহামারী, অপশাসন ও ঋণের ভারে পাকিস্তানের অর্থনীতি কার্যত হাঁটু গেড়ে বসে পড়েছে। জোর ধাক্কা খেয়েছে পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি। ফলে তলানিতে ঠেকেছে বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার। যে কারণে খাবার থেকে ওষুধ সবকিছুরই দাম ভয়ানক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে সরকার বদলেছে। কিন্তু পাকিস্তানের অর্থনীতির কোনও উন্নতি হয়নি।
এই অবস্থায় ডুবতে ডুবতে ‘খড়কুটো’ আঁকড়ে ধরতে আইএমএফের ঋণই ভরসা পাকিস্তানে। গত বছরের জুলাইয়ে ইসলামাবাদকে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিতে রাজি হয় আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার। সেই অর্থ অবশ্য একবারে না দিয়ে খেপে খেপে দিয়েছে তারা। বাকি ছিল ১.১ বিলিয়ন। মে মাসের শুরুতেই সেই অর্থ হাতে পায় পাকিস্তান। কিন্তু এর পরও চাঙ্গা হয়নি সেদেশের শেয়ার বাজার।