সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাশ্মীর উপত্যকা নিয়ে ভারত-পাকিস্তান বিরোধ নতুন নয়। সমস্যা সমাধানের কোনও চেষ্টাই তেমন ফলপ্রসূ হয়নি। মাঝে মধ্যেই উপত্যকা নিয়ে দু’দেশের বিরোধ, উত্তেজনা পৌঁছেছে চরমে। সেই উত্তেজনা কমাতে এবার গোপন বৈঠকে মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান। সূত্রের খবর, গত জানুয়ারি মাসে দুবাইয়ে দু’দেশের গোয়েন্দা বিভাগের শীর্ষ আধিকারিকরা বৈঠক করেছেন।
[আরও পড়ুন: ‘বয়স হলে মানুষকে মরতে হবেই,’ করোনায় মৃত্যুতে বিতর্কিত মন্তব্য মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রীর]
২০১৯ সালে কাশ্মীরে সেনাবাহিনীর বাসে আত্মঘাতী জঙ্গিহানার পর থেকেই দু’দেশের সম্পর্ক অতি শীতল। যে ঘটনার পর বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারত। তবে সূত্রের খবর, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ সমস্যা মেটাতে ব্যাক চ্যানেল কূটনীতির ওপর আস্থা রাখছে। ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং বা ‘র’ এবং পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স বা আইএসআই শীর্ষস্তরের আধিকারিকরা জানুয়ারিতে বৈঠক করেছেন। জানা গিয়েছে, গোপনে ওই বিশেষ বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সরকার।
ভারতের বিদেশমন্ত্রক বা পাকিস্তানের আইএসআই এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। যদিও পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ আয়েষা সিদ্দিকার দাবি, গত কয়েকমাসে তৃতীয় দেশে সমস্যা সমাধানে একাধিক বৈঠক হয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, বৈঠকগুলি হয়েছে লন্ডন, থাইল্যান্ড এবং দুবাইয়ে। এমন ধরনের বৈঠক অতীতেও হয়েছে। তবে কোনও ক্ষেত্রেই দু’দেশের সরকার তা স্বীকার করেনি বা গোপন রেখেছে। এই পদ্ধতিকে অবশ্য শান্তি স্থাপনের প্রক্রিয়া বলতে নারাজ আয়েষা সিদ্দিকা। তাঁর মতে, শীতলতা কাটিয়ে নতুন করে যোগাযোগ স্থাপনের প্রক্রিয়া হিসাবেই দেখা উচিত।
পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ভারত-চিন উত্তেজনার পরই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে সক্রিয় হয়েছে নয়াদিল্লি। কারণ, জম্মু-কাশ্মীরের দু’প্রান্তের পরিস্থিতি একসঙ্গে জটিল হলে সমস্যা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া বেজিং-ইসলামাবাদ ঘনিষ্ঠতাও কারও অজানা নয়। অন্যদিকে, তীব্র আর্থিক সমস্যায় থাকা পাকিস্তানের পক্ষেও দীর্ঘদিন ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বন্ধ করে রাখা কঠিন। ভূ-কৌশলগত অবস্থান পাকিস্তানের ভাল হলেও, ভূ-অর্থনীতির ক্ষেত্রে তারা অনেকটাই পিছিয়ে। আইএমএফ-এর চাপও পাকিস্তানের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। সূত্রের মতে, বাধ্যবাধকতার কারণেই এবার উভয় দেশ উত্তেজনা প্রশমনের পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছে। তবে, সার্বিক পরিস্থিতি এবং অতীত অভিজ্ঞতা থেকে ব্যাক চ্যানেল কূটনীতি বেছে নেওয়া হয়েছে।