সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বুধবার বাংলাদেশ পৌঁছন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ (Ram Nath Kovind)। তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গতকাল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি। সূত্রের খবর, এই সফরকালেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে ভারত।
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার]
গতকাল কোবিন্দ-হাসিনা বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন ভারতের বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। তখনই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। সরাসরি উত্তর না দিয়ে তিনি জানান। দুই দেশের মধ্যে ‘একাধিক গুরুত্বপূর্ণ’ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এবং শেখ হাসিনা সরকার ‘সন্তোষজনক’ পদক্ষেপ নিচ্ছে। বিদেশ সচিব শ্রিংলার বক্তব্য, “দুই দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে। দেখুন দুই দেশের মধ্যেই কিছু গোপন কথা হয় তাই আমি সমস্ত বিষয় এখনই খোলসা করে বলতে পারব না। তবে স্বাভাবিকভাবেই অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এবং এটা বলার প্রয়োজন রাখে না যে ওই ইস্যুগুলিতে আমরা সমমনস্ক। যেভাবে বিষয়গুলি শেখ হাসিনার সরকার মোকাবিলা করেছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট।”
উল্লেখ্য, দুর্গাপুজোয় কুমিল্লা জেলায় পুজোমণ্ডপে কোরান রাখার জেরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মন্দির ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দেশটির সংখ্যাগুরু মুসলিম মৌলবাদীরা। রংপুরের পীরগঞ্জ, নোয়াখালি, ফেনি, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, গাজীপুর, গোপালগঞ্জ-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়। এসব ঘটনার মধ্যে শুধু কুমিল্লায় ১০২টি মামলা ও আসামি করা হয়েছে ২০ হাজার ৬১৯ জনকে। আর এ পর্যন্ত ৫৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছে দেশের শাসকদল আওয়ামি লিগ।
সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনায় ভারতেও বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়। হাসিনা সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি জানায় নয়াদিল্লি। তদন্তের পর জানা যায়, ওই হামলার নেপথ্যে রয়েছে পাকিস্তানের বড়সড় ষড়যন্ত্র। হিংসার ঘটনায় নাম জড়িয়েছে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পুত্র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। দুর্নীতি-সহ দেড় ডজন মামলা ঝুলছে স্বেচ্ছায় লন্ডন প্রবাসী তারেকের বিরুদ্ধে। এই কাণ্ডে বিএনপির সঙ্গী ছিল মৌলবাদী দল জামাতও। এমনটাই অভিযোগ করেন আওয়ামি লিগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।